জোসেফ-হোল্ডারের আগুনে দগ্ধ জিম্বাবুয়ে, জ্বলল ক্যারিবিয়ানদের সুপার ১২-এর আশার প্রদীপ
গ্রুপ পর্ব, হোবার্ট(টস-ওয়েস্ট ইন্ডিজ/ব্যাটিং)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ-১৫৩/৭, ২০ ওভার (চার্লস ৪৫, পাওয়েল ২৮, আকিল ২৩, রাজা ৩/১৯, মুজারাবানি ২/৩৮, উইলিয়ামস ১/১৭)
জিম্বাবুয়ে-১২২, ১৮.২ ওভার (জংওয়ে ২৯, মাধেভেরে ২৭, বার্ল ১৭, জোসেফ ৪/১৬, হোল্ডার ৩/১২, ম্যাকয় ১/১৯)
ফলাফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩১ রানে জয়ী
স্কটল্যান্ডের কাছে বিধ্বস্ত হয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করার পর উড়তে থাকা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না ওয়েস্ট ইন্ডিজের। লড়াকু পুঁজি নিয়েই সেই আশা জিইয়ে রেখেছে ক্যারিবিয়ানরা। ব্যাট হাতে আগের ম্যাচে ঝড় তোলা সিকান্দার রাজা এবার বল হাতে ক্যারিবিয়ানদের খাবি খাওয়ালে সেটার রেশ সামলে জনসন চার্লসের ৪৫ রান ও শেষ দিকে রভম্যান পাওয়েল-আকিল হোসেনের সময়োপযোগী জুটিতে লড়াইয়ের রসদ জোগাড় করে পেস আক্রমণে ধসিয়ে দিয়েছে জিম্বাবুইয়ানদের। জেসন হোল্ডার-আলঝারি জোসেফের খুনে বোলিংয়ে জিম্বাবুয়ে শুধু হারের ব্যবধানটাই কমাতে পেরেছে।
১৫৪ রানের লক্ষ্যে তৃতীয় ওভারেই জোসেফের বল স্টাম্পে ডেকে এনে রেজিস চাকাবভা ফেরানোর পর ৫ম ওভারে টনি মুনিয়োঙ্গাকে ফিরিয়ে আবার আঘাত হানেন জোসেফ। পরের ওভারে ওবেড ম্যাকয় এসে উইলিয়ামসকেও ফেরালে পাওয়ারপ্লেতেই ৩ উইকেট খুইয়ে বসে জিম্বাবুয়ে; ৫৫ রান তুলে রানের চাকা যদিও সচল রেখেছিল তারা।
পাওয়ারপ্লের পরের ওভারেই আক্রমণের ঝান্ডা বহনকারী ১৯ বলে ২৭ রানে থাকা ওয়েসলি মাধেভেরেকে থামান হোল্ডার। তার পরের ওভারেই দারুণ ফর্মে থাকা রাজা ১৪ রানেই ওডিন স্মিথের শিকার হয়ে ফিরলে জিম্বাবুয়ের আশার প্রদীপ নিভুনিভু হতে থাকে। ক্রমাগত উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করতে থাকলে আকিল এসে ২ রানে থাকা শুম্বাকে ফেরান। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার হিসেবে চেষ্টা করে যাওয়া বার্ল হোল্ডারের কাছে এলবিডব্লিউ হয়ে ১৯ রানে ফিরলে সেখানেই কার্যত শেষ হয়ে যায় জিম্বাবুয়ের আশা। জোসেফ আবারও আক্রমণে এসে এরপর রিচার্ড গারাভা ও ২২ বলে ২৯ রানে থেকে লড়তে থাকা লুক জংওয়েকে ফেরালে পরের ওভারে টেণ্ডাই চাতারার স্টাম্প উপড়ে তুলির শেষ আঁচড় টানেন হোল্ডার।
এর আগে চতুর্থ ওভারেই কাইল মেয়ার্স ১৩ রানে মুজারাবানির শিকার হয়ে ফিরে গেলেও পাওয়ারপ্লেতে ৪৯ রান তুলে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাওয়ারপ্লের পর বার্ল-রাজার স্পিন জুটি চেপে বসলেও ৯ম ওভারে বার্লকে ১ ছয় ও ২ চার মেরে শেকল ভাঙেন চার্লস। পরের ওভারে এভিন লুইসও সেই চেষ্টা করতে গেলে রাজা তাকে বাউন্ডারিতে মিল্টন শুম্বার তালুবন্দি করেন ১৫ রানে। উইকেট হারানোর চাপে পিষ্ট করে উইন্ডিজ অধিনায়ক নিকোলাস পুরানকে এরপর মাত্র ৭ রানেই ফেরান শন উইলিয়ামস; ওই ওভারের শেষ বলে উইকেটে নবাগত পাওয়েলের সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে ৩৬ বলে ৪৫ রানে শেষ হয় চার্লসের ইনিংসও।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভাল শুরুকে জিম্বাবুয়ে ভন্ডুল করে এগুতে থাকলে তার পরের ওভারে রাজা এসে হানেন জোড়া আঘাত - ফেরান শামার ব্রুকস ও হোল্ডারকে। তবে রান আউটের শাপ মোচনে যেন পাওয়েল ছিলেন বদ্ধপরিকর। আকিল হোসেনকে সাথে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ম্যাচে রাখার চেষ্টা করেন তিনি। ১৮তম ওভারে মুজারাবানির বলে তার ক্যাচ পড়লে শেষ ওভারে ওই মুজারাবানিকে মারেন ২টি ছয়, যার মধ্যে একটি ছিল ১০৪ মিটার! সেই সুবিশাল ছয়ের পর আবারও বল মাঠছাড়া করতে গেলে অবশ্য ২১ বলে ২৮ রান করে থামেন তিনি। অন্য প্রান্তে আকিল ১৮ বলে ২৩* রানে শেষ পর্যন্ত থাকলে জিম্বাবুয়ের কাছে প্রশ্ন তোলার আত্মবিশ্বাস পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যেই আত্মবিশ্বাসকে সম্বল বানিয়ে সুপার ১২-এর আশা এরপর বাঁচিয়ে তুলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।