কেন লা লিগায় গোললাইন প্রযুক্তি নেই?
আবারও এল ক্লাসিকোতে রেফারিং বিতর্ক, এবার আলোচনায় গোল লাইন প্রযুক্তি। প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে, অন্য সব লিগে এই প্রযুক্তি থাকলেও কেন লা লিগায় নেই?
বিতর্কটা হয়েছে রোববারের ক্লাসিকোর ৩০ মিনিটে। কর্নার থেকে কাছের পোস্টে ফ্লিক করেছিলেন বার্সার লামিন ইয়ামাল। বলটা জালে জড়িয়ে যাওয়ার আগে কোনোমতে ক্লিয়ার করেন রিয়াল কিপার লুনিন। বার্সা ফুটবলারদের দাবি, বল লাইন অতিক্রম করেছে। দুইটি অ্যাঙ্গেল থেকে বার বার রিপ্লে দেখেও ভিএআর কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত গোলটা বহাল থাকেনি, ম্যাচটা পরে রিয়াল জেতে ৩-২ গোলে।
ম্যাচ শেষে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে বার্সা। জাভি বলেছেন, রেফারিং নিয়ে তিনি কিছু বলতে চান না। বিশ্বের অন্যতম সেরা লিগ হওয়ার পরেও লা লিগায় গোল লাইন প্রযুক্তি নেই এই প্রশ্ন তুলেছেন। বার্সা কিপার মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেনও একই রকম ক্ষুব্ধ। তিনিও জাভির মতো এই প্রযুক্তি ব্যবহার না করার কারণ নিয়ে তুলেছেন প্রশ্ন। কিন্তু আসলেই লা লিগায় এই প্রযুক্তি নেই কেন? ভিএআর কি গোললাইন প্রযুক্তির কাজ করতে পারে না?
কালকের সিদ্ধান্তটা ভিএআর বার বার দেখেও গোল হওয়ার পক্ষে স্পষ্ট কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। পরে স্প্যানিশ মিডিয়া কানাল প্লাস বলেছে, ইয়ামালের ফ্লিক লাইন অতিক্রম করেনি। কিন্তু গোললাইন প্রযুক্তি না থাকলে নিশ্চিত করে কিছুই বলা সম্ভব নয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, গোললাইন প্রযুক্তি কীভাবে বলতে পারে বল লাইন অতিক্রম করেছে কি না। এই প্রযুক্তিতে মাঠে বেশ কিছু হাই স্পিড ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। সেখান থেকে বলের একটা ত্রিমাত্রিক ছবি পাওয়া যায়। যেটা বলে দেয় বল পুরোপুরি লাইন অতিক্রম করেছে কি না।
মূলত ২০১০ বিশ্বকাপে ফ্র্যাংক ল্যাম্পার্ডের গোলের সেই ঘটনার পর গোললাইন প্রযুক্তির ব্যবহার সামনে উঠে আসে। শীর্ষ লিগের মধ্যে ২০১৪ সালে প্রিমিয়ার লিগ প্রথম এই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করে। পরের বছর বুন্দেসলিগা, ফ্রেঞ্চ লিগ, সিরি আ ও ডাচ লিগেও এই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়। চালু হয়েছে বিশ্বকাপ, ইউরো বা অন্য সব বড় টুর্নামেন্টেও।
কিন্তু লা লিগায় এটা চালু হয়নি। ২০২৩ সালে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য লা লিগা সভাপতি হাভিয়ের তেবাসকে আবারও প্রস্তাব দেওয়া হয়। সম্ভাব্য খরচের অংক ৩২ লাখ ডলার। কিন্তু তেবাস রাজি হননি। কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, এই প্রযুক্তি ব্যবহার হয় খুবই কম। তাই এতো টাকা দিয়ে এটা ব্যবহারের কোনো যৌক্তিকতা নেই। যদিও এই মৌসুমেই লা লিগায় চার বার এই প্রযুক্তি নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। সেল্টা ভিগর ম্যাচে জোনাথন বাম্বার গোল বাতিলের পর সেল্টার তখনকার কোচ রাফায়েল বেনিতেজ এটা নিয়ে বিস্ময়ও প্রকাশ করেছিলেন।
কোপা দেল রের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সোসিয়েদাদের কিরেন টিয়ের্নির গোল নিয়েও ওঠে বিতর্ক। শেষ পর্যন্ত সেই ম্যাচটা জেতে মায়োর্কা। এবার ক্লাসিকোর পর আবারও তেবাসের দিকে আঙুল ওঠে। কিন্তু লা লিগা সভাপতি টুইট করে গোল লাইন প্রযুক্তির দুর্বলতা নিয়ে কিছু ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘নো কমেন্টস।’
কিন্তু ক্লাসিকোর কেলেংকারির পর কতিদিন লা লিগা গোল লাইন প্রযুক্তি ব্যবহার না করে থাকতে পারবে সেটাই এখন প্রশ্ন