ফুটবল'স গ্রেটেস্ট পাওলো সিজার মালদিনি : ইল ক্যাপ্টিনো
পোস্টটি ১৮৮৮ বার পঠিত হয়েছেআধুনিক ফুটবলের শুরুর দিকের কথা বলতে গেলে মালদিনি এমন একটা নাম যার কথা না বললেই নয়।সিরি অ তে তাঁর অভিষেক হয় মাত্র ১৬ বছর বয়সে এবং অবসর গ্রহন করে ৪০ বছরেও পরে।ক্লাবের হয়ে প্রায় এক হাজার ম্যাচ খেলছে এবং দেশের হয়ে খেলছে এক শত চেয়েও বেশি ম্যাচ। কি ছিল না তাঁর মধ্যে? অ্যাবিলিটি,অ্যাজিলিটি, স্ট্রেন্ট,স্টিরিট সবই ছিল তাঁর ভিতর।প্রায় ৩০ বছর ফুটবলের অন্যতম সেরা লিগে খেলেছেন বলতে গেলে ঐ সময়ের বিশ্বের সবচেয়ে বড় লিগে এবং বড় দল গুলোর সাথে।
•
২৬ জুন ১৯৬৮ মিলান শহরেই মালদিনির জন্ম।তাঁর পিতা সিজার মালদিনি ও একজন মিলান লিজেন্ড। তিনি তাঁর ১২ বছরের মিলান ক্যারিয়ারে ৪১২ ম্যাচ খেলেছেল এবং ৪ টি সিরি অ এবং একটি ইউরোপিয়া কাপ জয় করেছেন।কিন্তু তরুণ মালদিনির নজর সব সময় ছিল সিরি অর আরেক জায়েন্ট য়্যুভেন্তাসের দিতে। ১৯৭৮ আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপে ইতালির স্কোয়াডের প্রায় সবাই ছিল ওল্ড লেডি।তরুণ মালদিনির রুমে ততকালিন য়্যুভেন্তাস ও ইতালির স্টাইকার রবারর্তো বেত্তেগার বড় একটা পোস্ট ও ছিল।পাওলোর বয়স বাড়তে থাকে সাথে সাথে বাড়তে থাকে ফুটবলের প্রতি ভালবাসা এবং মিলানের প্রতি ভালবাসা । তাঁর বাবা একদিন তাঁর কাছে প্রশ্ন করে সে কোন দলের হয়ে ট্রায়ল দিতে চাই। পাওলো সাথে সাথে উত্তর দিল মিলান, অবশ্যই আমি আমার নিজের জন্মভূমির হয়ে খেলতে চাই। ট্রায়ল এর দিন ঠিক হয়ে গেল পাওলো খুব সকালে তাঁর বুট নিয়ে মাঠে পৌছে গেল।কোচরা তাঁর পজিশন সম্পর্কে জানতে চাইল। কিন্তু মালদিনির কোনো সঠিক পজিশন ছিল না সে উত্তর দিল "আমার পছন্দের তেমন কোনো পজিশন নেই।" ক্লাবে তখন রাইট উইং এর অভাব ছিল কোচরা পাওলো কে ঐ পজিশনে খেলাল এবং মুগ্ধ হয়ে ঐ দিনই তাকে সাইন করিয়ে নিল।প্রথমে যখন সে মিলানের ফাস্ট টিমের সাথে প্রাক্টিস শুরু করল সবাই ভেবে ছিল "মালদিনি" নামের কারনেই সে এত দ্রুত ফাস্ট টিমে জায়গা পেয়েছে। কিন্তু খুব দ্রুত সবার ভুল ভেঙ্গে গেল তাঁর খেলার ধরন দেখে।এরই মাঝে পাওলো তাঁর পজিশন পরিবর্তন করে তাঁর বাবার মত ডিফেন্সার হয়ে যান।১৯৮৫ সালের ২০ জানুয়ারি পাওলো মাত্র ১৬ বছর বয়সে উদিনেসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে সিরি অ তে অভিষেক করে। ঐ ম্যাচে তিনি মাঠে বদলি হিসেবে নেমেছিলেন। । তাঁর তখনও বিশ্বাস হচ্ছিল না সে মিলানের হয়ে সিরি অ তে খেলছে। সে মাঠে নামার কয়েক মিনিট পর বল রিসিভ করে এবং তা গোল কিপারের কাছে পাস দেয়। মিলান দলে তখন খেলত আরেক লিজেন্ড ফ্রাংকো বারেসি । তিনি মালদিনির প্রথম ম্যাচ সম্পর্কে বলেন : " আসলে সে অনেক কম বয়সী ছিল।এজন্য আমি তাকে কিছু পরামর্শ দিতে চাইলাম কিন্তু তাকে সামান্যই দিতে হলো কারনে সে আগে থেকেই অসাধারন প্লেয়ার ছিল।" ঐ মৌসুমে তিনি সিরি অ তে ঐ একটি ম্যাচই খেলেছিলেন। অবশ্য
