• অ্যাশেজ
  • " />

     

    আধুনিক ছাইভষ্মের গল্প (দ্বিতীয় পর্ব)

    আধুনিক ছাইভষ্মের গল্প (দ্বিতীয় পর্ব)    

     


    আরো পড়ুনঃ

    আধুনিক ছাইভষ্মের গল্প : প্রথম পর্ব


     

     

    নব্বই দশকের শুরু থেকে ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার রাজত্ব শুরু হবার পরে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় দলগত বিস্ময়ের ঘটনা কোনটি? ২০০৫ এর অ্যাশেজ তো ছিল বারুদে ঠাসা এক সিরিজ। সেটা হয়েছিলো ইংল্যান্ডে। ২০০৬-০৭ সালে নিউজিল্যান্ড অস্ট্রেলিয়াকে ওয়ানডেতে ৩-০ তে হোয়াইটওয়াশ করেছিলো। সেটা ছিল মহা বিষ্ময়ের। তবে গত ২৫ বছরের ক্রিকেটে তো বটেই, ক্রিকেট ইতিহাসেরই এক মহাবিস্ময় বোধকরি ২০১০-১১ অ্যাশেজে নিজেদের মাটিতে পালাবদলের মধ্যে থাকা অস্ট্রেলিয়ার তিন টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়!

     

    সকাল নাকি দিনের পূর্বাভাস দেয়। এই সিরিজটা তা দেয়নি। প্রথম টেস্টের প্রথম দিনটা পিটার সিডল শুরু করেছিলেন হ্যাটট্রিক দিয়ে। নিজের ২৬তম জন্মদিনে নিজেকে সবচেয়ে বড় উপহারটা দিয়েছিলেন তিনি। অ্যালিস্টার কুকের এক অত্যাশ্চর্য, অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতার সিরিজের শুরুও সেই টেস্টে। প্রথম ইনিংসে সিডলের তোপে ২৬০ রানে অলআউট হয়ে গেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ইতিহাস সর্বোচ্চ ৫১৭ রানে ডিক্লেয়ার করার গৌরব অর্জন করেন অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস। কুক ২৩৫ রানে অপরাজিত থেকে ভাঙেন গ্যাবায় স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। প্রথম টেস্টটা ড্র হয়।

     

     

    সিডলের হ্যাট্রিকঃ অ্যাশেজ ২০১০-'১১

     

     

    দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ২৪৫ রানের জবাবে আবারও কুকের ১৪৮ আর কেভিন পিটারসেনের অতিমানবীয় ২২৭ রানের কল্যাণে স্কোরবোর্ডে ৬২০ রান জমা করে ইংল্যান্ড। অ্যাশেজ নাটককে পরিপূর্ণতা দিতেই যেন অসিদের দ্বিতীয় ইনিংসে চতুর্থ দিনের শেষ বলে ড্রয়ের দিকে যাওয়া ম্যাচটিতে লাগাম টেনে ধরেন কেভিন পিটারসেন। তার 'পার্টটাইম' বলেই দিনের শেষ বলে ৮০ রানে থাকা মাইকেল ক্লার্ক আউট হলেন! পরদিন প্রথম সেশনেই ২০ ওভারের মধ্যেই শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭ বছর পরে (পার্থ টেস্ট, ১৯৯৩, বিপক্ষঃ ওয়েস্ট ইন্ডিজ) নিজেদের মাটিতে ইনিংসে হারলো অস্ট্রেলিয়া। 

     

    তৃতীয় টেস্টটা ছিল মিচেল জনসনের টেস্ট। ৬৯ রানে ৫ উইকেট পড়ার পরে ধুঁকতে থাকা অস্ট্রেলিয়া ২৬৮ রানে পৌঁছলো মিচেলের ৬২ রানের কল্যাণেই। তারপর বোলিংয়ে ৩৮ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিলেন মিচেল। অস্ট্রেলিয়া জিতলো।

     

