• আইপিএল ২০২১
  • " />

     

    রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে জয় দিয়ে প্লেঅফে জায়গা করে নিল বেঙ্গালুরু

    রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে জয় দিয়ে প্লেঅফে জায়গা করে নিল বেঙ্গালুরু    

    গ্রুপ পর্ব, শারজাহ (টস- বেঙ্গালুরু/ ব্যাটিং)
    রয়্যাল চ্যালেঞ্জারস বেঙ্গালুরু ১৬৪/৭, ২০ ওভার (ম্যাক্সওয়েল ৫৭, পাডিকাল ৪০, কোহলি ২৫, হেনরিকস ৩/১২, শামি ৩/৩৯ )
    পাঞ্জাব কিংস ১৫৮/৬, ২০ ওভার (মায়াঙ্ক ৫৭, রাহুল ৩৯, মার্করাম ২০, চেহেল ৩/২৯, গারটন ১/২৭, শাহবাজ ১/২৯)
    ফলাফল: বেঙ্গালুরু ৬ রানে জয়ী

     
    শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ভিরাট কোহলির টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণ করে তৃতীয় দল হিসেবে প্লেঅফে জায়গা করে নিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জারস বেঙ্গালুরু। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ৩৩ বলে ৫৭ রানের দারুণ ইনিংসে পাঞ্জাব কিংসের সামনে ১৬৫ রানের লক্ষ্য বেঁধে দিলে ৯১ রানের ওপেনিং জুটিতে জয়ের দিকে ছুটছিলেন লোকেশ রাহুল-মায়াঙ্ক আগারওয়াল। সেখান থেকে যুজবেন্দ্র চেহেলের ৩ উইকেটে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে শেষ বলে গড়ানো ম্যাচে ৬ রানের জয় তুলে নিয়েছে কোহলির দল।

    ১৬৫ রানের লক্ষ্যে পাঞ্জাবের শুরুটা হয় মনমত। উইকেটের আচরণ, বুঝে বোলার বুঝে আক্রমণে যান লোকেশ রাহুল-মায়াঙ্ক আগারওয়াল জুটি। পাওয়ারপ্লেতে বিনা উইকেটেই দুজন মিলে তুলে ফেলেন ৪৯ রান।

    দুই স্পিনার শাহবাজ আহমেদ ও যুজবেন্দ্র চেহেল আক্রমণে এলে তাদের ওপর চড়াও হন এই দুজন। তারই সুযোগ নিয়ে বেরিয়ে এসে খেলতে যাওয়া রাহুলকে হারশাল পাটেলের ক্যাচে ৩৯ রানে ফেরান শাহবাজ। ৯১ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙার পরেই যেন জীবন ফিরে পায় বেঙ্গালুরুর বোলিং আক্রমণ। চাপ সৃষ্টি করে এদিন তিনে নামা নিকোলাস পুরানকে মাত্র ৩ ফেরান চেহেল। অন্য প্রান্তে থাকা মায়াঙ্ক অবশ্য ৩৬ বলে পূর্ণ করেন তার ফিফটি।

    ওপেনিং জুটি ভাঙার পরের চার ওভারে ২১ রান উঠলে গিয়ার পাল্টাতে গিয়ে ফিরতে হয় মায়াঙ্ককেও, তাও অদ্ভুতুড়ে কায়দায়! চেহেলকে সুইপ করার সিদ্ধান্ত নিলে ব্যাটের নিচে লেগে পায়ে লেগে বল কোথায় গিয়েছে বোঝার আগেই তিনি দেখেন বল তালুবন্দি করেছেন শর্ট থার্ড ম্যানে থাকা সিরাজ, মায়াঙ্ক ফেরেন ৪২ বলে ৫৭ রান করে। চেহেলের ঐ ওভারেই লেগ স্পিনের জালে আটকে ফিরেন সরফরাজ খানও। দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে চেহেল শক্তভাবে ম্যাচে ফেরান বেঙ্গালুরুকে।

