বিশ্বকাপ বিতর্ক(পর্ব-৮)
পোস্টটি ৩২৩৯ বার পঠিত হয়েছে২০১১ বিশ্বকাপের আরেকটি বিতর্কের কথা আজ আলোচনা করা যাক। যে বিতর্ক পাল্টে দিয়েছে ক্রিকেটের এক চিরায়ত আইন।
২০১১ বিশ্বকাপ। ব্যাঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে মুখোমুখি স্বাগতিক ভারত এবং ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করে ৩৩৮ রানের বিশাল রান সংগ্রহ করে ভারত। জবাবে ব্যাট করতে নেমে কেভিন পিটারসেন ও জোনাথন ট্রট দ্রুত আউট হয়ে গেলেও অধিনায়ক এন্ড্রু স্ট্রাউস এবং ইয়ান বেল ভালোমতই ইংল্যান্ডকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ব্যক্তিগত ১৭ রানে ইয়ান বেলকে এলবিডব্লিউ করার আবেদন জানায় বোলার। আম্পায়ার বিলি বাউডেন তাতে সাড়া দেননি। ভারত অধিনায়ক এমএস ধোনি রিভিউ নেন।
রিভিউতে দেখা যায়, বল স্ট্যাম্পে হিট করে এবং বেল এলবিডব্লিউ হয়েছে। বেল এটা দেখে ড্রেসিং রুমের দিকে পা বাড়ান। কিন্তু আম্পায়ার বাউডেন তাকে ফেরত আসতে বলেন এবং জানান, তিনি আউট হননি!
৭ম পর্ব - ১৯৯৬ বিশ্বকাপ এবং শ্রীলংকার নিরাপত্তা বিতর্ক
সবকিছু ঠিক আছে, কিন্তু তারপরও কেন বেল আউট হননি? এর পিছনে ক্রিকেটের তৎকালীন এক আইনের হাত আছে। এই আইন অনুসারে ব্যাটসম্যান স্ট্যাম্পের থেকে ২.৫ মিটার এগিয়ে এসে যদি এলবিডব্লিউ হন, তবে সেটা ‘আম্পায়ার্স কল’ হবে(আম্পায়ারের পূর্বের সিদ্ধান্তই বহাল থাকবে)। তবে এমএস ধোনি বতখন দাবি করেছিলেন যে বেল স্ট্যাম্পের থেকে ২.৪ মিটার এগিয়ে ছিল। আম্পায়ারকে সরাসরি ব্যাটসম্যানের দাড়ানোর দাগ থেকে স্ট্যাম্পের দূরত্ব নির্ণয়েরও দাবি জানান! কিন্তু আম্পায়ার গ্রাহ্য করেননি। হক আইয়ের নির্ণিত ২.৫ মিটার দূরত্বকেই চূড়ান্ত বলে গণ্য করেন এবং ইয়ান বেলকে নট আউট ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে এই আইন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। ‘ব্যাটসম্যানকে অধিক সুবিধা দেয়া হচ্ছে’ বলে অনেকে আইনটি পাল্টানোর দাবি জানান। আগেকার মতো পরিস্থিতি এখন আর নেই বলে এই আইনেরও কোনো প্রয়োজন নেই বলে ক্রিকেট বিশ্লেষক মন্তব্য করেন।
এরকম বিতর্কের পর আইসিসি আরেকটা বিতর্ক তৈরি করে। ওই ম্যাচের পরই আইসিসি ওই আইন বাতিলের ঘোষণা দেয়! যা তুমুল বিতর্কের জন্ম দেয়। ওই আইনটি প্রত্যাহার সময়ের দাবি ছিল, কিন্তু ওই ম্যাচের পরপরই আইনটি বাতিল করে দেয়া অনেকের কাছেই ভালো লাগেনি। শ্রীলংকা ক্রিকেট দলের তৎকালীন অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা এই আইনটি বিশ্বকাপ চলাকালে পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজনই ছিল না বলে দাবি করেন, তাঁর মতে বিশ্বকাপ শেষ হলে এই আইন নিয়ে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত করা উচিত ছিল।
বিতর্কের ওই ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত ইয়ান বেল আরো ৫২ রান যোগ করেন। সাথে অধিনায়ক স্ট্রাউসের ১৫৮ রানের ইনিংসে ভর করে ইংল্যান্ড জয়ের সম্ভাবনা দেখলেও ভারত দ্রুত কয়েকটি উইকেট ফেলে তা দুরাশায় পরিণত করে। শেষে পেসার গ্রায়েম সোয়ান এবং আজমল শেহজাদ দুটি ক্যামিও ইনিংস খেলে ম্যাচটাকে টাই করেন। ‘প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ’ হন সেঞ্চুরিয়ান এন্ড্রু স্ট্রাউস।
পরবর্তী ও শেষ পর্ব- ২০১৫ বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনাল, আইসিসি= ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল? সাথেই থাকুন!
- 0 মন্তব্য