সাকিবের ফেরা এবং স্পিন ডিপার্টমেন্টে তাইজুলের 'বাড়তি' রোমাঞ্চ
“তার বিকল্প হিসেবে আসিনি।”
“সাকিব ভাইয়ের না থাকা টেস্টের ফলের ওপর প্রভাব ফেলছে।”
“আসলে সাকিব ভাই যখন আমাদের সাথে থাকে বিশেষ করে স্পিনারদের অনেক সাহায্য করে। ব্যাটসম্যান কোন মুভমেন্টে (হাবভাব) থাকে সাকিব ভাই আগে থেকে বুঝে আরকি। আর সেটা আমাদের সাথে শেয়ার করে।”
তিনটি কথা একজনেরই। প্রথমটি ২০১৯ বিশ্বকাপের পর শ্রীলঙ্কা সফরে, সাকিব আল হাসান সেখানে ছুটিতে ছিলেন। পরেরটি গত বছর জিম্বাবুয়ের বাংলাদেশ সফরের সময়, সাকিব ততদিনে আইসিসির নিষেধাজ্ঞার কবলে। আর শেষেরটি বৃহস্পতিবার, চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট শুরুর আগে অনুশীলনে। তাইজুল ইসলামের কথাতেই আসলে স্পষ্ট, শুধু একজন বোলার হিসেবে নয়, সাকিবের দলে উপস্থিতি বাংলাদেশের জন্য কতোটা গুরুত্বপূর্ণ।
ওয়ানডে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করার ম্যাচে কুঁচকিতে চোট পেয়ে উঠে যাওয়া সাকিব বিশ্রামে আছেন। প্রথম টেস্টে তাকে পাওয়া যাবে কিনা, সেটি নিশ্চিত নয় এখনও। টেস্ট স্কোয়াডও ঘোষণা করা হয়নি এখনও। তবে সাকিবের উপস্থিতির রোমাঞ্চটা স্পষ্ট তাইজুলের কথায়, “আমি বলবো যে আমি, (মেহেদি হাসান) মিরাজ, নাঈম (হাসান) ও সাকিব ভাইয়ের একটা ভালো জুটি হবে ইনশাআল্লাহ। আমরা ভালো করার চেষ্টা করবো।”
সাকিব থাকলে একসঙ্গে চার স্পেশালিস্ট স্পিনার খেলানোর সম্ভাবনা তৈরি হবে আবারও। এমনিতেও বাংলাদেশের মাটিতে টেস্ট সাফল্যের অন্যতম মূলমন্ত্র স্পিনারদের ভাল করা। শেষ ৭টি টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিপক্ষের উইকেটের ৮৭.৮৫ শতাংশই নিয়েছেন স্পিনাররা। ২০১৯ সালে সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ নেমেছিল স্বীকৃত পেসার ছাড়াই, ২০১৮ সালে এই উইন্ডিজের বিপক্ষেই সিরিজে সবকটি উইকেটই নিয়েছিলেন স্পিনাররা। প্রতিপক্ষের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই, বাংলাদেশের মাটিতে জেতা ম্যাচে মোট উইকেটের ৭৬ শতাংশই স্পিনারদের।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটার খুব বেশি পার্থক্য হওয়ার সম্ভাবনা কম। লম্বা বিরতির পর দেশের মাটিতে খেলার ব্যাপারটা সহজ হবে না, তাইজুল এমন মনে করলেও অনুশীলন নিয়ে খুশি তিনি, “অনেকদিন পর আমাদের দেশের মাটিতে খেলা। সবকিছু হয়তো এতটা সহজ হবে না। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি বেশকিছুদিন ধরে অনুশীলনের মধ্যে আছি এবং ওয়ানডে দলের সাথেও ছিলাম। ওখানে থাকার কারণে আমার অনুশীলনটা বেশি হয়েছে। আমাদের মানসম্পন্ন অনুশীলন হচ্ছে, আশা করি ঠিকঠাক ফিরে আসতে করতে বড় ধরনেরর কোনো অসুবিধা হবে না।”
অবশ্য সাকিবের উপস্থিতি বাড়তি প্রেরণা দিলেও জাতীয় দলের নিজের দায়িত্বটার কথাও ভুলছেন না তাইজুল, “ব্যক্তিগতভাবে বলবো যে, আমারও ৬-৭ বছর হয়ে গেছে জাতীয় দলে খেলার। সাকিব ভাইয়ের কাছে হয়তো অনেক কিছু নিতে পেরেছি, তো সেগুলো চেষ্টা করবো। দেখা যাচ্ছে সাকিব ভাই কোনো কিছু বলার আগেই আমি সেগুলো করার চেষ্টা করবো।”
৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে শুরু হবে দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ।