• আইপিএল ২০২১
  • " />

     

    দাপুটে জয়ে মোস্তাফিজদের প্লে-অফ থেকে প্রায় ছিটকে ফেলল কোহলিদের বেঙ্গালুরু

    দাপুটে জয়ে মোস্তাফিজদের প্লে-অফ থেকে প্রায় ছিটকে ফেলল কোহলিদের বেঙ্গালুরু    

    গ্রুপ পর্ব, দুবাই (টস- বেঙ্গালুরু/ বোলিং)

    রাজস্থান  রয়্যালস ১৪৯/৯, ২০ ওভার (লুইস ৫৮, জাইসওয়াল ৩১, স্যামসন ১৯, হারশাল ৩/৩৪, শাহবাজ ২/১০, চেহেল ২/১৮) 

    রয়্যাল চ্যালেঞ্জারস বেঙ্গালুরু ১৫৩/৩, ১৭.১ ওভার (ম্যাক্সওয়েল ৫০*, ভারত ৪২, কোহলি ২৫ , মোস্তাফিজ ২/২০)

    বেঙ্গালুরু ৭ উইকেটে জয়ী


     

    সাত উইকেটের দাপুটে জয়ে প্লেঅফের দৌড় থেকে রাজস্থান রয়্যালসকে প্রায় ছিটকে ফেলল রয়্যাল চ্যালেঞ্জারস বেঙ্গালুরু। এভিন লুইস-ইয়াশাসভি জাইসওয়ালের ৭৭ রানের ওপেনিং জুটির পরে যুজবেন্দ্র চেহেল ও শাহবাজ আহমেদের জোড়া উইকেটের সাথে হারশাল পাটেলের ৩ উইকেটে ১৪৯ রান রাজস্থানকে বেঁধে ফেলে বেঙ্গালুরু। শ্রীকার ভারতের ৪২ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ৫০* রানে অনায়াসে সেই লক্ষ্য টপকে প্লেঅফের আরও কাছাকাছি চলে গেল ভিরাট কোহলির দং

    বোলিংয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর পর সেই আত্মবিশ্বাসের ছাপ মিলেছিল ব্যাটিংয়ের শুরুতেও। মাঝে চেতন সাকারিয়ার চতুর্থ ওভারে ৩ রান ছাড়া বাকি তিন পেসার কার্তিক তিয়াগি, ক্রিস মরিস ও মোস্তাফিজুর রহমান প্রত্যেকের ওভারেই আসে দশোর্ধ রান। এর আগের ম্যাচে ১৮১ রান তাড়া করে এই ভিরাট কোহলি-দেবদূত পাডিকাল জুটিই ম্যাচ জিতিয়েছিল। এই ম্যাচেও সেই জুটি ভাঙার কোনও লক্ষণের দেখা না মিললে পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে স্রোতের বিপরীতে পাডিকালের স্টাম্প উপড়ে তাকে ২২ রানে ফেরান সেই মোস্তাফিজই। ২২৯ রান পরে অবশেষে এই মৌসুমে বেঙ্গালুরুর এক উইকেট নিতে সক্ষম হয় রাজস্থান। মোস্তাফিজ ঐ ওভারে ৬ রান দিলেও বেঙ্গালুরু পাওয়ারপ্লেতে তোলে ৫৪ রান। া

    ভালো শুরুর পরও অবশ্য পরের ওভারেই ফিরতে হয় কোহলিকে। মিসফিল্ডের সুযোগ নিয়ে সিঙ্গেল বের করতে গিয়ে রিয়ান পরাগের সরাসরি থ্রোতে তিনি ফেরেন ২৫ রান করে। এরপর অবশ্য দলকে দক্ষতার সাথে এগিয়ে নিয়ে যান শ্রীকার ভারত ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। বোলিংয়ে জীর্ণশীর্ণ রাজস্থানের একমাত্র আশার জায়গা হয়ে এদিন ছিলেন মোস্তাফিজ। নিজের তৃতীয় ওভারে ভারতকে বাউন্সারের জালে ফেলে ফেরান ৪৪ রানে। তবে সব আশায় পানি ঢেলে দিয়ে মরিসের করা এর পরের ওভারে তিন চার এক ছয়ে ২২ রান নেন ম্যাক্সওয়েল, ৩০ বলে পূর্ণ করেন ফিফটি। পরের ওভারের প্রথম বলেই এবি ডি ভিলিয়ার্স চার মেরে পূর্ণ করেন জয়ের আনুষ্ঠানিকতা। মৌসুমের দ্বিতীয় দেখায়ও রাজস্থানকে নিয়ে ছেলেখেলা করে তাই ১৭ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় বেঙ্গালুরু।     

