• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    ইউনাইটেডকে সরিয়ে চারে আর্সেনাল

    ইউনাইটেডকে সরিয়ে চারে আর্সেনাল    

    ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আর আর্সেনালের অবস্থা ছিল অনেকটাই স্যান্ডউইচের মতো। পয়েন্ট টেবিলের চারে ছিল ইউনাইটেড, পাঁচে আর্সেনাল। তিন আর ছয়ে থাকা টটেনহাম আর চেলসি এই সপ্তাহে পয়েন্ট হারানোয় এই ম্যাচের গুরুত্ব হয়ে গিয়েছিল দ্বিগুণ। শেষ ম্যাচটা দুইদলই খেলেছিল ফ্রান্সে, তাতে এই দুইদলের ভাগ্য গেছে দুইরকম। ইউনাইটেড কাব্যিক জয়ের পর ছিল আত্মবিশ্বাসে ভরপুর, আর আর্সেনাল বাজেভাবে হেরে নিজেরাই ছিল চাপে। কিন্তু প্রিমিয়ার লিগে ইউনাইটেডকে হারিয়ে সেটা পুষিয়ে নিল আর্সেনাল। এমিরেটসে ইউনাইটেডকে ২-০ গোলে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের চারে উঠে গেছে উনাই এমেরির দল।

    ওলে গানার সোলশারের কপালে তাই জুটেছে প্রিমিয়ার লিগে প্রথম হার। টানা ৯ অ্যাওয়ে ম্যাচ জেতার পর পার্ফেক্ট টেনের রেকর্ডটাও গড়া হয়নি তার। তবে স্কোরলাইন দেখে যেমন একপেশে মনে হতে পারে ম্যাচটা, হয়েছে তার উলটোটা। দুই ম্যানেজারই আক্রমণাত্মক দল নামিয়েছিলেন। আর্সেনালের হয়ে একাদশে একসঙ্গে শুরু করেছিলেন ওজিল, লাকাজেত আর অবামেয়াং। প্রথমার্ধে দুইদলই খেলেছে প্রত্যাশামতো। আক্রমণ আর পালটা আক্রমণে উপভোগ্য হয়ে ওঠা ম্যাচে ১২ মিনিটে গ্রানিত শাকার ১৮ গজ দূর থেকে করা শটে এগিয়ে যায় আর্সেনাল। ডেভিড ডি গিয়া আগেই সরে গিয়েছিলেন অনেকটা। শাকার শটে তেমন জোর না থাকলেও বল দিক পরিবর্তন করায় তাকিয়ে তাকিয়ে গোল হজম করা ছাড়া আর কোন সুযোগই ছিল না ইউনাইটেডের গোলরক্ষকের।

    শাকার গোলে অন্যপ্রান্তে আফসোস বেড়েছে রোমেলু লুকাকুর। এর দুই মিনিট আগে সুযোগ কাজে লাগালে হয়ত ম্যাচের গল্পটাই বদলে দিতে পারতেন তিনি। ৯ মিনিটে লুক শর দারুণ একটি ক্রস গোলে পরিণত করতে পারেননি লুকাকু। ক্রসবারে লেগে ফিরে এসেছে তার চেষ্টা। বারপোস্ট পিছু ছাড়েনি ফ্রেডেরও। মিনিট দশেক পর ডিবক্সের বাইরে থেকে ফ্রেডের শট আটকে যায় গোলের ফ্রেমে। তাই বাঁধিয়ে রাখার মতো ছবিটাও আর পাওয়া হয়নি ফ্রেডের।

    ইউনাইটেডের আক্রমণের মাঝে সময়ে সময়েও আর্সেনালও ভয় দেখিয়ে গেছে ইউনাইটেডের রক্ষণকে। আলেক্সান্ডার লাকাতেজ আর অ্যারন রামসে দুইজনই শট করেছিলেন ভালো জায়গা থেকে। প্রথমজনের শট ব্লকড আর পরের জন গোল পাননি দিক নিশানাহীন শট করে। তবে বিরতির সময় তাতে আর্সেনালকে আর খুব বেশি আফসোস করতে হয়নি, যতটা করতে হয়েছে লুকাকুদের। এর মধ্যে একবার মার্কস র‍্যাশফোর্ড পেনাল্টির আবেদনও তুলেছিলেন লুকাকুর ক্রস থেকে গোল করার চেষ্টা করতে গিয়ে। গোল বা পেনাল্টি কোনোটাই পাননি র‍্যাশফোর্ড।

    দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য প্রথমার্ধের মার মার কাট কাট খেলায় ছেদ পড়ে কিছুটা। তাতে আর্সেনালেরই লাভ হয়েছে বেশি। র‍্যাশফোর্ডের একটি ফ্রিকিক মোটেই ভোগায়নি বার্নড লেনোকে। আর্সেনালের জার্মান গোলরক্ষক অবশ্য অন্যপ্রান্তের ডি গিয়ার চেয়ে নিজেকে আজ ভালো দাবি করতেই পারেন। এক মুহুর্তের জন্যও তো ভুল করেননি তিনি।

    কিন্তু ৬৭ মিনিটে আসলে ভুল যে করলেন সেটাই থেকে গেল অজানা। লাকাজেত বল নিয়ে ঢুকে গিয়েছিলেন ইউনাইটেডের ডিবক্সের ভেতর। ফ্রেড ছিলেন তার পেছনেই, লাকাজেতকে সেভাবেই ট্যাকেলও করেননি তিনি। কিন্তু রেফারির কাছে সেটাই যথেষ্ট মনে হলো পেনাল্টির বাঁশি বাজানোর জন্য। পরে পিয়ের এমেরিক অবামেয়াং ডি গিয়াকে আরও একবার ভুলদিকে পাঠিয়ে দুই গোলের লিড এনে দেন গানারদের।

     

     

    ওই গোলেই আসলে একরকম ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল। মিনিট তিনেক পর ভিক্টর লিন্ডেলফের ভুল ইউনাইটেডের হারের ব্যবধান বাড়াতে পারত, কিন্তু লাকাজেত সুযোগ নষ্ট করেছেন। শেষের ২০ মিনিটে মাঠে নেমে অ্যান্থনি মার্শিয়ালও আর তেমন কিছুই করতে পারেননি। তুমুল বৃষ্টিতে ঝাপসা হয়ে আসা এমিরেটসে তাই প্যারিস জয়ের আনন্দটা খানিকটা ভাটা পড়েছে সোলশারের দলের।