    কিন্তু চরম অপমান অপেক্ষা করছিলো তাদের জন্য পরের দুই টেস্টে। বক্সিং ডে টেস্টে মেলবোর্নে অ্যাশেজের ইতিহাসে সর্বনিম্ন মাত্র ৯৮ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। ট্রটের অপরাজিত ১৬৮ রানে ভর করে ইংল্যান্ড জবাবে করে ৫১৩। ধুঁকতে থাকা অস্ট্রেলিয়া আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। ২৫৮ রানে দ্বিতীয় ইনিংসে অল আউট হয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজে পিছিয়ে যায়। ইংল্যাণ্ড-ও নিশ্চিত করে অ্যাশেজ ট্রফিটা তাদের কাছেই থাকছে।

     

    তবে এই ম্যাচের 'কন্ট্রোভার্সি' ছিল আম্পায়ার আলিম দারের সাথে রিকি পন্টিংয়ের চরম বাদানুবাদ। পিটারসেনের একটা কট বিহাইন্ডকে কেন্দ্র করে এর সূত্রপাত। আলিম দার 'অন ফিল্ডে' নট আউট দেন, ডিআরএস-ও হটস্পটে কিছুই দেখায়নি। তাতে নট আউটই থাকবার কথা। যদিও পিটারসেনের ওই বলটা ব্যাটে লেগেছে বলে মনে হয়। খাঁড়ার উপর মরার ঘায়ের মতো পন্টিংকে ম্যাচ ফি-র অর্ধেক জরিমানা করা হয়।

     

     

    সিডনিতে শেষ টেস্টের কাহিনীও প্রায় একই। এবারে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসের রানটা একটু বেশি ছিল, ২৮০! কিন্তু ইংল্যান্ডের জবাবটাও আগের থেকে একইরকম বেশি, ৬৪৪! কুক, বেল, প্রায়র তিনজন পেরিয়েছিলেন তিন অঙ্কের কোটা। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস পরাজয় তাই সময়ের ব্যাপার ছিলো মাত্র। সিরিজে তিন সেঞ্চুরিসহ মোট ৭৬৬ রান করেন অ্যালিস্টার কুক। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ইংল্যান্ড অ্যাশেজ জিতে ২৪ বছর পরে! ইতিহাসের প্রথম এবং একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে রিকি পন্টিং নাম লেখান তিন অ্যাশেজ হারা অজি অধিনায়ক হিসেবে। 

     

    টানা দুইবার অ্যাশেজ ট্রফি নিজেদের কাছে রাখতে পেরে চতুর্থ টেস্টের পর এমসিজি-তে অস্ট্রেলিয়ান দর্শকদের উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডের খেলোয়ারদের দলগত স্প্রিংকলার নৃত্য তো অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটকে অপমান আর ইংলিশ উদযাপনের এক প্রতীকী দৃশ্য হয়ে আছে!

     

     

    ইংলিশদের স্প্রিংক্লার নৃত্য

     

    এলো ২০১৩ সালের প্রথম অ্যাশেজ। এই সিরিজের প্রথম টেস্ট বিতর্ক, চমক আর উত্তেজনার এক মিশেল। চমক ছিলেন অ্যাশটন অ্যাগার। প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের ২১৫ রানের জবাবে অসিরা যখন ১১৭ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে, তখনই ‘ফিল হিউজের’ সাথে জুটি গড়েন অ্যাগার। ১১ নাম্বার ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে সর্বোচ্চ ব্যাক্তিগত ইনিংস ৯৮ করে (আগের রেকর্ডঃ টিনো বেস্ট,৯৫) আউট হলেন তিনি। প্রায় দেড়শ বছরের টেস্ট ক্রিকেটে কোন ১১ নাম্বার ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরি নেই। দুইবার দুইজনকে থামতে হয়েছে ৯৫ আর ৯৮ এ! ক্রিকেট বিধাতার এ কোন খেয়াল কে জানে!

