• লা লিগা
  • " />

     

    দুই ব্রাজিলিয়ানের গোলে জিতল রিয়াল

    দুই ব্রাজিলিয়ানের গোলে জিতল রিয়াল    

    মাত্র ১৭ বছর বয়সে তাকে দলে ভেড়াতে ৪৫ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। এক বছর সান্তোসে কাটিয়ে এই মৌসুমেই রিয়ালের স্কোয়াডে যোগ দিয়েছিলেন তরুণ ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার রদ্রিগো, ওসাসুনার বিপক্ষে রিয়ালের হয়ে নামলেন প্রথমবারের মত। রদ্রিগো যেন এলেন, দেখলেন, এবং জয় করলেন। নামার এক মিনিটের মধ্যেই গোল করে অভিষেকটা স্মরণীয় করে রাখলেন তিনি। ওসাসুনাকে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ২-০ গোলে হারিয়েছে রিয়াল। আগামী সপ্তাহে মাদ্রিদ ডার্বির মহড়াটা দারুণভাবেই সেরে নিল জিনেদিন জিদানের দল।

    ৭০ মিনিটের দিকে আরেক তরুণ ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে উঠিয়ে রদ্রিগোকে নামিয়ে দেন জিদান। নামার পরপরই প্রতি-আক্রমণে বল পায় রিয়াল। মাপা লম্বা পাসে রদ্রিগোকে খুঁজে নেন স্বদেশি কাসেমিরো। দুর্দান্তভাবে বল নিয়ন্ত্রণে এনে ডিবক্সে ঢুকেই নেওয়া শটে ওসাসুনা গোলরক্ষক রুবেনকে পরাস্ত করেন রদ্রিগো। ২০০২ সালে ফেনোমেনো রোনালদোর (৬২ সেকেন্ড) পর লা লিগায় রিয়ালের দ্রুততম গোলদাতা এখন রদ্রিগোই (৯৩ সেকেন্ড)। অভিষেকটা খুব সম্ভবত এর চেয়ে দারুণভাবে করতে পারতেন না রদ্রিগো। যার বদলি হয়ে নেমেছিলেন, সেই ভিনিসিয়াসই রিয়ালকে এনে দিয়েছিলেন লিড।

     

    হাঁটুর গুরুতর ইনজুরি থেকে ফেরার পর প্রথম গোল। স্বভাবতই আবেগাপ্লুত ভিনিসিয়াস

     

    হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের প্রথমার্ধে ওসাসুনার ৫-৪-১ ফর্মেশন ভাঙতে রীতিমত গলদঘর্ম হচ্ছিল রিয়ালের। প্রথমার্ধের শেষদিকে তাই দূরপাল্লার শটের শরণাপন্ন হয় রিয়াল; কাজও হয় তাতে। মাঝমাঠে বল কেড়ে নিয়ে ভিনিসিয়াসকে পাস বাড়ান টনি ক্রুস। ডিবক্সের বাইরে থেকে ডানপায়ের চমৎকার বাঁকানো শটে দলকে লিড এনে দেন ভিনিসিয়াস। গত মৌসুমে রিয়ালের 'গোবরে পদ্মফুল' ভিনিসিয়াস ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি শেষদিকে। ফেরার পর নিজের প্রথম গোল পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি, উদযাপনের সময়ই জার্সিতে মুখ লুকিয়ে কেঁদেছেন ভিনিসিয়াস।

    ১৯৯৬ সালে ভায়াদোলিদের বিপক্ষে একই ম্যাচে গোল পেয়েছিলেন ১৮ বছর বয়সী রাউল ও ১৯ বছর বয়সী গুতি। ২৩ বছর পর সেটারই পুনরাবৃত্তি ঘটালেন ১৯ বছর বয়সী ভিনিসিয়াস ও ১৮ বছর বয়সী রদ্রিগো। ভিনিসিয়াস, রদ্রিগোরা নিজেদের প্রমাণ করলেও রিয়ালের জার্সিতে প্রথমবারের মত মূল একাদশে সুযোগ পাওয়া ইয়োভিচ ব্যর্থ হয়েছেন নিজেকে প্রমাণ করতে। ১৮ মিনিটে রুবেনকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে লুকাস ভাজকেজের পাসে আবারও গোলরক্ষককে একা পেয়েও শট বাইরে মারেন সার্বিয়ান স্ট্রাইকার। ৬০ মিনিটে অবশ্য জাল খুঁজে পেয়েছিলেন, কিন্তু 'ভিএআর'-এ অফসাইডের কারণে বাতিল হয় গোল। শেষদিকেও কর্নারে মিলিতাওয়ের ফ্লিকে গোলের সামনে থেকে লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি তিনি।

     

    রদ্রিগোর গোল উদযাপনে ব্যস্ত রিয়ালের ফুটবলাররা

     

    ইয়োভিচ, ভিনিসিয়াসদের শুরু থেকেই খেলানোর অবশ্য কারণও ছিল জিদানের কাছে। সেভিয়ার বিপক্ষে দারুণ জয়ের দিন দুয়েক পরই ওসাসুনা ম্যাচ, আগামী সপ্তাহে আবার মাদ্রিদ ডার্বি- সব ভেবেই আজ রীতিমত 'বি' দলই নামিয়ে দিয়েছিলেন জিদান। সার্জিও রামোস, ক্রুস এবং কাসেমিরো বাদে সেভিয়া ম্যাচের একাদশের আর কেউই ছিলেন না ওসাসুনার বিপক্ষে। প্রায় অচেনা একাদশ নিয়ে প্রথমার্ধে বেশ হিমশিমই খেতে হয়েছে রিয়ালকে। রিয়ালের 'নতুন' একাদশের ফুটবলারদের মাঝে বোঝাপড়ার অভাবটা ছিল স্পষ্ট। 

    তবে শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে ফিরতে সমস্যা হয়নি রিয়ালের। ৬ ম্যাচ শেষে এখনও ২০১৯-২০ লা লিগায় অপরাজিত থাকল জিদানের দল। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আত্মবিশ্বাসটা তুঙ্গেই থাকার কথা রিয়ালের। লেগানেসের মাঠে অ্যাথলেটিক বিলবাও ড্র করায় ৬ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠে গেল 'লস ব্লাঙ্কোস'রা। ডার্বি মহড়া দারুণভাবে সেরেছে অ্যাটলেটিকোও। মায়োরকাকে ২-০ গোলে হারিয়ে ৬ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে রিয়ালের ঘাড়েই নিঃশ্বাস ফেলছে তারা। টেবিলের শীর্ষ দুই দল হওয়ায় ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে মৌসুমের প্রথম মাদ্রিদ ডার্বি আকর্ষণীয় হয়ে উঠল আরও।