লিটলের হ্যাটট্রিকের দিনে উইলিয়ামসনে উজ্জীবিত নিউজিল্যান্ডের এক পা সেমি-ফাইনালে
সুপার ১২, অ্যাডিলেইড (টস-আয়ারল্যান্ড/বোলিং)
নিউজিল্যান্ড- ১৮৫/৬, ২০ ওভার (উইলিয়ামসন ৬১, অ্যালেন ৩২, মিচেল ৩১*, লিটল ৩/২২, ডেলেনি ২/৩০, অ্যাডেয়ার ১/৩৯)
আয়ারল্যান্ড- ১৫০/৯, ২০ ওভার (স্টার্লিং ৩৭, বালবির্নি ৩০, ডকরেল ২৩, লকি ৩/২২, স্যান্টনার ২/২৬, সাউদি ২/২৯)
ফলাফল: নিউজিল্যান্ড ৩৫ রানে জয়ী
স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার সুবিধার জন্য প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ডের পরাজয়ের ক্ষীণ আশা হয়ত ছিল অজিদের মনে। তবে কিউইদের আর সময় নেই সেসবের ধার ধারার। কোনও অঘটনের সুযোগ না রেখে সেমি-ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখল নিউজিল্যান্ড। ফিন অ্যালেনের ঝড়ো শুরুর পর অবশেষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ঠিকই রানে ফিরেছিলেন কেন উইলিয়ামসন; সাথে ড্যারিল মিচেলের সহায়তায় বর সংগ্রহ পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। তবে ইনিংসের শেষার্ধে বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্বিতীয় আইরিশ হিসেবে হ্যাটট্রিক করে জশুয়া লিটল ঘোষণা দিয়েছিলেন আরেক অঘটনের। সেই উদ্দীপনায় দারুণ শুরু করেও নিউজিল্যান্ডের স্পিন জুটি মিচেল স্যান্টনার-ইশ সোধির বিচক্ষণ বোলিংয়ে আটকে যায় আয়ারল্যান্ড। বড় জয় দিয়ে তাই নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক সেরে রেখেছে কিউইরা।
১৮৬ রানের লক্ষ্যে পাওয়ারপ্লেতে কোনও উইকেট না হারানোর পর অ্যান্ড্রু বালবির্নি-পল স্টার্লিং জুটি পঞ্চাশের ওপর দলের রান নিয়ে যাওয়ার পর উইকেটের আচরণ বুঝে গতি কমিয়ে ফেলেন সোধি-স্যান্টনার। সেই জালেি বেঁধে গিয়ে ২৫ বলে ৩০ রান শেষে স্যান্টনারের বল স্টাম্পে ডেকে এনে আইরিশ অধিনায়ক ফেরার পরের ওভারেই সোধির দারুণ এক বলে স্টাম্প খুইয়ে ফেরেন ২৭ বলে ৩৭ রানে থাকা স্টার্লিং। পরের ওভারে স্যান্টনারের দ্বিতীয় শিকার হয়ে হ্যারি টেক্টর ফেরার এক ওভার পরেই লকির প্রথম শিকার হয়ে ফিরে যান ভাল শুরু করা গ্যারেথ ডেলেনি। ঠিক পরের ওভারে দারুণ বিশ্বকাপ কাটানো লরকান টাকার সোধির দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরলে ১৫ ওভার শেষে আইরিশদের স্কোরবোর্ড হয়ে দাঁড়ায় - ১০৩/৫। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি তারা। এরপর সাউদি-লকি ২টি করে উইকেট পেলে ৩৫ রান দূরে থেকেই হার মেনে নিতে হয় আইরিশদের।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে আজও ঝড় তুলেছিলেন অ্যালেন। অন্য প্রান্তে ১ রানেই জীবন পাওয়া ডেভন কনওয়ে সাবধানী ইনিংস খেললে আক্রমণের দায়িত্ব বুঝে নেন তরুন অ্যালেন। ১৮ বলে ৩২ রান করে পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে অ্যালেন ফিরলে উইকেটে এসে এদিন ফর্মে ফেরার ইংতি দিয়েছিলেন উইলিয়ামসন। ৩৩ বলে ২৮ রান করে কনওয়ে ফিরলেও ততক্ষণে উইকেটে সময় কাটিয়ে উইকেটের গতি বুঝে ফেলেছিলেন উইলিয়ামসন। ১৪ ওভারে মাথায় গ্লেন ফিলিপস ফেরার পরেই ২০ বলে ২৭ রানে থাকা উইলিয়ামসন গিয়ার পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নেন।
৩২ বলে ফিফটি পূর্ণ করে ম্যাকার্থির ওই ওভারে ২ ছয় ও ১ চারে মিচেলের সাথে জুটি বেঁধে ২১ রান নেন উইলিয়ামসন। পরের ওভারে ৩৫ বলে ৬১ রানে থাকা উইলিয়ামসনকে ফেরানোর পরের দুই বলে নিশাম ও স্যান্টনারকে ফিরিয়ে ক্যাম্ফারের পর দ্বিতীয় আইরিশ হিসেবে বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিক করেন লিটল। নিজের কোটা পূর্ণ করে মাত্র ২২ রান দিয়ে ওই ৩ উইকেট নিয়ে লিটল তার দুর্দান্ত স্পেল শেষ করলেও মিচেলের ২১ বলে ৩১* রানে নিউজিল্যান্ড পেয়েছিল জয়ের জন্য যথেষ্ট পুঁজি। সেই জয় দিয়ে নিজেদের রান রেট ২.১১-এ নিয়ে গিয়েছে নিউজিল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডকে ছিটকে দিতে হলে অস্ট্রেলিয়াকে জিততে হবে প্রায় ১৮৫ রানে ও ইংল্যান্ডকেও জিততে হবে প্রায় ১২৮ রানে।