• ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
  • " />

     

    শাদাব-শাহীনে দারুণ এক জয় দিয়ে সেমির আশা বাঁচিয়ে রাখল পাকিস্তান

    শাদাব-শাহীনে দারুণ এক জয় দিয়ে সেমির আশা বাঁচিয়ে রাখল পাকিস্তান    

    সুপার ১২, সিডনি (টস-পাকিস্তান/ব্যাটিং)
    পাকিস্তান- ১৮৫/৯, ২০ ওভার (শাদাব ৫২, ইফতিখার ৫১, হারিস ২৮, নরকিয়া ৪/৪১, পারনেল ১/৩১, এনগিডি ১/৩২)
    দক্ষিণ আফ্রিকা-১০৮/৯, ১৪(১৪) ওভার (বাভুমা ৩৬, মার্করাম ২০, স্টাবস ১৮, আফ্রিদি ৩/১৪, শাদাব ২/১৬, ওয়াসিম ১/১৩)
    ফলাফল: পাকিস্তান ৩৩ রানে জয়ী (ডি/এল মেথডে)

     

    সেমির আশা টিকিয়ে রাখতে জয়ের কোনও বিকল্প ছিল না পাকিস্তানের। মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচেও ৯৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল পাকিস্তান। খাদের কিনারা থেকে এরপর শাদাব খান ও ইফতিখার আহমেদ ৩৬ বলে ৮২ রানের বিধ্বংসী এক জুটি গড়ে পাকিস্তানকে উদ্ধার করেন। এরপর বৃষ্টির বাঁধা ডিঙিয়ে শাহীন শাহ আফ্রিদির সাথে জুটি গড়ে সেই শাদাবই দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিধ্বস্ত করে পাকিস্তানকে এনে দিয়েছেন দারুণ এক জয়। দক্ষিণ আফ্রিকার আশায় বড় ধাক্কা দিয়ে সেই সাথে নিজেদের আশা আবার জাগিয়ে তুলেছে পাকিস্তান।

    ১৮৬ রানের লক্ষ্যে দক্ষিণ আফ্রিকাকে শুরুতেই ধাক্কা দেন পুরো টুর্নামেন্টে নিজেকে হারিয়ে খোঁজা আফ্রিদি। প্রথম ওভারে মাত্র এক রান দিয়ে কুইন্টন ডি কককে উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করার পরের ওভারে এসে রাইলি রুশোকেও ফেরান তিনি। আফ্রিদির মত পুরো টুর্নামেন্টে নিষ্প্রভ থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা এদিন তুলেছিলেন ঝড়। পাওয়ারপ্লেতে দলকে নিয়ে গিয়েছিলেন ৪৮ রানে। হারিস রউফের চড়াও হয়ে এইডেন মার্করামের সাথে জুটি বেঁধে পাওয়ারপ্লের পরের ওভারে নিয়েছিলেন ১৭ রান।

    তবে ব্যাট হাতে দলকে উদ্ধার করা শাদাব বল হাতেও ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন পরের ওভারে আক্রমণে এসেই। ১৯ বলে ৩৬ রান করে ছুটতে থাকা বাভুমাকে থামানোর এক বল পরেই ১৪ বলে ২০ রানে থাকা মার্করামের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন শাদাব; ওভারে দেন মোটে ২ রান। বৃষ্টি এর এক ওভার পরে বাগড়া দিলে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায় ৫ ওভারে ৭৩ রান। তবে এরপর আর একেবারেই ম্যাচে ফিরতে পারেননি প্রোটিয়ারা।  ৯ বলে ১৫ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেখানো হাইনরিখ ক্লাসেনকে আক্রমণে এসেই ফেরান আফ্রিদি। শেষ ৩ ওভারে ওয়াসিম-নাসিম-হারিস মিলে ৪ উইকেট তুলে নিলে দক্ষিণ আফ্রিকা তুলতে পারে মোটে ১৩ রান। বড় পরাজয়ে তাই ম্যাচের আগে শক্ত অবস্থানে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকার সেমি-ফাইনালের আশাও ভেস্তে যেতে পারে।

    এর আগে টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে বিপদেই পড়ে পাকিস্তান। আরও একবার ব্যর্থ হয়েছিলেন বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে প্রতি-আক্রমণ করে পাকিস্তানকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছিলেন এই ম্যাচেই প্রথম মাঠে নামা মোহাম্মদ হারিস। ১১ বলে ২৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে তিনি লুঙ্গি এনগিডির শিকার হয়ে ফেরার পরের ওভারেই শান মাসুদকে ফিরিয়ে নিজের দ্বিতীয় শিকারের দেখা পান নরকিয়া। ঠিক পরের ওভারের প্রথম বলেই মাত্র ২ রানে থাকার সময়ে রাবাদার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান ইফতিখার। উইকেটে তার সাথে যোগ দেওয়া মোহাম্মদ নাওয়াজ ইনিংস মেরামতের পর ২২ বলে ২৮ রানের ইনিংস শেষে ফিরলে আবারও বিপদে পড়ে পাকিস্তান।

    তবে তাতে অবিচল থেকে মাঠে নেমেই ঝড় তোলেন শাদাব। অন্য প্রান্তে জীবন পাওয়ার পূর্ণ সুযোগ তুলে ৩৩ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন ইফতিখার। আর কোনও বোলারকেই ছেড়ে কথা না বলা শাদাব নরিকয়ার ওই ওভারে টানা দুই ছয়ে ২০ বলেই পূর্ণ করেন ফিফটি, যা এই টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দ্রুততম। ওই ওভারের শেষ দুই বলেই ২২ বলে ৫২ রানে থাকা শাদাবকে ফেরানোর পর মোহাম্মদ ওয়াসিমকেও ফিরিয়ে নিজের স্পেল শেষ করেন নরকিয়া। পরের ওভারেই প্রথম বলেই ৩৫ বলে ৫১ রান করা ইফতিখারকে রাবাদা ফেরালে পাকিস্তান থামে ১৮৫ রানে। প্রোটিয়াদের চিরশত্রু বৃষ্টির সাথে পাকিস্তানের উদ্দীপিত বোলিংয়ে সেই পুঁজিকেই দক্ষিণ আফ্রিকার ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান।