• লা লিগা
  • " />

     

    ফিরেই বার্সাকে জেতালেন মেসি

    ফিরেই বার্সাকে জেতালেন মেসি    

    গত সপ্তাহে সেভিয়ার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথন লেগে বিশ্রামে ছিলেন তিনি। ফলাফল? ২-০ গোলে বার্সেলোনার পরাজয়। কাতালানদের অধিনায়ক লিওনেল মেসি আজ ফিরলেন। ফিরেই গোল করলেন, করালেনও। অধিনায়কের নৈপুণ্যে জিরোনাকে ২-০ গোলে হারিয়ে টেবিলের শীর্ষস্থানটা আরও সুসংহত করল বার্সা। আজকে গোল করে লা লিগায় নিজেদেরই গড়া 'অ্যাওয়ে' ম্যাচে টানা গোলের রেকর্ডে (৩২) ভাগ বসাল এর্নেস্তো ভালভার্দের দল। ২১ ম্যাচে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই থাকল বার্সা।

     

     

     

     

    সেভিয়ার বিপক্ষে মেসিকে ছাড়া বেশ বিবর্ণই ছিল বার্সা। আজ মূল একাদশে ফিরেই নিজের উপস্থিতি জানান দিলেন কাতালানদের অধিনায়ক। নিচে নেমে মাঝমাঠে বা আক্রমণে- দুই প্রান্তেই সমান উজ্জ্বল ছিলেন মেসি। প্রথম গোলটাও এসেছিল তার পাস থেকেই। ৯ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল কেড়ে নিয়ে জিরোনা দুজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে সামনে পাস বাড়ান মেসি। ডিফেন্ডার পেদ্রো আলকালার ভুলে ডিবক্সে বল পেয়ে যান বার্সা রাইটব্যাক নেলসন সেমেদো। ডানপায়ের জোরাল শটে গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনুকে পরাস্ত করেন পর্তুগিজ ডিফেন্ডার। ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়েও হাল ছাড়েনি জিরোনা। উল্টো ১৩ মিনিটে আলকালা বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টার স্টেগানকে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হওয়ায় সমতায় ফিরতে পারেনি তারা। আলকালার মতই সহজ সুযোগ মিস করেছেন ফিলিপ কুতিনিয়োও। ১৮ মিনিটে বোনুকে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হয়েছেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার।

     

     

     

    গোল মিসে ঠাসা এক প্রথমার্ধে পরের সুযোগটা হাতছাড়া করেন লুইস সুয়ারেজ। ২৮ মিনিটে ডিবক্সের ভেতর থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। মিসের মত প্রথমার্ধে অভাব ছিল না বিতর্কেরও। ৩৬ মিনিটে ক্রিশ্চিয়ান স্তুয়ানিকে জেরার্ড পিকে ডিবক্সে ফেলে দিলেও পেনাল্টির বাঁশি দেননি রেফারি। সুয়ারেজ-কুতিনিয়োদের মিসের কড়া মাশুলই দিতে হত বার্সাকে। কিন্তু এ যাত্রায় বার্সাকে বাঁচিয়েছেন সেই পিকেই। ৪৩ মিনিটে স্তুয়ানির শট ফিরিয়ে দেন টার স্টেগান। ফিরতি বলে পন্সের শট লাইন থেকে ফিরিয়ে দেন পিকে। গোললাইন প্রযুক্তি এবং পিকের দক্ষতার কাছে হার মানে জিরোনা।

     

     

    দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বার্সাক কাঁপিয়ে দিয়েছিল জিরোনা। ৫০ মিনিটে স্তুয়ানির শট টার স্টেগানের হাতে লেগে প্রতিহত হয় বার্সার বারপোস্টে। কিন্তু এর মিনিটখানেক পরই পাল্টে যায় সব হিসাবনিকাশ। ৫১ মিনিটে সুয়ারেজকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন এস্পিনোজা। দশজনের দলে পরিণত হয়েও হাল ছাড়েনি জিরোনা।  আক্রমণ-পালটা আক্রমণে জমে উঠে দ্বিতীয়ার্ধে জিরোনার সেরা সুযোগ গুলো পেয়েছিলেন স্তুয়ানিই, কিন্তু টার স্টেগানকে আর পরাস্ত করা হয়নি উরুগুয়ের স্ট্রাইকারের। দ্বিতীয়ার্ধের প্রায় পুরোটা সময় প্রতি-আক্রমণে খেলা বার্সাও সুযোগ কম পায়নি। ৫৮ মিনিটে দুর্দান্ত এক প্রতি-আক্রমণে মেসির পাস থেকে বোনুকে একা পেয়ে যান সুয়ারেজ, কিন্তু এবারও খালি হাতে ফিরতে হয় 'এল পিস্তোলেরো'কে। প্রথম গোলটা বানিয়েছিলেন তিনিই। সতীর্থদের মিসের মহড়ায় গোল করার দায়িত্বও নিজ কাঁধে তুলে নেন মেসি।

    সফলও হন তাতে। ৬৮ মিনিটে জর্দি আলবার পাস থেকে বোনুকে পরাস্ত করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মেসি। বার্সার হয়ে খেলা ৪২ প্রতিপক্ষের মধ্যে ৩৬টি দলের মাঠেই গোল করলেন মেসি। এই গোলটিই যেন জিরোনার কফিনে হয়ে থাকল শেষ পেরেক। ম্যাচের বাকিটা সময় আর খুঁজেই পাওয়া যায়নি স্তুয়ানিদের। গোল করার চেয়ে গোল না খাওয়ার দিকেই যেন বেশি নজর দিয়েছিল তারা। ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েও ৫-৪-১ ফর্মেশনে খেলা যেন তা-ই প্রমাণ করে। বার্সারও অসুবিধা হয়নি তেমন একটা। শেষদিকে পিকের হেড বারপোস্টে প্রতিহত না হলে হয়ত ব্যবধান আরও বড় হতে পারত। শেষ পর্যন্ত আরও এক মেসিময় ম্যাচে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়ল এর্নেস্তো ভালভার্দের দল।