• আইপিএল ২০২১
  • " />

     

    ধাওয়ানের ৬৯*-এ ম্লান আগারওয়ালের ৯৯*, শীর্ষে দিল্লি

    ধাওয়ানের ৬৯*-এ ম্লান আগারওয়ালের ৯৯*, শীর্ষে দিল্লি    

    গ্রুপ পর্ব, আহমেদাবাদ (টস- দিল্লি/ ফিল্ডিং)
    পাঞ্জাব কিংস ১৬৬/৬, ২০ ওভার ( আগারওয়াল ৯৯*, মালান ২৬, গেইল ১৩, রাবাদা ৩/৩৬, অক্ষর ১/২১, আভেশ ১/৩৯) 
    দিল্লি ক্যাপিটালস ১৬৭/৩, ১৭.৪ ওভার ( ধাওয়ান ৬৯*, শ ৩৯, স্মিথ ২৪, হারপ্রিত ১/১৯, জর্ডান ১/২১, মেরেদিথ ১/৩৫) 
    দিল্লি ক্যাপিটালস ৭ উইকেটে জয়ী 


    মায়াঙ্ক আগারওয়ালের ৫৮ বলে ৯৯* রানের দারুণ ইনিংসকে ছাপিয়ে শিখর ধাওয়ানের ৪৭ বলে ৬৯* রানের ইনিংসে পাঞ্জাব কিংসকে আটকে দিয়ে আবারও শীর্ষে উঠে গেছে দিল্লি ক্যাপিটালস। অধিনায়কত্ব পাওয়ার দিনটা ব্যাট হাতে দারুণ গেলেও দিল্লির ওপেনিং জুটির আগ্রাসন থামানোর কোনো উপায় বের করতে পারেননি আগারওয়াল। পৃথ্বী শ ৩৯ রান করে ফিরে গেলেও ম্যাচ শেষ করে ৭ উইকেটের জয় নিয়ে তবেই ফিরেছেন ধাওয়ান। 

    ১৬৭ রানতাড়ায় দুর্দান্ত ফর্মে থাকা দিল্লি ওপেনারদের শুরুটা আবারও হয়েছে দারুণ। পৃথ্বী শ তার স্বভাবজাত স্ট্রোকপ্লেতে পাঞ্জাব বোলারদের ব্যাতিব্যাস্ত করে রেখেছিলেন। আর অপর প্রান্তে ধাওয়ান প্রান্ত বদল করে, বাজে বলে বাউন্ডারি আদায় করে শকে তার মত করে খেলার স্বাধীনতা দিয়েছেন। বরাবরের মতই দুজনের জুটির রসায়নে ছিল না কোনো পরিবর্তন। দারুণ ব্যাটিং করে দুজন মিলে পাওয়ারপ্লেতে তুলেছেন ৬৩ রান। 

    গত ম্যাচের নায়ক হারপ্রিত ব্রার আক্রমণে এসেই অবশ্য আঘাত হানেন, বোল্ড হয়ে ফেরার আগে শ অবশ্য ২২ বলে ৩৯ রান করে তার ভুমিকাটা ঠিকঠাকভাবেই পালন করেছেন। নেমে স্টিভেন স্মিথ প্রান্ত বদল করে ধাওয়ানকে নিজের খেলাটাই খেলতে দিচ্ছিলেন। পাঞ্জাবের ম্যাড়মেড়ে পেস আক্রমণের মধ্যে আলো হয়ে থাকা রাইলি মেরেডিথকে আকাশে উড়িয়ে মারতে গেলে অবশ্য ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে স্মিথ ফিরেছেন ২২ বলে ২৪ রান করে। এরপর নেমে দ্রুত ম্যাচ শেষ করার তাগিদ থেকেই সব বলেই ব্যাট চালাতে থাকেন দিল্লি অধিনায়ক ঋশাভ পান্ট। জর্ডানকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ব্যাট খুইয়ে আকাশে বল তুলে দিয়ে ফিরে গেছেন ১৪ রানে। তবে মেরেডিথের শেষ ওভারে ছয়-ছয়-চারে শিমরন হেটমায়ার ম্যাচ দ্রুতই শেষ করেছে। ৬৯ রানে অপরাজিত থেকেছেন ধাওয়ান, আর কিছু করতে হয়নি তাকে। 

    ম্যাচের আগেই পাঞ্জাব পেয়েছিল দুঃসংবাদ, অ্যাপেন্ডিসাইটিসে ছিটকে গেছেন নিয়মিত অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নতুন ওপেনিং জুটির শুরুটাও ভাল হয়নি। ইশান্ত শর্মার প্রথম ওভারটাই হয় মেইডেন, তার করা পরের ওভারে একটা ছয় মারলেও চাপ যে তাকে পেয়ে বসেছে সেটা প্রাভসিমরান সিংকে দেখেই বঝা যাচ্ছিল। চতুর্থ ওভারেই কাগিসো রাবাদার বলে উড়িয়ে খেলতে গিয়ে মিড অফে স্মিথের সহজ ক্যাচের শিকার হয়ে ১৬ বলে মাত্র ১২ রান করেই ফিরে যান প্রাভসিমরান। ক্রিস গেইলকে এদিন অবশ্য বেশ স্বচ্ছন্দ মনে হচ্ছিলো, রাবাদার গুড লেংথের একটা বলে দারুণ ছয় মেরে সেই পুরনো গেইলের কথাই মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু পরের বলেই রাবাদার ঘন্টায় ১৪৪ কিলোমিটার গতির ফুলটসের জন্য যেন একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না, ১৩ রান করেই বোল্ড হয়ে শেষ হয় তার ইনিংস। এই দুই উইকেট হারালেও পাওয়ারপ্লেতে পাঞ্জাব তোলে ৩৯ রান। 

    টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর ব্যাটসম্যান ডাভিড মালান এদিন প্রথম নেমেছিলেন পাঞ্জাবের হয়, তাকে সঙ্গী করেই অধিনায়কের দায়িত্ব বেশ ভালোভাবেই পালন করছিলেন আগারওয়াল। তবে মালান খোলস ছেড়ে বেরুতে পারেননি শেষ পর্যন্ত। অক্ষর প্যাটেলকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বল মিস করে বোল্ড হওয়ার আগে সমানসংখ্যক বলে করেছেন ২৬ রান। একই ওভারে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে ফিরে যান দীপক হুডা। 

    রান রেট বাড়ানোর সব দায়িত্ব এরপর নিজের কাধেই তুলে নেন নবনিযুক্ত অধিনায়ক। ১তম ওভারে আভেশ খানের বলে শাহরুখ খান আর ১৯তম ওভারে রাবাদার বলে ক্রিস জর্ডান ফিরলেও আগারওয়াল ছিলেন তার লক্ষে অটল। ঠান্ডা মাথায় ইনিংসকে সাজিয়েছেন, বাজে বলকে দিয়েছেন যোগ্য জবাব। পুরো ম্যাচে ভাল বল করা আভেশের উপর চড়াও হয়ে হারপ্রিতকে সাথে নিয়ে শেষ ওভারে তুলেছেন ২৩ রান। একসময়ে ৩২ বলে ৩৭ রানে থাকা আগারওয়াল শেষ ২৬ বলে ৬২ রান করে পৌঁছেছেন ৯৯ রানে। সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ থেকে গেলেও তার এই ইনিংস দলকে নিয়ে গিয়েছিলেন ১৬৬ রান পর্যন্ত, শ-ধাওয়ানের কাছে শেষ পর্যন্ত যথেষ্ট হয়নি যা।