পরের মৌসুমে সে মিলানের নিয়মিত সদস্য হয়ে যান মাত্র ১৭ বছর বয়সেই।তাকে ৩ নম্বর জার্সি দেওয়া হয় এবং কিছু দিন পরই তাকে লেফ্ট ব্যাক হিসেবে মাঠে নামানো হয় কারন সে তাঁর বাম পা ব্যবহার করত।১৯৮৭ সালের ৪ জুলাই মালদিনি তাঁর প্রথম সিরি অ গোল করে যে ম্যাচে মিলান কোমোর বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে জয় পায়। ১৯৮৭-৮৮ সিরি অ মৌসুমে মিলান মাত্র ১৪ গোল হজম করে এবং তারা সিরি অ জয় করে।১৯৮৮ সালে মালদিনি ইতালিয়ান সুপার কাপ জয় করে। ১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে মিলান প্রায় ২০ বছর পর ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে উঠেছিল এবং এটা ছিল মালদিনির প্রথম ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনাল।পুরো স্টেডিয়াম মিলান এর দর্শকে ভরা ছিল।পরিস্থতি এমন ছিল যে মিলান কোনো ভাবেই হারতে পারে না। খেলা শুরু হলো। রুড হুলিট ও মার্কো ফন বাস্তেন এর জোড়া গোলে মিলান ২০ বছর পর ইউরোপিয়ান কাপ জয় করে এবং মালদিনি তার প্রথম। ১৯৮৮-৮৯ ও ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে ব্যাক টু ব্যাক ইউরোপিয়ান কাপ( উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ)জয় করে।৮৮-৮৯ মৌসুমে মিলান সিরি অ তে তৃতীয় ও ৮৯-৯০ মৌসুমে দ্বিতীয় হয়। ১৯৮৯, ১৯৯০ মৌসুমে মিলান উয়েফা সুপার কাপ জয় করে। ১৯৮৯, ১৯৯০ ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ / ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ও জয় করে।১৯৮৯ সালে মালদিনি ব্রাভ অ্যাওয়ার্ড জয় করে যা অনূর্ধ্ব-২১ ইউরোপীয় বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরষ্কার।
১৯৯১-৯২ মৌসুমে মিলান সিরি অ তে অপরাজি চ্যাম্পিয়ন হয়।ঐ সময় মিলান মোট ৫৮ ম্যাচ অপরাজিত ছিল।ঐ সময় তাদের নিকনেম দেওয়া হয় " দি ইনভিনসেবলস"।১৯৯২-৯৩ মৌসুমে মিলান সিরি অ এর চ্যাম্পিয়ন হয় এবং উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে হেরে যায়।১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে টানা তৃতীয় বারের মত মিলান সিরি এ জয় এবং ব্যাক টু ব্যাক উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে পৌছায়।এবার তারা মুখোমুখি হয় ইয়োহান ক্রইফ এর বার্সেলোনার। কিন্তু সবাই যতটা ভেবে ছিল ততটা লাড়াই হলো না। মিলান ৪-০ ব্যাবধানে জয় লাভ করে। মালদিনি তার তৃতীয় ইউরোপিয়ান কাপ জয় করে।
তৃতীয় চ্যাম্পিয়নস লিগ জয় এবং ১৯৯৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার জন্য,মালদিনি প্রথম ডিফেন্ডার হিসেবে ওয়াল্ড সকার ম্যাগাজিন এর প্লেয়ার অফ দা ইয়ার অ্যাওয়ার্ড জয় করে।মালদিনি ১৯৯৪ ব্যালোন ডি'ওর জয়ের প্রতিযোগীতায় তৃতীয় হয় এবং ফিফা ওয়াল্ড প্লেয়ার অফ দা ইয়ার অ্যাওয়ার্ড এর তালিকায় ৫ম হয়। ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে মিলান সিরি অ তে ৪র্থ হয় এনং টানা তৃতীয় বারের মত চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠে আয়াক্স এর কাছে ১-০ ব্যবধানে হেরে যায়।১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে মালদিনি তার ৫ম সিরি অ জয় করে।
