• আইপিএল ২০২১
  • " />

     

    ম্যাক্সওয়েল-ডি ভিলিয়ার্সেই পিষ্ট সাকিব-রাসেলরা

    ম্যাক্সওয়েল-ডি ভিলিয়ার্সেই পিষ্ট সাকিব-রাসেলরা    

    গ্রুপপর্ব, চেন্নাই (টস-ব্যাঙ্গালোর/ব্যাটিং) 
    রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ২০৪/৪, ২০ ওভার (ম্যাক্সওয়েল ৭৮, ডি ভিলিয়ার্স ৭৬, পাডিক্কাল ২৫, বরুণ ২/৩৯, কামিন্স ২/৩৪, কৃষ্ণা ১/৩১) 
    কলকাতা নাইট রাইডার্স ১৬৬/৮, ২০ ওভার (রাসেল ৩১, মরগান ২৯, সাকিব ২৬, জেমিসন ৩/৪১, প্যাটেল ২/১৭, চেহেল ২/৩৪)
    ব্যাঙ্গালোর ৩৮ রানে জয়ী


    সাকিব আল হাসান-আন্দ্রে রাসেলদের হয়ে উঠতে হতো গ্লেন ম্যাক্সওয়েল-এবি ডি ভিলিয়ার্স। সেটি তারা পারলেন না। অনেক্ষণ আটকে থেকে সাকিব কাইল জেমিসনের বলে বোল্ড হলেন ২৫ বলে ২৬ রান করে। শেষদিকে সব দায়িত্ব একা নিতে গিয়ে মোহাম্মদ সিরাজের ১৯তম ওভারে শুধু একটা সিঙ্গেল নিলেন রাসেল, শেষ ওভারে হার্শাল প্যাটেলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে তিনি করেছেন ২০ বলে ৩১। ২০৫ রানতাড়ায় সেসব হয়ে থেকেছে যথেষ্টর চেয়েও অনেক কম কিছু। ম্যাক্সওয়েলের ৪৯ বলে ৭৮, ডি ভিলিয়ার্সের ৩৪ বলে ৭৬ রানের দুর্দান্ত দুই ইনিংসে ভর করে কলকাতাকে উড়িয়ে দিয়েছে ব্যাঙ্গালোর, যারা জিতল মৌসুমের প্রথম তিন ম্যাচই। আর জয়ে মৌসুম শুরু করা কলকাতা হারলো টানা দুই ম্যাচ। 

    যে চিপকে ধুঁকেছে দলগুলি এর আগে রান করতে, সেখানেই টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়া ব্যাঙ্গালোরের শুরুটাও হয়েছিল বাজে। বরুণ চক্রবর্তির জোড়া উইকেটের ওভারে শুরুতেই চাপে পড়ে গিয়েছিল তারা-- বিরাট কোহলি রাহুল ত্রিপাঠির দারুণ ক্যাচে পরিণত হওয়ার পর রজত পাতিদার হয়েছিলেন বোল্ড। তবে বরুণকে সরিয়ে সাকিবকে পরের ওভারে এনেছিলেন মরগান, প্রথম বল ম্যাক্সওয়েল কাট করে চার মারলেও উঠেছিল ৭ রান। এরপর পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে সাকিবের ওপর চড়াও হয়েছিলেন ম্যাক্সওয়েল-পাডিক্কাল, সে ওভারে এসেছিল ১৭ রান। প্রথম ৫ ওভারে মাত্র ২৮ রান তোলা ব্যাঙ্গালোর প্রথম লাফটা দিয়েছিল সেখানেই। 

    দেভদূত পাডিক্কালের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ম্যাক্সওয়েলের জুটিতে উঠেছে ৫৮ বলে ৮৬, তবে পাডিক্কাল সেখানে করেছেন সমানসংখ্যক বলে ২৩। এ মৌসুমে ব্যাঙ্গালোরে এসে নিজেকে নতুন করে যেন খুঁজে পাচ্ছেন ম্যাক্সওয়েল, এদিন ফিফটি করেছেন তিনি মাত্র ২৮ বলে। কামিন্সের বাউন্সারে ধরাশায়ী হওয়ার আগে মেরেছেন ৯টি চার, সঙ্গে ৩টি ছয়। পিচে বল একটু গ্রিপ করছিল, শট খেলাও সহজ ছিল না। তবে ম্যাক্সওয়েল স্কোরিং শট বের করেছেন ঠিকই। 

    ম্যাক্সওয়েল ফেরার পরও ৩ ওভার বাকি ছিল ইনিংসে, তবে তার আগেই এবি ডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গে ৩৭ বলে ৫৩ রানের জুটি হয়ে গিয়েছিল তার। ম্যাক্সওয়েলের ঠিক পরের গিয়ার থেকেই যেন শুরু করেছিলেন ডি ভিলিয়ার্স, এরপর তিনি দেখিয়েছেন আরেক মাস্টারক্লাস। তিনি ফিফটি করেছেন ২৭ বলে। ইনিংসে তিনিও মেরেছেন ম্যাক্সওয়েলের সমান চার-ছয়। শেষ ৩ ওভারে ব্যাঙ্গালোর তুলেছে ৫৬ রান। ২ ওভারে ২৪ রান দেওয়ার পর সাকিবকে আর আনেননি মরগান, তবে রাসেল শেষ ২ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে হয়ে গেছেন ইনিংসে সবচেয়ে খরুচে বোলার। 

    কলকাতার শুরুটা ক্ষণিকের জন্য দ্রুতগতিতে এগিয়েছিল, তবে দারুণ কিছু স্ট্রোকপ্লের পর ৯ বলে ২১ রান করেই থামতে হয়েছিল শুবমান গিলকে। বদলি ফিল্ডার ড্যান ক্রিশ্চিয়ানের দারুণ ক্যাচের শিকার তিনি, জেমিসনকে ইনফিল্ড ক্লিয়ার করতে গিয়ে। রাহুল ত্রিপাঠি ও নিতিশ রানা শুরু করেছিলেন, তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি, দুজন যথাক্রমে ওয়াশিংটন সুন্দর ও যুঝভেন্দ্র চেহেলের শিকার। 

    ১৩তম ওভারে ম্যাক্সওয়েলকে দুই ছয় মেরেছিলেন সাকিব ও মরগান, উঠেছিল ১৪ রান। কলকাতার এমন ওভার লাগলো আরও কয়েকটি, তবে চেহেলের করা ১৭তম ওভারে চেহেলকে তিন চার ও এক ছয়ে রাসেলের নেওয়া ২০ রানেরটির আগে-পরে তেমন কিছু ছিল না কলকাতার জন্য। মরগান একটা জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি, হার্শাল প্যাটেলের বলে টো-এজে ক্যাচ তোলার আগে তিনি করেছেন ২৩ বলে ২৯। শুরুতে টাইমিং নিয়ে ভোগা সাকিব ম্যাক্সওয়েলকে মারা ছয়ের সাথে স্কুপ করে মেরেছেন একটি চার, থামতে হয়েছে সেখানেই। এরপর থেমেছেন রাসেল, থেমেছে কলকাতাও।