• ফুটবল

ক্যাচাল কম করুণ, আগে ইতিহাস জানুন।

পোস্টটি ৯০৮৪ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।
  • ১৯৫৮ বিশ্বকাপের জন্য ফ্রান্স টিমের স্কোয়াডে প্রায় ৩ বছর জাতীয় দলে ম্যাচ না খেলা জাস্ট “জ্যাস্টো” ফাউন্টেনকে রাখা হয়, তখন তার উপর ফরাসিদের তেমন আশা ভরসা ছিল না।কিন্তু সবাইকে অবাক করে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই জ্বলে ওঠেন ফাউন্টেন।গ্রুপ-১ এর ১ম ম্যাচে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ২৪,৩০,৬৭তম মিনিটে গোল করে হ্যাট্রিক পূর্ণ করে এবং ফ্রান্স ৭-৩ ব্যবধানে বড় জয় পায়।২য় ম্যাচে যুগোস্লাভিয়ার বিপক্ষে ফাউন্টেন ২ গোল করলেও ফ্রান্স ৩-২ ব্যবধানে পরাজিত হয়।গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ফাউন্তেন ও কোপার গোলে স্কটল্যান্ড কে ২-১ ব্যবধানে পরাজিত করে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে কোয়াটার ফাইনালে জায়গা করে নেয় ফ্রান্স।
  • কোয়াটার ফাইনালে ফরাসিরা নর্থান আয়ারল্যান্ডের মুখমুখি হয়।ফাউন্টেনের জোড়া গোলে ৪-০ ব্যবধানের সহজ জয় নিয়ে সেমি ফাইনালে জায়গা করে নেয় ফ্রান্স।১৯৫৮ সালের ২৪ জনু সেমি ফাইনালে ফেভারিট ব্রাজিলের মুখমুখি হয় ফ্রান্স।ম্যাচের বয়স ২ মিনিট না হতেই ব্রাজিল এগিয়ে যায়,৯ম মিনিটে ফাউন্টেন ফ্রান্স কে সমতায় ফেরালেও পেলে হ্যাট্রিকে ম্যাচ শেষে ফরাসিরা ৫-২ ব্যাবধানে বিদ্ধস্ত হয়।অপর সেমিফাইনালে স্বাগতিক সুইডেনর কাজে পরাজিত হয় ওয়েস্ট জার্মানি। ফলে নিশ্চিত হয় ফ্রান্স এবং জার্মানি ৩য় স্থান নির্ধারনি ম্যাচে মুখমুখি হবে।

সেমি ফাইনাল পর্যন্ত ফাউন্টেন ৫ ম্যাচে ৯ গোল করে।১৯৫৪ বিশ্বকাপে হাঙ্গেরিয়ান সান্ডার কক্সিস এর করা এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ১১ গোলের রেকর্ডটি নিজের করে নিতে ফাউন্টেনের হাতে একটি মাত্র ম্যাচ ছিল এবং ৩টি গোল করে হত।

১৯৫৮ সালের ২৪ জুন ৩য় স্থান নির্ধারনি ম্যাচে ফ্রান্স ও জার্মানি মুখমুখি হয়।ম্যাচের ১৬ তম মিনিটে ফাউন্টেন ফরাসিদের এগিয়ে নেন। ২৭তম মিনিটে ফ্রান্স পেনাল্টি পেলেও ফাউন্টেন তা সথীর্থ কোপাকে দেন।৩৬তম মিনিটে গোল করে কক্সিসের রেকর্ডটিতে ভাগ বসান ফাউন্টেন, ৭৮তম মিনিটে হ্যাট্রিক পূর্ণ করে রেকর্ড নিজের করেনেন এবং ৮৯তম মিনিটে ৪র্থ গোল করে রেকর্ডকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যান।এক বিশ্বকাপে ৬ ম্যাচে ১৩ গোলে রেকর্ড করেন যা এখন পর্যন্ত কারোর ধরাছোয়ার বাইরে করেছে।


দুঃখের বিষয় হল ১৯৫৮ বিশ্বকাপই ফাউন্টেনের প্রথম ও শেষ বিশ্বকাপ ছিল। হাটুর ইঞ্জুরির কারনে মাত্র ২৭ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানান এই লিজেন্ড। ক্যারিয়ারের শেষ ১০ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ২১ গোল করেছিল এই ফরাসি।

এক বিশ্বকাপের ক্যারিয়ার হলেও বিশ্বকাপের বেশ কয়েকটি রেকর্ড এখনও তাঁর নামেই রয়েছে।এগুলোর মধ্য কয়েকটি তুলে ধরা হল।

  • ফিফা বিশ্বকাপের ২০ আসলের ২৬ জন গোল্ডেনবুট জয়ী ফুটবলার ভিতর মাত্র ৩ জন ১০ ও ১০+ গোল করেছে। এরা হল:
    ১. জাস্ট ফাউন্টেন(৬ ম্যাচে ১৩ গোল)
    ২.সান্ডার কক্সিস(৬ ম্যাচে ১১ গোল)
    ৩. গার্ড মুলার(৫ ম্যাচে ১০ গোল)।

  • ফাউন্টেন আবার বিশ্বকাপের সর্বোকালের ৪র্থ সর্বোচ্চ গোল দাতা।এই তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে জার্মানির মিরোস্লাভ ক্লোসা, ৪ বিশ্বকাপে ২৪ ম্যাচে ১৬ গোল নিয়ে।৪ বিশ্বকাপে ১৯ মাচে ১৫ গোল নিয়ে ২য় স্থানে রয়েছে ব্রাজিলের রোনাল্ড লিমা এবং ৩য় স্থানে রেয়েছে ২ বিশ্বকাপে ১৩ ম্যাচে ১৪ গোল করা জার্মান গোল মেশিন গার্ড মুলার।

  • এক বিশ্বকাপে সব গুলো ম্যাচে গোল করার রেকর্ডটিও তাঁর দখলে।তবে ১৯৭০ বিশ্বকাপে ব্রাজিলীয় লিজেন্ডারি জায়েরজিনিয়ো গ্রুপ পর্বের ১ম ম্যাচ থেকে ফাইনাল পর্যন্ত গোল করে রেকর্ড টিতে ভাগ বসায়।
  • ৩ জনের সাথে সম্মিলিত ভাবে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ হ্যাট্রিকের রেকর্ডটিও তাঁর।এই তালিকার বাকিরা হল: সান্ডার কক্সিস,গার্ড মুলার ও আর্জেন্টিনার গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা।

  • এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৪ ম্যাচে ২ বা ততাধিক ম্যাচে গোলের রেকর্ডটিও যৌথ ভাবে তাঁর ও সান্ডার কক্সিসের।