• ক্রিকেট

রিচির মেরুন হ্যাট

পোস্টটি ১৫৮০ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

Richardson

 

১৯৯৫ সালের ৮ই এপ্রিল স্যার রিচার্ড বেঞ্জামিন রিচার্ডসন যিনি রিচি রিচার্ড নামেই বেশি পরিচিত, তার বিখ্যাত লম্বা ব্রিমের মেরুন হ্যাট খুলে অস্ট্রেলিয়ার পেস এটাকের বিপক্ষে হেলমেট পড়েছিলেন ক্যারিয়ারে প্রথমবার। ১৯৮৩তে অভিষেকের পরে দেখেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের স্বর্ণসময়। ডেসমন্ড হেইন্স, গর্ডন গ্রিনিজ, স্যার ভিভ, জেফ্রি ডুজোঁ, মাইকেল হোল্ডিং, ম্যালকম মার্শাল সর্বোপরি উইন্ডিজ ক্রিকেটের গ্র্যান্ড ড্যাডি বিখ্যাত ক্লাইভ লয়েডকে পেয়েছেন অগ্রজ হিসেবে। বিশ্বের সব পেস এটাককে সামলেছেন তার হ্যাট দিয়েই। এটা ছিলো তাদের শৌর্যের প্রতীক। কিন্তু ‘৯৫তে একটু ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ০-১ এ পিছিয়ে থেকে রিচি যখন পল রেইফেল, ব্রেন্ডন জুলিয়ান আর প্রায় অনভিজ্ঞ গ্লেন ম্যাকগ্রাকে সামলাতে তার সুবিখ্যাত হ্যাটের বদলে হেলমেট পড়ে ক্রিজে আসেন তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের দুঃসময়টা একটু হলেও বুঝতে পারছিলেন তিনি??

 রিচি আসলে এক যুগ সন্ধিক্ষণের সময়ে খেলেছিলেন। দৌর্দন্ড প্রতাপশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অংশ ছিলেন যখন প্রায় এক দশক ধরে তারা অপরাজেয় এক অবস্থানে ছিলো। ক্লাইভ লয়েডের পরে স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডের অধিনায়কত্বেও খেলেছেন যারা ’৮৪ থেকে ’৯১ পর্যন্ত কোন সিরিজ হারেনি। ভিভের হাত থেকে অধিনায়কের ব্যাটন আসে রিচির হাতে। তিনিও যে খুব খারাপ করেছিলেন তাও না, যেখানে ভিভের সময়ে দলটি কোন সিরিজ হারেনি সেখানে রিচির ৪বছরে এই সংখ্যা ১টি মাত্র। সেটা ১৯৯৫তে অস্ট্রেলিয়ার সাথে। ১৯৮০থেকে টানা অপরাজেয় একটা দলের সেটাই প্রথম সিরিজ হার। বেশ কয়েকজন সিনিয়র খেলোয়াড়ের অবসরের ফলে কিছুটা ঘাটতি তৈরি হয়েছিলো। কার্টলি এমব্রোস ও কোর্টনি ওয়ালসের পেস আর ব্রায়ান লারার  শৈল্পিক ব্যাটিং সাপোর্ট দিচ্ছিলো রিচিকে কিন্তু সেটাতে হয়তো পুরোটা পোষাচ্ছিলোনা।

ক্যারিয়ারে ৮৬টি টেস্ট খেলে ৫৯৪৯রান করেছেন ১৬টি সেঞ্চুরিসহ। তার প্রিয় প্রতিপক্ষ ছিলো অস্ট্রেলিয়া। তার ১১টি সেঞ্চুরিই অজিদের বিপক্ষে করা। সর্বোচ্চ ১৮৪রান ভারতের বিপক্ষে। রিচি ৩টি বিশ্বকাপসহ ২২৪টি ওয়ানডে খেলেছেন।

রিচির হেলমেট পরে ক্রিজে আসা নিয়ে স্যার জিওফ্রে বয়কট মন্তব্য করেছিলেন ‘রিচির মতো কাউকে আপনি সহসাই হেলমেট পরে নামতে দেখবেননা, এটা বেশ অস্বাভাবিক’। মাইকেল হোল্ডিংও প্রায় একই রকম মন্তব্য করেন। আসলে শুধু তারাই নয় মাঠে অথবা যারা টেলিভিশনে খেলা দেখছিলেন তারা সবাই এই দৃশ্যকে অকল্পনীয় বলেই ভেবেছিলেন।   

রিচি হয়তো বুঝতে পারছিলেন যে দাপটের সাথে তাদের পূর্বসূরীরা খেলেছেন তাতে পতনের টান লেগেছে। তাই তার ট্রেডমার্ক হ্যাট ছেড়ে তিনি হেলমেট পরেছিলেন।