কারান-স্টোকসের তোপ দাগানো বোলিংয়ের পর লড়াকু লিভিংস্টোনে ইংল্যান্ডের শুভসূচনা
সুপার ১২, পার্থ (টস- ইংল্যান্ড/ বোলিং)
আফগানিস্তান, ২০ ওভারে ১১২/১০ (ইব্রাহিম ৩২, কারান ৫/১০, স্টোকস ২/১৯, উড ২/২৩)
ইংল্যান্ড, ১৮.১ ওভারে ১১৩/৫ (লিভিংস্টোন ২৯*, রশিদ ১/১৭)
ফলঃ ইংল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী।
এগারো বল বাকি থাকতেই প্রতিপক্ষ ম্যাচ ছিনিয়ে নিলেও আফগানিস্তান আফসোস করতেই পারে, তাদের ব্যাটাররা যদি আরেকটু পুঁজি এনে দিতে পারতো! কিন্তু স্যাম কারান-বেন স্টোকসের সাথে মার্ক উডের পেস ও বাউন্সে নাস্তানাবুদ হয়ে আফগানিস্তান অলআউট হয়ে গিয়েছিল ১১২ রানেই। তবু রানতাড়ায় ইংলিশ ব্যাটারদের ভোগান্তিতে ফেলে লড়ে গিয়েছিল আফগানরা। ম্যাচ শেষে ভাগ্য জুটেছে ৫ উইকেটের হারই।
হ্যালস একটা ক্যাচ ছেড়েছিলেন, আফগানরা তার ক্যাচ ছেড়েছে দু-দুবার। প্রথমটা ৫ম ওভারে, ফারুকির বলে পয়েন্টে বদলি ফিল্ডার কাইসের হাতে। ওই ওভারেই পরে যদিও বাটলারের উইকেট জুটেছিল ফারুকির কপালে। ১৮ রানে বাটলারের ফেরার পর মালান এসে ঝুঁকিবিহীন খেলে যাচ্ছিলেন। ওদিকে হ্যালস ১৭ রানে থাকা অবস্থায় মুজিবের বলে নাবির হাতে জীবন পান, কিন্ত আবার ১৯ রানেই ক্যাচ তুলে ফিরে যান। পাওয়ারপ্লেতে ৪০ রান তুলা ইংল্যান্ড পরের ২৪ বলে ২২ রান এনে ইনিংসের অর্ধপথে পৌঁছে ৬২ রানে।
রশিদ-মুজিবরা একটা পর্যায়ে ভালোই চেপে ধরেছিলেন। মাঝখানে টানা ৫১ বল ইংলিশ ব্যাটসম্যানেরা পার করে দেয় কোন বাউন্ডারি ছাড়া। পঞ্চম ওভারের পর ১৪তম ওভারে গিয়ে আসে আরেকটি বাউন্ডারি। ওই ওভারেই নাবির দুর্দান্ত এক ক্যাচে মালানের ৩০ বলে ১৮ রানের অদ্ভুত ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে। এর আগে স্টোকসকেও ফেরানো গেছে বলে ক্ষীণ আশাও হয়তো জেগে উঠেছিল আফগানদের মনে, কিন্ত পরের ওভারেই লিভিংস্টোন আর ব্রুক মিলে ১৪ রান এনে ফেলেন। এরপর অপরাজিত থেকেই ১১ বল হাতে রেখে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন লিভিংস্টোন।
টসে জিতে বোলিং নিয়ে পার্থের জ্বলমলে আলোয় বিশ্বকাপ মিশনের সূচনার দায়িত্বটা এ ম্যাচে বাটলার তুলে দিয়েছিলেন স্টোকসেরই হাতে। এই ম্যাচের আগে ৩৮ ম্যাচের ক্যারিয়ারে মাত্র একবারই প্রথম ওভারে বল করেছিলেন স্টোকস। সেটিও বিশ্বকাপের আগের সিরিজেই। স্টোকস যে শুভ সূচনা করেছিলেন, এরপর সেভাবেই এগিয়ে গেছে পুরো ইনিংস। ইংলিশ বোলারদের করা একের পর এক প্রশ্নে উত্তরের ঘর খালি রেখেই চলে যেতে হয়েছে আফগানদের। বলে বলে রান করতেও বেজায় কষ্ট হচ্ছিলো আফগানদের, পাওয়ারপ্লে শেষে তারা রান তুলতে পারে মাত্র ৩৫। ওদিকে তখনই দুই ওপেনারের প্যাভিলিয়নে ফেরা সারা। ১০ রানে গুরবাজের বিদায়ের পর জাজাই তার ভোগান্তির শেষ লিখেছেন ১৭ বলে ৭ রানে আউট হয়ে।
শুধুই জাজাই নয়, আফগান প্রত্যেক ব্যাটারকেই দেখে মনে হয়েছে, অচেনা এক ভুবনে পা রেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছে তারা। এ আমি কোথায়?, ইংলিশ বোলিং আক্রমণের পেস ও বাউন্সের সামনে বড্ড বেমানান আফগানদের এমন অনূভুতি হতেই পারে। মার্ক উড যে ২৪ বল করেছেন তার সবকটিই ছিল ১৪০ এর বেশি গতির। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এর আগে কেউ কখনোই ২৪ বলই এভাবে ১৪০ এর বেশি গতিতে করতে পারেনি। শুধুই উড নয়, স্টোকস-ওকসরাও গতিবৈচিত্র্যে আফগানদের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।
৩৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট পড়ার পর ইব্রাহিম ও উসমান মিলে ইনিংস গড়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্ত তারা বলপ্রতি রানের চেয়ে বেশি গতিতে রান তুলতে পারেননি। ইনিংসের অর্ধেক শেষেও তাই আফগানদের সংগ্রহ থাকে মোটে ৫৫ রান। এরপর ১২তম ওভারে কারানের স্লোয়ারে ধোঁকা খেয়ে ৩২ রানে ইব্রাহিমের ফেরার পর নাজিব এসে আগ্রাসী মনোভাব দেখান। কিন্ত তিনি থেমে গেছেন ১৩ রানেই। এরপর ১৫তম ওভারে ৮২ রানে চতুর্থ উইকেট হারানো আফগানিস্তান অলআউট হয়ে গেছে ১১২ রানেই।