• লা লিগা
  • " />

     

    বার্সাকে বাঁচিয়ে দিলেন রাকিটিচ

    বার্সাকে বাঁচিয়ে দিলেন রাকিটিচ    

    ফুলটাইম
    বার্সেলোনা ১-০ অ্যাথলেটিক বিলবাও


    আরেকটু হলেই ডুবতে বসেছিল বার্সেলোনা। লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজ, অ্যান্টোয়ান গ্রিযমান- কারও কাছেই নেই কোনো টোটকা। অমন নামী-দামী আক্রমণভাগও ভোঁতা হয়ে ছিল ম্যাচের বেশিরভাগটা সময়। সেখান থেকে বার্সাকে রক্ষা করেছেন ইভান রাকিটিচ। ৭১ মিনিটের রাকিটিচের একমাত্র গোলে ম্যাচ জিতে লা লিগার শিরোপা দৌড়ে নিজেদের টিকিয়ে রেখেছে বার্সেলোনা। আপাতত তারা উঠেছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষেও, তবে রিয়াল মাদ্রিদ রিয়াল মায়োর্কার বিপক্ষে জিতে গেলে আবারও হেড টু হেডে পিছিয়ে থেকে দুইয়ে নামতে হবে বার্সাকে। তবে তখনও বাকি থাকবে লিগের ৭ ম্যাচ। এই ৭ ম্যাচে তো  বদলে যেতে পারে অনেক কিছুই!


    রাকিটিচ গোলটা না পেলে অবশ্য অন্যভাবে বদলে যেত লা লিগার হিসাব-নিকাশ। সেটা মোটেই সুখকর হত না বার্সার জন্য। বদলি হয়ে মাঠে নামার পর মোটামুটি একক কৃতিত্বে বার্সার প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছেন রাকিটিচ। তাতে অবশ্য ভাগ্যও কাজ করেছে। বিলবাওয়ের বক্সের ঠিক বাইরে থেকে বল ছিনিয়ে নিয়েছিলেন রাকিটিচ। মেসি ছিলেন বক্সের ভেতর। জটলার ভেতর আচমকা বল পেয়ে মেসি আর ভুল করেননি। দারুণ এক টার্ন নিয়ে ফিরতি পাস এগিয়ে ছিলেন রাকিটিচকে। তিনি বল ছিনিয়ে মেসিকে পাস দেওয়ার পর আর দৌড় থামনি। গোলের ৮ গজ দূর থেকে গিয়ে করেছেন আড়াআড়ি শট, পেয়ে গেছেন গোল। লা লিগায় রাকিটিচের ৫০তম ওই গোলে পরে পার পেয়েছে বার্সেলোনা। 

    রাকিটিচ মাঠে নেমেছিলেন ৬৫ মিনিটে। এর আগ পর্যন্ত ন্যু ক্যাম্পেও বার্সেলোনা ছিল দিশেহারা। সেভিয়ার পর বিলবাওয়ের বিপক্ষে তাই পয়েন্ট হারানোর শঙ্কা জেগেছিল বার্সার। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য লড়াই করতে থাকা বিলবাওয়ের বিপক্ষে জয় যে সহজে আসবে না সেটা গোলশূন্য প্রথমার্ধের পরই টের পেয়ে গিয়েছিল বার্সা। ওই অর্ধে বলার মতো কোনো আক্রমণই সাজাতে পারেননি মেসিরা। উলটো বিলবাও আরেকটু মনোযোগী হলে বার্সার বুকে ছুরি বসিয়ে দিতে পারত প্রথমার্ধে।

    বিলবাওয়ের ইনাকি উইলিনিয়ামস পেয়েছিলেন প্রথম সুযোগটা। বার্সার হাই ডিফেন্সিভ লাইনের পেছনের জায়গা টার্গেট করে দৌড়ে বক্সের ভেতরও ঢুকে পড়েছিলেন, তবে লক্ষ্যে রাখতে পারেননি শট। ডিফেন্ডার ইরায় আলভারেজও বক্সের ভেতর থেকে দারুণ এক হেড করেছিলেন, সেটাও ওপর দিয়ে গেলে আরও একবার বেঁচে যায় বার্সা। আরেকবার বার্সাকে বাঁচিয়েছিলেন সার্জিও বুস্কেটস। পেনাল্টি স্পটের কাছাকাছি জায়গায় দারুণ এক ব্লকে গোলে শট করতে ইনাকি উইলিয়ামসকে বাধা দিয়েছিলেন তিনি।

    দ্বিতীয়ার্ধেও গোল পাওয়ার নাম গন্ধ ছিল না বার্সার আক্রমণে। গ্রিযমান একটি হাফ চান্স পেয়েছিলেন বক্সের ভেতর। সে সুযোগও দুর্বল শটে নষ্ট করেছেন তিনি। মেসি, সুয়ারেজ কারও কাছ থেকেই পর্যাপ্ত বলের যোগান না পেয়ে আরও এক ম্যাচ হতাশায় কাটিয়ে রাকিটিচের বদলি হয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন গ্রিযমান। ওই একই সময় মাঠে নেমেছিলেন আনসু ফাতি। তিনি মাঠে নেমেই বক্সের ভেতর একটি সুযোগ পেয়েছিলেন, তবে এদিন আর রোমাঞ্চকর গল্প লেখার সুযোগ হয়নি ১৭ বছর বয়সীর। তার হেডে করা বল গেছে ওপর দিয়ে। গোল না পেলেও ফাতির মতো আরেক তরুণ রিকি পুজও বদলি হয়ে নেমে আক্রমণে ধার বাড়িয়ে চাপ সৃষ্টি করেছিলেন বিলবাওয়ের ওপর।

    বিলবাও শুরু থেকেই ন্যারো ডিফেন্ডিংয়ে বার্সাকে জ্বালিয়ে মারছিল। জর্দি আলবা ফিরেছিলেন একাদশে। সেমেদোর মতো তিনিও এদিন প্রান্ত ধরে আক্রমণে উঠতে পারলেন না। বার্সাও দুই প্রান্ত ব্যবহার না করে উলটো মাঝ বরাবর একের পর এক ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে হতাশ হচ্ছিল। পরে রাকিটিচের গোলে খেলা উন্মুক্ত হয়ে যাওয়ার পর আরও বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করেছিল বার্সা।

    মেসি দুইবার চিরায়ত ঢঙে ডিফেন্ডার ফাঁকি দিয়ে বল মেরেছিলেন গোলে। দুইবারই অবশ্য বেঁচে গেছে বিলবাও। লিগের ১৫ তম অ্যাসিস্ট পেলেও  ৭০০ গোলের মাইলফলক মেসির ছোঁয়া হয়নি এবারও। জন্মদিনের আগে অবশ্য একটা জয়ই যথেষ্ট হওয়ার কথা তার জন্য। আরেকটু হলেই তো মাঠে মারা যেত সেই উদযাপনও! শেষদিকে অবশ্য বার্সা আরেকটু স্বস্তিতে জিততে পারত ম্যাচ। ভিদাল আর ফাতির  ডাবল প্রচেষ্টা গোলে পরিণত হয়নি বিলবাও উনাই সিমন গোলরক্ষক আর বারপোস্টের কারণে। নইলে আরেকটু দম ফেলার সুযোগ হয়ত জুটত তাদের।  

    ২৭ তারিখ আবার সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে খেলবে বার্সা। বাকি ম্যাচগুলো অবশ্য শুধু জিতলেই আর হচ্ছে না, সঙ্গে রিয়ালের অকল্যাণ কামনা করার কাজটাও করতে হবে তাদের।