     

    তবে অ্যাগার উপাখ্যানই এই টেস্টের একমাত্র উল্লেখযোগ্য ঘটনা নয়। চরমতম বিতর্কের শুরু হয় ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসের সময় স্টুয়ার্ট ব্রডের স্লিপে দেয়া একটি ক্যাচকে কেন্দ্র করে। অ্যাগারের বলেই ব্রড ক্যাচ দেন স্লিপে। ক্লার্ক সেই ক্যাচ ধরার পরেও যেন কিছুই হয়নি এমন ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকেন ব্রড। বিস্ময়ের ওপর বিস্ময়, আম্পায়ারও আঙুল তুলে দেন না। যেন অ্যাগারের স্পিন সরাসরি হ্যাডিনের গ্লাভস থেকে স্লিপে গিয়েছে। ব্রড কেন ওয়াক করেননি সে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা উঠে। টুইটের পর টুইট করতে থাকেন সাবেকরা #ব্রডকান্টওয়াক বলে।

     

     

    ব্রডের সেই বিতর্কিত "নট আউট"

     

     

    শেষদিনের চরম উত্তেজনায় যখন অস্ট্রেলিয়া মাত্র ১৪ রানে হারে তখন আরও বোঝা যায়, সেই ইনিংসে ৬৫ রান করা ব্রডের ওয়াক না করার সেই মূল্য। সাথে আরও ছিল ডিআরএস বিতর্ক। হ্যাডিন-প্যাটিনসনের ৬৫ রানের জুটির পর শেষ উইকেটটা ডিআরএস-এ 'অন ফিল্ড' আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদলে আউট দেয়া হয়। ইংল্যান্ড ঠিকভাবে প্রথমে আপিলও করেনি। কিন্তু কুক শুধু সুযোগ নেবার উদ্দেশ্যে ডিআরএস চায়। হটস্পটে কিছু না দেখা গেলেও শুধুমাত্র শব্দ শোনার উপর ভিত্তি করে থার্ড আম্পায়ার এরাসমাস মাঠের আম্পায়ার আলিম দারের সিদ্ধান্ত বদল করে দেন। ড্রেসিংরুম থেকে লেম্যানের হতাশ দৃষ্টি, ক্লার্কের চোখে অবিশ্বাস সবমিলিয়ে মহা বিতর্ক শুরু হয় ডিআরএসকে কেন্দ্র করে। হ্যাডিন অবশ্য পরে স্বীকার করেছিলেন, তিনি আউট ছিলেন।  

     

    দ্বিতীয় টেস্ট সম্ভবত স্মরণীয় জো রুটের আগমন বার্তার কারণে। অভিষেকটা আগেই হয়েছিলো ভারতের সাথে। কিন্তু অমিত প্রতিভাধর বলে বিবেচিত রুট নিজেকে মেলে ধরার টেস্ট হিসেবে বেছে নেন দ্বিতীয় টেস্টকেই। আগামীতে কি হবে এখনই বলা যায় না। তবে পরবর্তী দশকে বিশ্বের ব্যাটিং ভবিষ্যৎ বলে যাদের ভাবা হচ্ছে তাদের মধ্যে রুট অবশ্যই অন্যতম। দ্বিতীয় ইনিংসে তার ১৮০ রানের আগে অস্ট্রেলিয়া লর্ডসে ১৯৬৮ সালের পরে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ১২৮ রানে অল আউট হয়। অজিরা ম্যাচ হারে ৩৪৭ রানে।

     

    তৃতীয় টেস্ট আবারও শুরু হয় ডিআরএস বিতর্ক দিয়ে। এবার স্ট্রাইকিং এন্ডে উসমান খাজা। এবারে খাজাকে কট বিহাইন্ড দেবার পরে খাজা যখন ডিআরএস চান তখন বল ব্যাটে লাগবার কোন ধরনের আলামত না পাওয়া গেলেও আম্পায়ার আউট বহাল রাখেন। ডিআরএস বিতর্কের আগুনে ঘি পড়ে যেন। আইসিসি ডিআরএস নিয়ম পরিবর্তনের দিকে মনোযোগ দিতে বাধ্য হয়। এই টেস্ট ড্র হয়।