    পরের ওভারেই উইকেটে থিতু এইডেন মার্করাম রানের চাকা সচল করতে গিয়ে ক্রিশ্চিয়ানের শিকার হয়ে ২০ রানে ফিরে গেলে পাঞ্জাবের জন্য সমীকরণ আরও কঠিন হয়ে যায়। ১৯তম ওভারে সিরাজ ৮ রান দিলে শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ১৯ রান। প্রথম বলেই আগের দিন দারুণ ক্যামিও খেলা শাহরুখ খান রান আউট হয়ে ফেরেন ১৬ রানে। উইকেটে থাকা মইসেস হেনরিকস বল হাতে তার বীরত্বগাথাকে ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে পূর্ণতা এনে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন, তবে কাজা লাগাতে পারেননি। পঞ্চম বলে ছয় মারলেও শেষ বলে সমীকরণ হয়ে দাঁড়ায় ৭ রান, নিতে পেরেছিলেন মোটে ১। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে স্নায়ু ধরে রেখে সিরাজ বেঙ্গালুরুকে এনে দেন ৬ রানের জয়।   

    এবারের আইপিএলের দ্বিতীয় অধ্যায়ে শারজাহতে আগে ব্যাট করে মাত্র একবারই জয়ের মুখ দেখেছে কোনও দল। তা সত্ত্বেও ভিরাট কোহলি ব্যাটিং নেওয়ায় খুশি হন রাহুলও। তবে নিজের সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণ করে দেবদূত পাডিকালকে নিয়ে দারুণ শুরু করেন কোহলি। পাওয়ারপ্লেতে কোনও উইকেট না হারিয়ে বেঙ্গালুরু তুলে ফেলে ৫৫ রান।

    দশম ওভারে আক্রমণে এসে ৬৮ রানের জুটি ভাঙেন মইসেস হেনরিকস। ২৫ রানে থাকা কোহলির স্টাম্প উপড়ে ফেলার পরের বলেই ফেরান উইকেটে নবাগত ড্যান ক্রিশ্চিয়ানকেও। পরের ওভারে এসে ফেরান উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া পাডিকালকেও। উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে পাডিকাল থামেন ৩৮ বলে ৪০ রান করে।

    দ্রুত ৩ উইকেট খুইয়ে বসলেও এসেই প্রতি আক্রমণে যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এবি ডি ভিলিয়ার্সের সাথে জুটি বেঁধে পাঞ্জাবকে চেপে বসার কোনও সুযোগই দেননি। স্বভাবজাত স্ট্রোকপ্লেতে ২৯ বলেই পূর্ণ করেন তার ফিফটি। প্রান্ত বদল করার ভুমিকায় থাকা এবি অবশ্য এদিন গিয়ার পরিবর্তনের আগেই রান আউটের শিকার হয়ে ফেরেন ১৮ বলে ২৩ রান করে। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে মোহাম্মদ শামিকে মাঠছাড়া করতে গিয়ে এরপর ফেরেন ম্যাক্সওয়েলও, ৩৩ বলে ৫৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে সরফরাজ খানকে ক্যাচ দিয়ে নিজের ভূমিকা পালন করে তবেই থামেন। এরপর হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেও পাননি শামি। টানা দুই বলে শাহবাজ আহমেদ ও জর্জ গারটনকে ফেরানোর পর শেষ বলে এক রান দিলে বেঙ্গালুরু গিয়ে থামে ১৬৪ রানে।

     দিনশেষে সেই সংগ্রহ যথেষ্ট প্রমাণ করে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে প্লেঅফে জায়গা করে নিয়েছে বেঙ্গালুরু। ১০ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে থাকলেও এক ম্যাচ হাতে থাকা পাঞ্জাবের প্লেঅফের সম্ভাবনা এই হারে আরও ক্ষীণ হয়ে গিয়েছে।