বিশ্বকাপ বিতর্ক(পর্ব-৪)
পোস্টটি ২৪০৬ বার পঠিত হয়েছে২০০৭ বিশ্বকাপ। বব উলমারের মৃত্যু এমনিতেই এই বিশ্বকাপকে বানিয়ে দিয়েছে অন্ধকারাচ্ছন্ন এক বিশ্বকাপ। তার প্রভাবই কি পড়ছিল ২০০৭ বিশ্বকাপ ফাইনালে?
বিশ্বকাপ ফাইনাল। খেলা হয়েছিল কেনসিংটন ওভাল, ব্রিজটাউনে। এই মাঠের একটি বিশেষত্ব ছিল তখন। আন্তর্জাতিক মাঠ হওয়া সত্ত্বেও ছিল না কোনো ফ্লাডলাইট। তবুও এমন মাঠকেই আইসিসি বেছে নেয় বহুল আকাঙ্খিত ফাইনালের জন্য। ২৮,০০০ দর্শজক সমাগত হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া বনাম শ্রীলংকা ফাইনালের জন্য। বৃষ্টির বাগড়া ছিল খেলার শুরু থেকেই। অস্ট্রেলিয়া বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত ৩৮ ওভার ব্যাট করে গিলক্রিস্টের সেঞ্চুরিতে ২৮১ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে শ্রীলংকা সাঙ্গাকারা ও জয়সুরিয়ার ব্যাটে ভালোই জবাব দিচ্ছিল। মাঝে আবার বৃষ্টি। খেলা নির্ধারিত হয় ৩৬ ওভার। পরে এ দুজন আউট হলে তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে যেতে থাকে তাদের ব্যাটিং লাইনআপ। পরবর্তীতে ৩৩ তম ওভারে আবার বাধ সাধে বৃষ্টি।
বিতর্ক শুরু হয় এরপর থেকেই। বৃষ্টি থামলেও আলোক স্বল্পতা বজায় ছিল। খেলার মতো আলো ছিল না। ওয়ানডে ২০ ওভার খেলা হলেই ডাকওয়ার্থ-লুইস আইন প্রযোজ্য হয়। ডাকওয়ার্থ-লুইস আইনে তখন জয়ী অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়ক জয়াবর্ধনেও এটা মেনে নিয়েছিলেন এবং অস্ট্রেলিয়া দলকে ততক্ষণে শুভেচ্ছাও জানিয়ে ফেলেছিলেন। রিকি পন্টিংয়ের দল ড্রেসিং রুমে শুরু করে দিয়েছে টানা ৩য় বিশ্বকাপ জয়ের উদযাপন। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে ম্যাচ রেফারি জেফ ক্রো দু’দলকে জানান বাকি ৩ ওভারের খেলা পরের দিন খেলা হবে!
৩য় পর্ব- ২০১১ ট্রফি, আসল না নকল?
কিন্তু মাহেলা জয়াবর্ধনে তাতে সম্মত ছিলেন না। তিনি রেফারিকে বলে দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়াকে জয়ী ঘোষণা করে দিতে। কিন্তু ক্রো নাছোড়বান্দা। পরে দুই অধিনায়কের সম্মতিতে ওই অন্ধকার আলোতেই হয় খেলা!
শেষ পর্যন্ত অন্ধকারেই হয় খেলা!
অস্ট্রেলিয়া সিদ্ধান্ত নেয় তারা পেসার ব্যবহার করবে না বরং স্পিনার ব্যবহার করে সেই ৩ ওভারের স্পেল সম্পন্ন করবে। শ্রীলংকা বিনা উইকেটে আর নয় রান যোগ করে। যার ফলে লংকানদের মোট সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ২১৫। অস্ট্রেলিয়া ডি/এল মেথডে জয়ী হয় ৫৩ রানে। জিতে নেয় তাদের ৪র্থ বিশ্বকাপ শিরোপা।
ঐ ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া।
কিন্তু এই ফাইনালের পর বিতর্ক হয় ম্যাচ অফিসিয়ালদের ওই কর্মকান্ডের জন্য। যেখানে ম্যাচ শেষ করে দেয়াই যুক্তিযুক্ত ছিল, সেখানে বিরূপ আবহাওয়ায় ম্যাচ চালানোর জন্য আম্পায়ার আলিম দার, স্টিভ বাকনার, রুডি কোর্টজেন(টিভি আম্পায়ার), বিলি বাউডেন(রিজার্ভ আম্পায়ার) এবং মূল ক্রীড়নক ম্যাচ রেফারি জেফ ক্রো কে পরবর্তীতে আয়োজিত প্রথম বিশ্ব টি-টোয়েন্টি তে দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করে।
২০০৭ বিশ্বকাপ, যার পুরোটাই ছিল বিতর্কে পরিপূর্ণ, শেষও হলো এক বিতর্ক দিয়ে!
তথ্যসূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান, উইকিপিডিয়া, বাংলানিউজ২৪.কম
পরের পর্ব- ২০০৩ এবং জিম্বাবুয়ে, গণতন্ত্রের মৃত্যু। সাথেই থাকুন!
- 0 মন্তব্য