বিশ্বকাপ বিতর্ক(পর্ব-৬)
পোস্টটি ১৭৪০ বার পঠিত হয়েছেভারতীয়রা বিখ্যাত তাদের ক্রিকেট আবেগের জন্য। যে আবেগ তাদের ক্রিকেটারদের বানায় দেবতার সমতুল্য, সেই আবেগই তাদের বানিয়ে দেয় নিকৃষ্টতম অপরাধী। তার এক নগ্ন উদাহরণ প্রকাশ পায় ১৯৯৬ সালে।
ইডেন গার্ডেনস। ক্রিকেটের অনেক ইতিহাসের সাক্ষী এই স্টেডিয়াম। এই স্টেডিয়ামেই অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯৬ ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। যৌথভাবে ভারত,পাকিস্তান এবং শ্রীলংকা আয়োজন করে বিশ্বকাপের। সেমিফাইনালে উঠে উপমহাদেশের দুই দেশ ভারত ও শ্রীলংকা।
প্রথমে ব্যাট করে ২৫১ রানের পুঁজি পায় রানাতুঙ্গার শ্রীলংকা। টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শচীন টেন্ডুলকারের ব্যাটিংয়ে ভালোই এগুচ্ছিল ভারত। কিন্তু ৬৫ রানে শচিন আউট হয়ে যান। তারপর, তাসের ঘরের মতো ভেঙে যেতে থাকে ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ।
৫ম পর্ব- ২০০৩, জিম্বাবুয়ের গণতন্ত্র এবং দুই ক্রিকেটারের সাহসিকতা
১২৮ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে ভারত। ৮৩ এর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের এহেনও পরিণতি মেনে নিতে পারেনি ইডেন গার্ডেন্সে খেলা দেখতে আসা সমর্থকরা। বিরক্ত হয়ে খেলোয়াড়দের দিকে ছোঁড়া শুরু করে নিজেদের হাতের বোতল। এমনকি গ্যালারিতে আগুন ধরিয়ে দেয় এসব উগ্র সমর্থকরা। খেলা বন্ধ হয়ে যায় তখনই।
ইডেনের গ্যালারিতে সমর্থকদের আগুন।
ম্যাচ রেফারি ক্লাইভ লয়েড ১৫ মিনিট খেলা বন্ধ রাখেন। নিরাপত্তা বাহিনী এসে দর্শকদের সামলানোর চেষ্টা করেন। দর্শকদের বের করে দেয়া হলেও গ্যালারিতে আগুন ভারত ও শ্রীলংকার খেলোয়াড়দের ভিতর ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি করে। সবকিছু দেখে লয়েড ম্যাচ সেখানেই থামিয়ে দেন এবং এগিয়ে থাকা শ্রীলংকাকে জয়ী ঘোষণা করে। উল্লেখ্য এই শ্রীলংকাই অই বিশ্বকাপে প্রথমবারের মত ক্রিকেট বিশ্বকাপ ঘরে তোলে।
ট্রফি হাতে শ্রীলংকান অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা।
তবে এই বোতল ছোঁড়ার ঘটনা অইটাই একমাত্র নয়। আরো কয়েকবার উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে এরকম বোতল ছোড়াছুঁড়ি করা হয়েছিল। খোদ বাংলাদেশেও ২০১৫ সালের ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজের ২য় ম্যাচে বাংলাদেশের সিরিজ নিশ্চিত হওয়ার পর কিছু সমর্থক মিরপুর স্টেডিয়ামে গ্যালারি থেকে বোতল ছুঁড়ে মারেন। তবে আগুন লাগানোর ঘটনা আমার তথ্যসূত্র মতে সেটাই একমাত্র।
ভারতীয় সমর্থকরা তাদের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে প্রত্যাশামাফিক ফলাফল না পেলে নানা সময়েই নানা নেতিবাচক কর্মকান্ড ঘটায়। তবে এই ঘটনাই সেই সকল ঘটনার মধ্যে সবচাইতে নিকৃষ্ট।
পরের পর্ব – ১৯৯৬ বিশ্বকাপ এবং শ্রীলংকার নিরাপত্তা বিতর্ক। সাথেই থাকুন!
- 0 মন্তব্য