১৯৯৬-৯৭ মৌসুমের পর মালদিনি কে মিলানের নতুন অধিনায়ক করা হয়।সময়টা মিলানের জন্য কঠিন যাচ্ছিল।মিলান মালদিনির নেতৃত্বে ১৯৯৮ ইতালিয়ান কাপ এর ফাইনলে উঠে কিন্তু লাজিওর কাছে হেরে যায়। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে মিলান লাজিওর চেয়ে মাত্র ১ পয়েন্ট বেশি নিয়ে সিরি অ র চ্যাম্পিয়ন হয়।১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে মিলান ইতালিয়ান সুপার কাপ এর ফাইনালে পারমার কাছে হেরে যায় এবং সিরি অ তে তৃতীয় হয়। ২০০০-০১ মৌসুমে মিলান সিরি অ তে ৬ষ্ট হয় এবং চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার সুযোগ পায় না। ২০০২-০৩ মৌসুমে মিলান আবার উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতে। ফাইনালে মিলান য়্যুভেন্তাসকে টাইব্রেকারে হারায়। মালদিনি ছিলেন ফাইনালের ম্যাচ সেরা প্লেয়ার। এটি ছিল মিলানে মালদিনির খেলোয়াড় হিসেবে চতুর্থ ও অধিনায়ক হিসেবে প্রথমবারের মতো উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা, ঠিক ৪০ বছর আগে তার বাবা সিজার মালদিনিও মিলানের অধিনায়ক হিসেবে ইউরোপিয়ান কাপ জিতেছিলেন,ইংল্যান্ডে মাটিতে।
পরবর্তী মৌসুমে মিলান সিরি অ জেতে। মালদিনি ঐ মৌসুমে সিরি অ এর সেরা ডিফেন্ডারের পুরস্কার জিতেন। ঐ পুরস্কারটি ২০০০ সাল থেকে চালু হয়েছিল। ২০০৪-০৫ মৌসুমে মিলান উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে লিভারপুলের মুখোমুখি হয়। খেলা শুরু হওয়ার পরপরই ৫০ সেকেন্ডের মাথায় মালদিনি গোল করেন। এটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম গোল। প্রথমার্ধ শেষে মিলান ৩-০ গোলে এগিয়ে ছিল। কিন্তু, দ্বিতীয়ার্ধে লিভারপুল ৩ গোল করে ম্যাচে দারুণ ভাবে ফিরে আসে। শেষ পর্যন্ত মিলান টাইব্রেকারে লিভারপুলের কাছে হেরে যায়। ঐ পরাজয়কে মালদিনি তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে মূহুর্ত বলে মনে করেন।
২০০৬-০৭ মৌসুমে এসি মিলান আবার ও উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতে। ফাইনালে লিভারপুলকে হারিয়ে মিলান ২০০৪-০৫ মৌসুমের পরাজয়ের বদলা নেয়। এটি ছিল মিলানের হয়ে মালদিনির পঞ্চম চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা। ঐ মৌসুমে মালদিনি টুর্নামেন্টের সেরা ডিফেন্ডারের পুরস্কার জেতেন। ঐ পুরস্কারটি ১৯৯৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত চালু ছিল।
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৮, পারমার বিপক্ষের ম্যাচ টি ছিল মালদিনির ১০০০ তম প্রফেশনাল ম্যাচ।যার মধ্যে সে ৮৬১ ম্যাচ খেলে ছিল মিলারে,১২ ম্যাচ ছিল ইতালির অনূর্ধ্ব-২১ দলের, ১ ম্যাচ ছিল ইতালির অলিম্পিক দলের এবং ১২৬ ম্যাচ ছিল ইতালির জাতীয় দলের।মালদিনি তার শেষ চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচ খেলে স্যান স্যারিও তে ৪ মার্চ ২০০৮ সালে। ঐ ম্যাচে আর্সেনাল মিলান কে ২-০ ব্যাবধানে পরাজিত করে।২০০৮ সালে তাঁকে ফিফা অর্ডার অফ মেরিট অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় এবং Premio Internazionale Giacinto Facchetti অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় যা দক্ষ ও সৎ প্লেয়ার দের দেওয়া হয়।
