• আইপিএল ২০২১
  • " />

     

    ধাওয়ানের ৮৫, শর ৭২-এ চেন্নাইয়ের ১৮৮ হেলায় পেরিয়ে গেল দিল্লি

    ধাওয়ানের ৮৫, শর ৭২-এ চেন্নাইয়ের ১৮৮ হেলায় পেরিয়ে গেল দিল্লি    

    গ্রুপপর্ব, মুম্বাই (টস- দিল্লি/ফিল্ডিং) 
    চেন্নাই সুপার কিংস ১৮৮/৭ (রায়না ৫৪, আলি ৩৬, স্যাম কারান ৩৪, জাদেজা ২৬, ওকস ২/১৮, আভেশ ২/২৩, টম কারান ১/৪০)
    দিল্লি ক্যাপিটালস ১৯০/৩, ১৮.২ ওভার (ধাওয়ান ৮৫, শ ৭২, ব্রাভো ১/২৮, ঠাকুর ২/৫৩) 
    দিল্লি ৭ উইকেটে জয়ী 


    রানতাড়ায় ইনিংসের মাঝামাঝি সময়েই মনে হয়েছে, এ ম্যাচ হারতে পারে না দিল্লি। রানতাড়াকে এমনই একপেশে বানিয়ে ফেলেছিলেন তাদের দুই ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও পৃথ্বি শ। দুজনের ১৩.৩ ওভার স্থায়ী ১৩৮ রানের ওপেনিং জুটির পর যেন বাকি ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতা, চেন্নাইয়ের ১৮৮ রান দিল্লি অনায়াসে পেরিয়েছে ৮ বল বাকি থাকতেই। শ ৩৮ বলে ৭২ রান করে ফেরার পর ধাওয়ান করেছেন ৫৪ বলে ৮৫। চেন্নাইয়ের পেসাররা ওয়াঙ্খেড়ের পিচে ম্যাচের পরেরভাগে সুবিধা করতে পারেননি, স্পিনাররাও আশা জোগাতে পারেননি এমএস ধোনিকে। গতবারের রানার্স-আপ দিল্লির শুরুটা হয়েছে দাপুটে, অধিনায়ক ঋষভ পান্টের শুরুটাও হয়েছে বিশাল এক হাসিতে। 

    দীপক চাহারের দ্বিতীয় বলে শর ফ্লিক, চতুর্থ বলে ধাওয়ানের ড্রাইভ এরপরের বেশ লম্বা সময় ধরে চলা তাদের দারুণ স্ট্রোকপ্লের ট্রেইলারটা দিয়ে রেখেছিল। চতুর্থ ওভারে স্যাম কারানের ওপর দুজন চড়াও হয়ে শুরু করেছেন সিনেমা, পাওয়ারপ্লের শেষ ৩ ওভারে তুলেছেন ৪১ রান। দুজনই আইপিএলে এসেছেন ৫০ ওভারের দারুণ ফর্ম নিয়ে- ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে রান পেয়েছিলেন ধাওয়ান, শ বিজয় হাজারে ট্রফিতে করেছেন বড় বড় সব সেঞ্চুরি। ফরম্যাট বদলালেও ফর্মটা বদলায়নি তাদের।

    পাওয়ারপ্লেতে স্পিনার আনেননি ধোনি, এরপরের দুই ওভারে রবিন্দ্র জাদেজা ও মইন আলি মিলে দিয়েছিলেন ১০ রান। মইনের ওভারে একটা সুযোগও দিয়েছিলেন শ, যেটি ছেড়েছিলেন বদলি ফিল্ডার মিচেল স্যান্টনার। তবে সেটুকুই, পরের দুই ওভারে দুজনকেই ছয় মেরেছেন শ-ধাওয়ান। আলিকে চার মেরে ২৭ বলে ফিফটি পূর্ণ করেছেন শ, এক বল পর ধাওয়ানের সে মাইলফলকে যেতে লেগেছে ৩৫ বল। প্রথম ১০ ওভারেই ৯৯ রান তুলেছেন তারা। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং অপেক্ষাকৃত সহজ হয়েছিল, সেখানে সুযোগ দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছেন তারা, পুরো বিপরীত চিত্র ছিল চেন্নাই বোলিংয়ের। 