     

    চতুর্থ টেস্টের রিভিউ বিতর্ক আসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। এবারে ক্রিস রজার্সের একটা বল পায়ে লেগে কিপার প্রায়রের হাতে যায়। ইংল্যান্ড দল আবেদন করে কট বিহাইন্ডের। আম্পায়ারও আঙুল তুলে দেন। রিভিউতে যখন দেখানো হয় যে বলটা পায়ে লেগেছে এবং হক আইতে আদতে সেটা এলবিডব্লিউ হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। কিন্তু যেহেতু রিভিউ ছিল ক্যাচের, তাই আম্পায়ার সিদ্ধান্ত বদলে বাধ্য হন। এবারে কুক অনেকক্ষণ তর্ক করলেও লাভ কিছু হয়নি। তবে টেস্টটা জিতেছিলো ইংল্যান্ডই। শেষ টেস্ট ড্র হলেও সিরিজ জিতে নিয়েছিলো ৩-০ তে!

     

    তবে এই সিরিজে আরও একটা বিতর্ক ছিল অ্যাশেজ জয়ের পরে পঞ্চম টেস্টের শেষে ওভালে ইংল্যান্ড ক্রিকেটাররা অতি উদযাপনের নেশায় মাতাল হয়ে গিয়েছিলো। ম্যাচ শেষে পুরো দল শ্যাম্পেন গিলতে গিলতে মাঠে গোল হয়ে বসে ছিলেন। আর এর মধ্যে কেভিন পিটারসেন, স্টুয়ার্ট ব্রড আর জেমস অ্যান্ডারসন পিচের মধ্যেই অর্ধনগ্ন হয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়াটাকে কর্তব্য মনে করছিলেন। প্রচণ্ড বিতর্কের মধ্যে পুরো দলই ক্ষমা চায় বিশ্ব ক্রিকেটের কাছে।

     

    পিচে জলবিয়োগঃ টেলিগ্রাফের ব্যঙ্গচিত্র

     

    ভাবা যায়, সেই ২০০৬-০৭ সালে ম্যাকগ্রা, ওয়ার্ন, ল্যাঙ্গার, হেইডেনদের বিদায়ের পরে ২০০৯, '১০-'১১, ’১৩- তিনটা অ্যাশেজ টানা ইংল্যান্ড জিতেছে। যেই অস্ট্রেলিয়া ১৯৮৮-৮৯ থেকে ১৮ বছর অ্যাশেজটা নিজেদের কাছে রেখেছিলো সেই অস্ট্রেলিয়ার হাতে অ্যাশেজ নেই তিন সিরিজ ধরে। লেখার প্রথমেই আধুনিক ক্রিকেটের বিষ্ময়ের কথা উল্লেখ করেছিলাম। এটিও কিন্তু কম বিষ্ময় নয়।

     

    ইতিহাসে প্রথমবারের মতো 'ব্যাক টু ব্যাক' অ্যাশেজ হলো ২০১৩-১৪ সালে। ২০১৫ এর বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করেই এই ব্যবস্থা। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অ্যাশেজ। ফিরিয়ে আনতে হবে ভষ্মধার! আক্ষরিক অর্থেই গোঁফে তা দিতে থাকলেন মিচেল জনসন। বড় গোঁফে ভয়ংকর হয়ে ২০১৩-১৪'র সিরিজটা একেবারেই নিজের করে নিয়েছিলেন জনসন।

     

    বিধ্বংসী মিচেল জনসন

     