২০০৯ সালের ১৮ এপ্রিল মালদিনি ঘোষনা দেয় সে ২০০৮-০৯ মৌসুম শেষে ফুটবলকে বিদার জানাবে।১৭ মে ২০০৯, মালদিনি উদিনেসের বিপক্ষে লিগ ম্যাচে মিলানের হয়ে তার ৯০০তম অফিশিয়াল ম্যাচ খেলে।ঐ বছরের ২৪ মে, মালদিনি মিলানের হোম গ্রাউন্ড স্যান স্যারিও তে শেষ বারের মত মাঠে নামে রোমার বিপক্ষে । যদিও মিলান ম্যাচ টি হেরে যায়।ম্যাচ শেষে দর্শক রা আবেগময় হয়ে পড়ে এবং দাড়িয়ে করতালির মাধ্যমে তাকে সম্মান প্রদর্শন করে।মালদিনি ৩১ মে শেষ বারের মত মিলানের হয়ে মাঠে নামে। ঐ ম্যাচ টি মিলান জিতে যায়। ম্যাচ টি ছিল সিরি অ এর মৌসুমের শেষ ম্যাচ।ম্যাচ শেষে দর্শকরা আবারও তাকে দাড়িয়ে করতালি দিয়ে সম্মান প্রদর্শন করে।
২০০৮-০৯ মৌসুম শেষে মালদিনি ফুটবল থেকে অবসর নিয়ে নেন। অবসরের পর এ মিলান ক্লাব কর্তৃপক্ষ তিন নম্বর জার্সিটি তার ছেলে ব্যতিত আর কোনো খেলোয়াড়কে না দেবার সিদ্ধান্ত নেয়। মালদিনি মিলানের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৯০২ ম্যাচ খেলেছেন। এটিই মিলানের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড।
২৮ আগস্ট ২০০৯, উয়েফা মালদিনি কে উয়েফা প্রেসিডেন্ট'স অ্যাওয়ার্ড দেয় তাঁর অসাধারন ক্যারিয়ারের জন্য।ঐ বছর ১৭ নভেম্বর বিখ্যাত স্পানিশ পত্রিকা মার্কা মালদিনি কে " মার্কা লেয়েন্ডা" প্রাইজ দেয় তার ক্যারিয়ার ও অর্জন সমূহের জন্য।
•
★মিলানের হয়ে মালদিনির ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান★
ম্যাচঃ৯০২
গোলঃ৩৩
•
১৯৮৬ সালে মালদিনি ইতালির অনূর্ধ্ব-২১ দলে সুযোগ পান। ঐ সময় ইতালির অনূর্ধ্ব-২১ দলের কোচ ছিলেন তার বাবা সিজার মালদিনি। মালদিনি অনূর্ধ্ব-২১ দলে ২ বছর খেলে ১২ ম্যাচে ৫ গোল করেন।
১৯৮৮ সালের ৩১ মার্চ যুগোস্লাভয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে ইতালি জাতীয় দলের হয়ে তার অভিষেক ঘটে।
ঐ বছর অনুষ্ঠিত ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি ইতালির সবকটি ম্যাচে ছিলেন।
১৯৯০ সালে ইতালিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপটি ছিল মালদিনির প্রথম বিশ্বকাপ। ঐবার ইতালি সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে ট্রাইব্রেকারে হেরে যায়। ডিফেন্সে ভালো পারফরম্যান্সের ফলে মালদিনি টুর্নামেন্টের অল-স্টার টিম এ এ নির্বাচিত হন। ঠিক ২৮ বছর আগে ১৯৬২ বিশ্বকাপে তার বাবাও ঐ একই কৃ্তিত্ব দেখিয়ে ছিলেন।
১৯৯৩ সালে মেক্সিকোর বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে মালদিনি ইতালির জাতীয় দলের হয়ে প্রথমবারের মতো গোল করেন। এটি ছিল তার ৪৪তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ।
