• বাংলাদেশ-আফগানিস্তান-জিম্বাবুয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ
  • " />

     

    জাদরান-নবির ঝড়ের পর আফগান বোলারদের বাধা পেরুতে পারলো না জিম্বাবুয়ে

    জাদরান-নবির ঝড়ের পর আফগান বোলারদের বাধা পেরুতে পারলো না জিম্বাবুয়ে    

    আফগানিস্তান ১৯৭/৫, ২০ ওভার 
    জিম্বাবুয়ে ১৬৯/৭, ২০ ওভার 
    আফগানিস্তান ২৮ রানে জয়ী 


    নাজিবুল্লাহ জাদরান ও মোহাম্মদ নবির শেষের দিকে ঝড়ের পর বোলারদের সমন্বিত পারফরম্যান্সে ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পেয়ছে আফগানিস্তান। ১৯৮ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় শেষদিকে রেজিস চাকাভার ২২ বলে ৪২ রানের ঝড়ো ইনিংস, মাদজিভা ও জারভিসের সঙ্গে তার যথাক্রমে ৪৫ ও ২৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি সান্ত্বনাই হয়ে থেকেছে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ হারা জিম্বাবুয়ের জন্য।

    টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে শুরুতে গুরবাজের তোপে পড়েছিল জিম্বাবুয়ে। হজরতউল্লাহ জাজাই ছিলেন দর্শক, প্রথম ৪ ওভারেই আফগানিস্তান তুলেছিল ৪১ রান। ৫ম ওভারে শেন উইলিয়ামস এসে প্রথম বলেই জাজাইয়ের হাতে খেলেন ছয়, এরপর করলেন প্রত্যাবর্তন, পরের ৫ বলে মাত্র ২ রান দিয়ে। সে চাপেই প্রথম ব্রেকথ্রু পেল জিম্বাবুয়ে, পরের জোভারে চাতারাকে হোয়্যাক করতে গিয়ে লিডিং-এজড হয়ে কাভারে উইলিয়ামসের হাতেই ধরা পড়েছেন জাজাই। 

    এরপর উইলিয়ামস দুইবার সফল হয়েছেন, জাজাইয়ের উইকেটের পর স্তিমিত হয়ে পড়া গুরবাজ হয়েছেন এলবিডব্লিউ, রিভিউ নিলেও উইকেটে ছিল আম্পায়ারস কল। নাজিবুল্লাহ তারাকাই কাট করতে গিয়ে ব্যাটের টো-এন্ডে লেগে ধরা পড়েছেন এক্সট্রা কাভারে। 

    গিয়ার বদলানোর চেষ্টা করেছিলেন আসগর, নদলোভুকে কাউ কর্নার দিয়ে ছয়ের পরের বলে আবার এগেইন্সট দ্য টার্নে তুলে মারতে গিয়ে লং-অনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। আসগর ফিরলেও ঝড় ধরে রেখেছেন জাদরান, সে ওভারেই উঠেছিল ১৭ রান। 

    মাদজিভার করা পরের ওভারে বাউন্ডারি হয়নি, তবে সেটি ছিল যেন ঝড়ের আগে শান্ত পরিবেশ। জারভিসকে চারের পর ছয় মারলেন জাদরান, পরের ওভারের শেষ ৪ বলে চাতারাকে টানা চার ছয় মারলেন নবি। সে ওভারে সব মিলিয়ে উঠেছে ২৬ রান। 

    মাদজিভাকে এরপর মাঠের বাইরে পাঠানো শুরু করলেন জাদরান, একটি ছয় তো গেল ইস্ট গ্যালারির ২য় তলায়ও। টানা সাত ছয়ের পর হলো একটি ওয়াইড, এরপর চার মেরে ফিফটি পূর্ণ হলো জাদরানের, মাত্র ২২ বলে। শেষ ওভারে নবির উইকেটসহ উঠেছে মাত্র ৮ রান, তবে জিম্বাবুয়ের যা ক্ষতি তা হয়ে গেছে আগেই।  

