• ক্রিকেট

"সেদিন আমিও জার্সি খুলেছিলাম, কিন্তু সেটা সবার চক্ষুগোচর ছিলো" - যুবরাজ সিং

পোস্টটি ১৬০৩ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

একবিংশ শতাব্দীর প্রাক্কালে একেবারে নুইয়ে পড়ে ভারত জাতীয় ক্রিকেট দল, একের পর এক পারে কোনঠাসা অবস্থা কপিল দেবের উত্তরসূরীদের। এমন ক্রান্তিলগ্নে ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভূত হোন পশ্চিম্বঙ্গের কৃতী সন্তান সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া, ভগ্নপ্রায় দলটাকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলেন দলপতিরূপে। তার অধীনে ২০০১ সালে কোলকাতা টেস্ট জয়ের মধ্য দিয়ে হারানো আত্নবিশ্বাস ফিরে পায় ভারত, তবে ন্যাটওয়েস্টের ফাইনাল জয় সেদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে যোগ ভিন্ন মাত্রা। সৌরভের সেই ঔদ্ধত্যপূর্ণ উদযাপন ম্যাচটিকে স্থান করে দিয়েছে পুরো ক্রিকেট বিশ্বের ইতিহাসে সেরা ম্যাচগুলোর কাতারে। 

একে তো এভারেস্টসম লক্ষ্য, তার উপরে ফাইনাল নামক মরিচীকা। আত্নবিশ্বাসের অবস্থান একেবারে শেষবিন্দুতে। তবে, যুবরাজ-কাইফের কালজয়ী এক জুটিতে সে যাত্রায় উদ্ধার হয় গাংগুলি বিগ্রেড। সেদিনের সেই সুখস্মৃতি রোমন্থন করে ভারতীয় গণমাধ্যম "ইন্ডিয়া টুডে" - কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে যুবরাজ ব্যক্ত করেছেন অজানা সব তথ্য, উন্মোচিত হয়েছে সব গুপ্ত কথা। 

" ম্যাচ জয়ের পরে দাদা (সৌরভ) আবেগে আপ্লুত হয়ে উত্তেজনার চরম সীমায় পৌঁছে যান। বেলকনিতে লাফিয়ে, গলা ফাটিয়ে উদযাপন আরম্ভ করেন তি।। হঠাৎ তিনি তার পরনের জার্সি খুলে শূন্যে উড়াতে থাকেন, যা ক্যামেরাকে ফাঁকি দিতে পারিনি। উল্টো ক্যামেরার লেন্সসহ মাঠে কিংবা টিভির সামনের সবাই ফাঁকি দিয়েছে আমায়। সেদিন আমিও আমার জার্সি খুলেছিলাম, কিন্তু সেটি সবার চক্ষুগোচর ছিলো। অবশ্য অতীব ঠান্ডা থাকায় আমার জার্সির নিচে একটা টি-শার্ট ছিলো। আমার জার্সি খোলার দৃশ্যটি লোকচক্ষুর আড়ালেই রয়ে গেছে। "

তিনি আরো বলেন, " প্রথম ইনিংস শেষে সত্যি বলতে পুরো দল অনেক চিন্তিত ছিলো, লক্ষ্যটা মোটেও ছোট্ট ছিলো না। বাড়তি চিন্তা হিসেবে চোখ রাঙানি দিচ্ছিলো ফাইনাল বাঁধা। দ্রাবিড় ভাইয়ের আউটে স্কোর দাঁড়ায় ১৩২/৫। খানিকক্ষণ বাদে উইকেটে স্থিতু হয়ে যাওয়া শচীন ভাইয়ের বিদায়ে অন্ধকার আরো ঘনীভূত হয়। তার আউটের পরে অজি ক্রিকেটারদের আনন্দ দেখে মনে হচ্ছিল তারা ম্যাচটা নিজেদের নামে করে নিয়েছে। ২৪ ওভারে ১৪৬ রান ছিলো আমাদের, তখন আমি আর কাইফ জুটি বাঁধি। "

" ৫০% দর্শক মাঠ ছেড়ে চলে যায় যাদের মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যায় বেশি ছিলো।      আমি ওকে (কাইফ) বলি, আমাদের বল বাই বল খেলতে হবে তাড়াহুড়ো করা যাবে না। আমরা অনূর্ধ্ব-১৯ দলে একসাথে খেলায় আমাদের বোঝাপড়া বেশ ভালো ছিলো। আমরা এক, দুই রান করে এগোতে থাকি। তবে, দু'জনের মধ্যে আমি ব্যাট চালিয়ে খেলতে থাকি। ১২১ রানে থামে আমাদের যুগল জুটি। আমার বিদায়ে পুরো দ্বায়িত্ব কাধে তুলে নেয় কাইফ, নায়কোচিত উইলোবাজিতে নিজে শতক পূর্ণ করার পাশাপাশি দলের এনে দেয় এক অনন্যসাধারণ জয়। যদিও উইকেটে এসে কাইফের আত্নবিশ্বাস দোদুল্যমান ছিলো বটে, কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে সাথে প্রত্যয়ী হয়েছে সে নিজেকেসহ সবাইকে উপহার দিয়েছে জীবনের সেরা ইনিংসের একটি। "       

শেষাংশে আক্ষেপের আরো একখানা কারণ দর্শান ৩৯ বছর বয়সী যুবরাজ। তিনি জানান, " সেদিন যদি আরো একটু পরিণত মনের অধিকারী হয়ে খেলতে পারতাম তাহলে হয়তো লর্ডসে সেদিন আমিও শতক হাঁকিয়ে মাঠ ছাড়তাম। "