• ফুটবল

বঙ্গীয় জার্সি কথন!

পোস্টটি ২৬৩১ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

জার্সি বরাবরই ফুটবল খেলার গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।।জার্সিকে ফুটবলের অলংকার বললেও ভুল হবে না।আবার হতেই পারে এই যখন আপনি বাংলাদেশ ফুটবল দলের উদাহরণ টেনে আনবেন। আমরা বঙ্গদেশীয়রা অতিশয় আবেগপ্রবণ। আর লাল সবুজই আমাদের আবেগের রং।তাইতো আদিকাল থেকে অন্তকাল পর্যন্ত আমাদের ফুটবলে এ রং ছাড়া অন্যকোনো রং দেখা যাবে না,তা একপ্রকার নিশ্চিত। কিন্তু আমাদের জান্তারা হয়তোবা এটা জানেন না যে আবেগের রং ছাড়াও ইতিহাস ঐতিহ্যের রঙে ফুটবলের জার্সি হয়।লাল সবুজ যে বঙ্গদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের অংশ,সেটাও কিন্তু আমি অস্বীকার করতেছিনা।লাল সবুজের ইতিহাস বাদেও,একটা জার্সি তৈরি করার মতো যথেষ্ট ইতিহাস,ঐতিহ্য, ঐতিহাসিক ঘটনা, স্মরণীয় দিন ও তার রংয়ের কমতি হবে না এই বঙ্গদেশে।তাও যদি আপনি লাল সবুজ ত্যাগ করতে না চান সমস্যা নেই।আবার লাল সবুজ রঙটা যে অসুন্দর তাও আমি বলতেছিনা।লাল সবুজেও আন্তর্জাতিক এবং ক্লাব পর্যায়ের অনেক দলেরই দৃষ্টিনন্দন জার্সি অহরহ দেখতে পাবেন।তবে আমাদের কর্তাব্যক্তিরা দেখেন কি না তা বলা একটু কঠিনই বটে!তা না হলে দিনের পর দিন আমাদের এই যাচ্ছেতাই জার্সি পড়ে খেলতে হতো না।আমরা পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয়।আমাদের দেশের জিজাইনারদের কদর বিশ্বজোড়া।আর আমাদের ছেলেদেরই কিনা প্রাচীন ডিজাইনের ফ্যাকাসে রঙের জার্সি পরে খেলতে হয়।তাতে তো আমাদের তরুন প্রজন্মের একটু আধটু আফসোস লাগতেই পারে।আর কালার গ্রেডিং,কাপড় নিয়ে না বললেই হয়তো ভালো হতো।বাংলার চেনা সবুজ আর রক্তে রঞ্জিত সূর্যের লাল রং যে এতোটা ফ্যাকাসে হতে পারে এজন্য আপনাকে শীতের অনাবৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হবে না,বঙ্গদেশের ফুটবল জার্সির দিকে তাকালেই হবে!

 

কিন্তু এরকম আন্তর্জাতিক ফুটবলের জার্সির ডিজাইন বা নকশা তৈরি করা চাট্টি খানি কথা নয়। কারণ এই পোশাক শুধু একটা দলের পরিচয় বহন করেনা বরং এটা এমন হতে হয় যেন তা একটা জাতির অতীত, বর্তমান – সবকিছুরই বার্তা দিতে পারে।

 

একটা দলের শার্ট, শর্টস কিংবা মোজা দেখতে কেমন হবে, এবং জার্সি বা কিট ঠিক কি রিপ্রেজেন্ট করবে সেটা ঠিক করতেই একটি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মাসের পর মাস সময় ব্যয় করে। একটা নকশা কল্পনা করা শুধু সেই দেশের জাতীয় রঙ ব্যবহার করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনা, বরং এর চেয়ে বেশি অনেক কিছু চলে আসে জাতীয় দলের জার্সির ক্ষেত্রে। কোন দেশ তাদের পতাকার রঙ ব্যবহার করে, আবার কোন কোন দেশ তাদের জার্সিতে এমন রঙ চায় যেটা তাদের ইতিহাস, রাজনীতি এমনকি ভৌগলিক তাৎপর্য বহন করে।

 

‘দলের পরিচয়টা উজ্জ্বল হতে হবে’ – জন ডেভলিন এর মত এটা। ভদ্রলোক হচ্ছেন একজন ফুটবল কিট ডিজাইনের এক্সপার্ট এবং ‘ফুটবল কিট (ট্রু কালারস)’ বইয়ের লেখক। সিএনএন এর সাথে সাক্ষাতে ফুটবল জার্সির ব্যাপারে তার অনেক কথা উঠে আসে।

 

তিনি বলেন, ‘আমার মতে, একটা সত্যিকার অসাধারণ জার্সির নকশা তৈরি করতে হলে আপনাকে ইতিহাস ঐতিহ্যকে মাথায় রাখতে হবে। এটা বুকে ধারণ করতে হবে, কিন্তু আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে সময়। জার্সিটা হতে হবে সময়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, দেখতে এমন হতে হবে যেন এটা কোন একটা সময়ের কথা বলে।’

কিন্তু আমাদের ফুটবলের কর্তাব্যক্তিরা শুধু ইতিহাস আর ঐতিহ্যকেই আঁকড়ে ধরেছেন।সময়ের সামঞ্জস্যটা না হয় আর কটা দিন পরেই ধরবেন।

 

জার্সিতে নতুনত্ব, জার্সির আধুনিকায়ন,নতুন জার্সির কথা ফুটবল পাড়ায় মাঝেমধ্যেই শোনা যায়।কিন্তু দুদিন পরই যাচ্ছে তাই!তারপরও আশায় বুক বাধি, 'বঙ্গদেশের এ অঙ্গ ত্যানা' একদিন না একদিন আধুনিক হবেই।FB_IMG_1618283573776