    শর ৯ চার ও ৩ ছয়ের ইনিংস শেষ হয়েছে ডোয়াইন ব্রাভোর বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে, ঠাকুরের ইয়র্কারের এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে ধাওয়ান মেরেছেন ১০ চার ও ২ ছয়। শেষদিকে স্টোয়নিস ৯ বলে ১৫ রান করে ফিরলেও অধিনায়ক ঋষভ পান্ট অপরাজিত থেকেই শেষ করেছেন ম্যাচ। 
     


    এর আগে টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন পান্ট, কাগিসো রাবাদা-আনরিখ নরকিয়ার অনুপস্থিতির পরও শুরুটা দারুণ করেছিলেন আভেশ খান, ক্রিস ওকসরা। পাওয়ারপ্লেতে এ দুজনের পর রবি আশ্বিন, টম কারানকেও এনেছিলেন পান্ট। দ্বিতীয় ওভারে আভেশের ফুললেংথ থেকে ভেতরের দিকে ঢোকা বলে এলবিডব্লিউ হয়েছিলেন ফাফ ডু প্লেসি, পরের ওভারে ওকসের বলে ক্যাচ তুলে ফিরেছিলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়। পাওয়ারপ্লেতে ৩৩ রান তুলতে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলা চেন্নাই ছিল ব্যাকফুটে। 

    সেখান থেকে ১৮৮ রান পর্যন্ত যাওয়ার পেছনে মূল অবদান ছিল প্রায় তিন মাস পর খেলতে নামা সুরেশ রায়নার ৩৬ বলে ৫৪ রানের পর আমবাতি রাইডুর ২৬ বলে ২৩, রবিন্দ্র জাদেজার ১৭ বলে ২৬, স্যাম কারানের ১৫ বলে ৩৪ রানের তিনটি ক্যামিওর। অবশ্য চেন্নাইয়ের ঘুরে দাঁড়ানোর শুরুটা হয়েছিল মইন আলির ২৪ বলে ৩৬ রানের ইনিংসে। 

    মইন চড়াও হয়েছিলেন আশ্বিনের ওপর, তাকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়েই ফিরতে হয়েছে তাকে। প্রথম ১৮ বলে ১৬ রান করা রায়না পরের ১৮ বলে করেছেন ৩৬ রান, ফিরিয়েছেন পুরোনো দিনের স্মৃতি। ডাবলস নিতে গিয়ে জাদেজা বোলার আভেশের সঙ্গে সংঘর্ষে থমকে দাঁড়ানোর ফলে তিনি রান-আউট না হলে হয়তো ইনিংসটা বড় হতো আরেকটু। তার আগে ১রাইডু টম কারানের বলে ক্যাচ তুলেছেন, ধোনি আভেশের বল স্টাম্পে ডেকে এনে ২০১৫ সালের পর মেরেছেন আইপিএলে প্রথম ডাক। হুট করেই ডেথ ওভার শুরুর আগে চেন্নাই পরিণত হয়েছিল ৬ উইকেটে ১৪৩ রানে। 

    এরপর টম কারানের শেষ ওভারে স্যাম কারান ও রবীন্দ্র জাদেজা মিলে তুলেছিলেন ২৩ রান, মাঝে ওকস-আভেশকে ঝুলিয়ে রেখে স্টোয়নিসকে দিয়ে ২ ওভার করিয়েছিলেন পান্ট, যেখান থেকে এসেছিল ২৬ রান। শেষ ওভারে ১০ রানের পর ওকসের ফিগার দাঁড়িয়েছিল ৩ ওভারে ১৮ রানে ২ উইকেট, তার এক ওভার বাকি রাখার পান্টের সিদ্ধান্তটা ছিল বিস্ময়েরই। তবে সেটিকে ম্যাচের প্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে দেয়নি ধাওয়ান-শর জুটি।