     

    এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামতে হলেও রাজস্থানের শুরুটা হয়েছিল তাদের মনমতই। প্রথম ওভারে ৩ রান দিয়ে শুরু করা অভিষিক্ত জর্জ গারটনের ওপর চড়াও হয়ে তার করা চতুর্থ ওভারে লুইস দুই ছয় এক চারে নেন ১৮ রান। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে আক্রমণে এসে মোহাম্মদ সিরাজ ৪ রান দিলেও কোনও উইকেট না হারিয়ে রাজস্থান তোলে ৫৬ রানল

    পাওয়ারপ্লের পরের ওভারে ক্রিশ্চিয়ান আক্রমণে এলে তার ওভারে ১১ রান নিয়ে জাইসওয়ালও গিয়ার পাল্টানোর ইঙ্গিত দেন। তার পরের ওভারের শুরুটাও করেছিলেন ছয় দিয়েই। পরের বলেও মাঠছাড়া করতে গেলে সংযোগ ঠিকঠাক না হওয়ায় মিড অফে থাকা সিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ২২ বলে ৩১ রান করে থামেন জাইসওয়াল। ৭৭ রানের ঝড়ো ওপেনিং জুটি ভাঙলেও তাতে ছন্দপতন হয়নি লুইসের। দশম ওভারে হারশালের বলে চার মেরে ৩১ বলে পূর্ণ করেন তার ফিফটি। গারটন আক্রমণে এলেই আবারও তাকে মাঠছাড়া করতে এলেই ঘটে বিপদ। ব্যাটের কানায় লেগে বল ওপরে উঠে গেলে সহজেই সেই ক্যাচ লুফে নেন উইকেটকিপার ভারত, ৩৭ বলে ৫৮ রান করে থামেন লুইস।

    লুইসের বিদায়ে ম্যাচ একেবারে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যায়। ছুটতে থাকা রাজস্থানকে এরপর চেনাই দায় হয়ে গিয়েছিল। ঐ ওভারের পর থেকে চেহেল-শাহবাজের টানা স্পিনে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় রাজস্থানের মিডল অর্ডার। চার ওভারের দারুণ এক স্পেলে চেহেল ফেরান ফর্মে থাকা লোমরোর ও লিয়াম লিভিংস্টোনকে, গোনেন মাত্র ১৮ রান। মাঝে এক ওভারেই শাহবাজ ফেরান রাজস্থান অধিনায়ক স্যামসন ও রাহুল তেওয়াতিয়াকে, দেন মাত্র ৪ রান। ১২-১৭তম ওভার এই স্পিন জুটি টানা বল করে ঐ ৪ উইকেটের বিনিময়ে দেন মাত্র ১৭ রান। 

    দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ানো বেঙ্গালুরুর তুলির শেষ আঁচড়টা দেন তাদের ও এবারের আসরের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হারশাল। শেষ ওভারে টানা দুই বলে পরাগ ও মরিসকে ফিরিয়ে অল্পের জন্য পাননি আরও একটি হ্যাটট্রিকের দেখা। ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে শেষ বলে আবার ফেরান সাকারিয়াকেও। ১১ ওভারে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ১০০ রান পূর্ণ করে উড়তে থাকা রাজস্থানকে মাটিতে নামিয়ে এনে তাই মাত্র ১৪৯ রানেই বেঁধে ফেলে বেঙ্গালুরু। দিনশেষে সহজেই সেই লক্ষ্য পেরিয়ে যায় বেঙ্গালুরু, ১৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকায় তিনে থাকলেও প্লেঅফ নিশ্চিত করার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যায় তারা।