    ১৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ৪র্থ উইকেট যাওয়ার পর জাদরান ও নবি পরের ৪০ বলে তুলেছেন ১০৭ রান, মাঝে দুই ওভার মিলিয়ে ৭ বলে হয়েছে টানা ৭টি ছয়। নবি শেষ বলে আউট হওয়ার আগে করেছেন ১৮ বলে ৩৮, জাদরান অপরাজিত ছিলেন ৩০ বলে ৬৯ রানে। এর আগে অভিষিক্ত ওপেনার গুরবাজ ২৪ বলে করেছেন ৪৩ রান। 


    রানতাড়ায় জিম্বাবুয়ের যাওয়া-আসার শুরুটা হয়েছিল মাসাকাদজাকে দিয়ে, সিঙ্গেল চুরি করতে গিয়ে প্রথমে ইতস্তত করেছিলেন তিনি, উইকেটকিপার সরাসরি স্টাম্প ভেঙেছেন নন-স্ট্রাইক প্রান্তে। প্রথম দুই ওভারে খরুচে মুজিবকে সরিয়ে পেসার আনলেন এরপর রশিদ খান, সফলও হলেন ফারিদ।  

    তিনি এক্সট্রা বাউন্স পাচ্ছিলেন, শর্ট বলেই নিয়েছেন দুই উইকেট। প্রথমে জায়গা বানিয়ে হুক করতে গিয়ে মিসহিট টেইলরের, ধরা পড়েছেন শর্ট মিডউইকেটে, ৩০ রানে ২য় উইকেট হারিয়েছে আফগানিস্তান। এরপর বাড়তি বাউন্সের সঙ্গে হালকা মুভমেন্টে কাট করতে গিয়ে খোঁচা দিয়েছেন উইলিয়ামস, বোলিংয়ে দারুণ দিন কাটানোর পর ব্যাটিংয়ে ফিরেছেন শূন্যতেই। এরভিনও শিকার পেসারের, এবার জানাতের ফুললেংথের বলে স্কুপ মিস করে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়েছেন তিনি।

    আগের দিন ব্যাটিংয়ে দারুণ দিন কাটানো রায়ান বার্লের সঙ্গে মুতোমবদজির জুটি টিকিয়ে রেখেছিল জিম্বাবুয়েকে। তাদের ৩৭ রানের জুটিতে। রশিদকে এগেইন্সট দ্য টার্নে স্লগ করতে গিয়ে ওয়াইড লং-অনে ক্যাচ দিয়েছেন এরপর মুতোমবদজি, ২১ বলে ২০ রান করে।

    আগের দিনের মতো বিরুদ্ধস্রোতে হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বার্ল, রশিদের পর মুজিবকে স্লগ করে ডিপ মিডউইকেট ও ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে ছয় মেরে। রিভিউ নিয়ে এলবিডব্লিউর হাত থেকেও বাঁচলেন বল লেগস্টাম্পের বাইরে পড়ায়, তবে শেষ পর্যন্ত খন্ডযুদ্ধে জিতলেন রশিদই। তার লেগস্পিনে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে স্টাম্পে বল ডেকে এনেছেন বার্ল। 

    বার্লের মতো বেঁচেছিলেন মাদজিভাও, রশিদের সে ওভারেই, এবার ইমপ্যাক্ট ছিল বাইরে। অবশেষে গুলবাদিনের বলে ক্যাচ দিয়ে তিনি ফিরেছেন, এর আগে দর্শক ছিলেন চাকাভার মিনি-শোয়ের। 

    জানাতকে রিভার্স হিটে ছয়ের পর স্কুপ করে চার, শেষ বলে ফুলটসে ছয় মেরে সে ওভারে তুলেছিলেন ১৯ রান। পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন কাইল জারভিসও, তবে জিম্বাবুয়েকে পার করানোর অসম্ভব লক্ষ্যটা পূরণ হয়নি তাদের।