নেট সেশন : জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার লড়াই বাংলাদেশের
ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ, ৪র্থ ম্যাচ
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে
কবে, কখন
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.৩০ (১৮৩০)
আফগানিস্তান যদি লিটমাস টেস্ট হয়, তাহলে দুই দলই ব্যর্থ সেখানে। ত্রিদেশীয় সিরিজে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে দুই দলই। দুইবারই প্রথমে ব্যাটিং করেছে আফগানিস্তান, তাদেরকে চাপে ফেলেও সেটা ধরে রাখতে পারেনি প্রতিপক্ষ। মোহাম্মদ নবি অংশ ছিলেন দুইটি জুটির-- জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নাজিবুল্লাহ জাদরান ও বাংলাদেশের বিপক্ষে আসগর আফগানের সঙ্গে-- যে দুই জুটিই কার্যত ছিটকে দিয়েছে প্রতিপক্ষকে।
চট্টগ্রাম-লেগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটা তাই বাংলাদেশের জন্য আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার। এবং অবশ্যই ফাইনালের পথে এগিয়ে যাওয়ার। জিম্বাবুয়ের ফাইনালের আশা অবশ্য শেষ হয়ে যায়নি এখনও, তবে এ ম্যাচে জয়টা মোটামুটি আবশ্যিক তাদের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারা বাংলাদেশকে কি তারা চেপে ধরতে পারবে?
সেজন্য অবশ্যই সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা টপ-অর্ডারের দিকে নজর দিতে হবে জিম্বাবুয়ের। প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশ ৪ উইকেট হারিয়েছে যথাক্রমে ২৯ ও ৩২ রানে। এ ৮ উইকেটের ৬টিই আবার নিয়েছেন প্রতিপক্ষর পেসাররা, জিম্বাবুয়ে বাংলাদেশের শুরুর ৪ উইকেট নিয়েছিল পেসারদের বদৌলতেই।
অবশ্য প্রথম ম্যাচে চেপে ধরেও বাংলাদেশকে ধরে রাখতে পারেনি জিম্বাবুয়ে, আফিফ হোসেনের দারুণ এক ইনিংস ও মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে তার জুটিতে। ফাইনালের লড়াইয়ে টিকে থাকতে এবার এমন পাওয়া সুযোগ কাজে লাগানোর বিকল্প নেই জিম্বাবুয়ের। বাংলাদেশের অবস্থা তাই পুরো বিপরীত-- যতটা কম সম্ভব জিম্বাবুয়েকে সুযোগ দেওয়া।
তবে আত্মবিশ্বাসের তলানিতে থাকা বাংলাদেশ কি পারবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ‘মারণাস্ত্র’ বের করে আনতে?
রঙ্গমঞ্চ
জহুর আহমেদ চৌধুরি ক্রিকেট স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম
২০১৪ সালে ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টির পর এ মাঠে আর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি হয়নি। বাংলাদেশ এ মাঠে শেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছে সে টুর্নামেন্টেই, হংকংয়ের বিপক্ষে সে ম্যাচে হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। কদিন আগেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টটা এ মাঠেই হেরে গেছে বাংলাদেশ, সে ম্যাচে বৃষ্টি বাগড়া বাধিয়েছিল বেশ। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ম্যাচের দিন অবশ্য বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই তেমন।
যাদের ওপর চোখ
মুশফিকুর রহিম
আগের ম্যাচে ক্যারিয়ারে প্রথমবার টি-টোয়েন্টিতে ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন মুশফিক, টিম ম্যানেজমেন্টের চাওয়া অনুযায়ী টপ-অর্ডারে অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে। সেটা কাজে লাগেনি, উইকেটকিপিংয়েও সময়টা সুবিধার যাচ্ছে না মুশফিকের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচে পারবেন আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে?
শন উইলিয়ামস
আফগানিস্তানের বিপক্ষে বোলিংয়ে ছিলেন দুর্দান্ত, যে সময়টুকুতে জিম্বাবুয়ে ম্যাচে এগিয়ে ছিল, মূলত তার বোলিংয়ের কারণেই। বাংলাদেশের বিপক্ষে অবশ্য সুবিধা করতে পারেননি খুব একটা, আর ব্যাটিংয়ে দুই ম্যাচেই হয়েছেন ব্যর্থ। এবার নিজেকে ফিরে পাবেন তিনি?
সম্ভাব্য একাদশ
তৃতীয় ম্যাচের আগে বাংলাদেশ স্কোয়াডে এসেছে বেশ কিছু পরিবর্তন, নির্দিষ্ট করে বলতে পাঁচটি। সৌম্য সরকার বাদ পড়েছেন, তার জায়গায় অভিষেক হয়ে যেতে পারে ওপেনার নাঈম শেখের। স্কোয়াডে ডাকা হয়েছে লেগস্পিনিং অলরাউন্ডার আমিনুল ইসলামকেও, সাব্বির রহমানের জায়গা নিতে পারেন তিনি।
বাংলাদেশ
লিটন দাস, নাঈম শেখ, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন, আফিফ হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, আমিনুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, তাইজুল ইসলাম
জিম্বাবুয়ে
হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, ব্রেন্ডন টেইলর, ক্রেইগ এরভিন, শেন উইলিয়ামস, টিনোটেনডা মুতোমবদজি, রায়ান বার্ল, রেজিস চাকভা, নেভিল মাদজিভা, কাইল জারভিস, এইনলে নদলভু, টেনডাই চাতারা
সংখ্যার খেলা
- ১- আর ১ উইকেট হলে টি-টোয়েন্টিতে ৫০ উইকেট হবে মোস্তাফিজের
- ২- শেষ ৫ ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ
তারা বলেন
অবশ্যই ওদের দলে বড় কিছু নাম আছে। তবে বোলিংয়ের সময় কোনো নামকে বোলিং করি না আমরা, নিজেদের পরিকল্পনা অনুসরণ করে সেটিকে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করি। অবশ্যই বাউন্ডারি না দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। ওদের মতো ক্রিকেটারের বিপক্ষে ফিল্ডিং দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। ওদেরকে যদি বাউন্ডারি থেকে বিরত রাখা যায়, তাহলে চাপ সৃষ্টি হয়। আমি জানি ওরা শট খেলতে পছন্দ করে, জানি ওরা আমাদের আগ্রাসী ভাবে খেলতে চেষ্টা করতে। চ্যালেঞ্জটি তাই হবে দুর্দান্ত।
শন উইলিয়ামস, জিম্বাবুয়ে
ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাস স্বাভাবিকভাবে যখন রান না করে তখন দুর্বল থাকে। আসলে আমরা ম্যাচটা হেরেছি (আফগানিস্তানের বিপক্ষে) হয়ত ২০ রানের মতো ব্যবধানে। আসলে আত্মবিশ্বাস নিচের দিকে থাকার পরও যদি আমরা ২০ রানে হারি, তাহলে যদি আরেকটু হিসাব করে খেলতে পারি, তাহলে আমাদের জন্য ভাল।
মোসাদ্দেক হোসেন, বাংলাদেশ