১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপে দলের নিয়মিত অধিনায়ক ফ্রাংকো বারেসি ইনজুরিতে পড়ায় বেশ কয়েকটি ম্যাচে ইতালিকে নেতৃত্ব দেন মালদিনি। ঐবার ইতালি রানার আপ হয়। ফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত খেলার ফলাফল গোলশূন্য থাকায় খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ইতালি হেরে যায়। পুরো টুর্নামেন্টে উজ্জ্বল পারফরম্যান্সের ফলে মালদিনি টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের অল-স্টার টিম এ নির্বাচিত হন। ঐ বিশ্বকাপের পর ফ্রাংকো বারেসি জাতীয় দল থেকে অবসর নিলে মালদিনি ইতালির অধিনায়কত্ব পেয়ে যান।
১৯৯৬ সালের ইউরোতে ইতালি প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নেই। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে ইতালি কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে ট্রাইবেকার হেরে বিদায় নেয়। ২০০০ সালের ইউরোতে ইতালি ফাইনালে গিয়ে ফ্রান্সের কাছে হেরে যায়।
২০০২ সালের বিশ্বকাপে ইতালি দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নেয়। ঐ বিশ্বকাপের পর ইতালির জাতীয় দল থেকে মালদিনি অবসর নিয়ে নেন। মালদিনি ইতালির জাতীয় দলের হয়ে ১২৬ ম্যাচ খেলেছেন। তিনি তার ১৪ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের অর্ধেকেরও বেশি সময় কাটিয়েছেন ইতালির অধিনায়ক হিসেবে। তিনি ইতালিকে রেকর্ড ৭৪ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ছেন।
•
ডিফেন্ডার হিসেবে মালদিনি মূলত ট্যাকলিং এর চেয়ে তার পজিশনিং এর জন্য বেশি বিখ্যাত ছিলেন। তার পজিশনিং ভালো হওয়ার ফলে তার খুব একটা ট্যাকল করতে হতো না। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তিনি প্রতি ২ ম্যাচে গড়ে একটি করে ট্যাকল করতেন।
•
•
★তার অর্জন সমূহ ★
দলীয়:
• সিরি অঃ ৭
• ইতালিয়ান কাপঃ ১
• ইতালিয়ান সুপার কাপঃ ৫
• উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগঃ ৫
• উয়েফা সুপার কাপঃ ৫
• ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপঃ ৩
ব্যক্তিগত:
• ওয়ার্ল্ড সকার বর্ষসেরা খেলোয়াড়ঃ ১
• উয়েফা বর্ষসেরা ক্লাব ডিফেন্ডারঃ ১
• সিরি এ বর্ষসেরা ডিফেন্ডারঃ ১
• ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ অল-স্টার টিমঃ ২
• উয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ টিম অফ দ্য টুর্নামেন্টঃ ৩
• ফিফপ্রো বিশ্ব একাদশঃ ১
• উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল ম্যান অফ দ্য ম্যাচঃ ১
• ফিফা ১০০
• ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার (দ্বিতীয় স্থান): ১
• ইউরোপীয় বর্ষসেরা ফুটবলার (তৃতীয় স্থান): ২
• অনূর্ধ্ব-২১ ইউরোপীয় বর্ষসেরা ফুটবলারঃ ১
• UNICEF ইউরোপিয়ান ফুটবলার অফ দা সিজন : ১
• ইএসএম টিম অফ দা ইয়ার : ৪
• ফিফা বিশ্বকাপ ড্রিম টিম : ১
• ফিফা একাদশ : ১
• উয়েফা টিম অফ দি ইয়ার : ২
• উয়েফা প্রেসিডেন্ট'স অ্যাওয়ার্ড : ২০০৩
• ফিফা অর্ডার অফ মেরিট :২০০৮
• উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ অ্যাসিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড :২০০৯
- 0 মন্তব্য