    এই সিরিজের প্রতি ম্যাচের গল্প ইংল্যান্ডের অসহায় আত্মসমর্পনের গল্প। টানা বাউন্স আর আগ্রাসী মনোভাব দিয়ে পুরো ইংল্যান্ড দলকে কাঁপিয়েছিলেন মিচেল জনসন। সাথে যোগ্য সঙ্গী ছিলেন রায়ান হ্যারিস। সিরিজে এই দুইজনের মিলিত উইকেট সংখ্যা ৫৯! জনসনের ৩৭ আর হ্যারিসের ২২।

     

    ১৯২০-২১ সালে আর্মস্ট্রংয়ের অস্ট্রেলিয়া প্রথমবারের মতো অ্যাশেজে হোয়াইটওয়াশ করার স্বাদ পেয়েছিলো। এরপর পেয়েছিলো পন্টিংয়ের ২০০৬-০৭ সালের অস্ট্রেলিয়া। তৃতীয়বারের মতো ২০১৩-১৪ সালে ৫-০ ব্যবধানে অ্যাশেজ জিতলো ক্লার্কের অস্ট্রেলিয়া। ৭ বছর পরে অ্যাশেজ আসলো অসিদের ঘরে।

     

    তবে সিরিজের একটা উল্লেখযোগ্য দিক ছিল প্রথম টেস্টের পরেই জোনাথন ট্রটের বিষাদজনিত অবসর। মার্কাস ট্রেসকোথিক যে রোগে টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছিলেন সেই একই মানসিক বিষাদ রোগে ট্রট অবসর নিলেন ক্রিকেট থেকে। মিচেল জনসনের বাউন্সার থেকেই এর সূত্রপাত বলে বিশ্বাস করেন অনেকে।

     

    এরও আগে প্রথম টেস্টেই মাইকেল ক্লার্ক বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তারা আক্ষরিক অর্থেই এই সিরিজে ইংল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে দিতেই নেমেছেন। শেষ ব্যাটসম্যান অ্যান্ডারসন ব্যাটিংয়ে নামতেই ক্লার্ক বলে বসলেন, “গেট রেডি ফর দ্য **কিং ব্রোকেন আর্ম”!!

     

    জনসন অ্যান্ডারসনের হাত ভাঙতে পারেননি। তবে তৃতীয় টেস্টেই ব্রডের আঙুল ভেঙে দিলেন এক নিখুঁত ইয়র্কারে। ২০১৩ অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে ট্রেন্টব্রিজে ব্রড আউট হবার পরেও হাঁটেননি বলে উপহাস করেছিলো অসিরা। এখন ব্রডকে সত্যিকার অর্থেই হাঁটতে না পারবার ব্যবস্থা করে দিলো অস্ট্রেলিয়া।

     

    তৃতীয় টেস্ট জয়ের পরে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাশেজ ফিরে পাওয়ার উদযাপন যেন ছাড়িয়ে গেল সবকিছুকেই। বিশ্বকাপের চেয়েও এই ট্রফিটি ফিরে পাবার জন্য ব্যাকুল ছিল অনেক অস্ট্রেলীয়।

     

     

    এর পরের দুই টেস্টে বিজ্ঞাপন বলতে জর্জ বেইলির এক ওভারের সর্বোচ্চ ২৮ রানের বিশ্বরেকর্ড আর সাধারণ এক লেগ স্পিনার স্টিভেন স্মিথের ধীরে ধীরে পরিপূর্ণ টেস্ট ব্যাটসম্যান হবার গল্প। জনসন, হ্যারিস, সিডল ত্রিমূর্তির গল্প করতে গিয়ে ব্যাটসম্যানেরা বাদ পড়ে গেলেন। নাহলে সিরিজে ডেভিড ওয়ার্নারের ৫২৩ রান আর বুড়ো হাড়ের ভেল্কি দেখানো দুই 'বুড়ো' ব্র্যাড হ্যাডিন আর ক্রিস রজার্সের আশ্চর্য ধারাবাহিকতাও এই সিরিজের বড় বিজ্ঞাপন। যাই হোক, শেষ পর্যন্ত ৫-০ তে জিতে মধুর প্রতিশোধই নিলো অস্ট্রেলিয়া।