• ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
  • " />

     

    মেলবোর্নে সূর্যের তাপে পুড়ে গেল জিম্বাবুয়ে

    মেলবোর্নে সূর্যের তাপে পুড়ে গেল জিম্বাবুয়ে    

    সুপার ১২, মেলবোর্ন (টস- ভারত/ব্যাটিং)

    ভারত- ১৮৬/৫, ২০ ওভার (সূর্যকুমার ৬১*, রাহুল ৫১, উইলিয়ামস ২/৯)

    জিম্বাবুয়ে- ১১৫/১০, ১৭.২ ওভার (বার্ল ৩৫, রাজা ৩৪, আশ্বিন ৩/২২)

    ফলঃ ভারত ৭১ রানে জয়ী।


    সেমি-ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করে ফেলেছিল ভারত। কিন্ত এ ম্যাচ নির্ধারণ করে দিত, সেমিতে তাদের প্রতিপক্ষ হতে যাচ্ছেন কারা। তার চেয়ে বড় বিষয় জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে সেমির কঠিন পথে প্রবেশ। ভারত তা করেছে দাপুটে এক পারফরম্যান্সেই। রাহুলের ফিফটির পর সূর্যকুমারের ৬১ রানের ইনিংসের ভর করে জিম্বাবুয়েকে ভারত দিয়েছিল ১৮৭ রানের লক্ষ্য। অলরাউন্ড বোলিং পারফরম্যান্সে পরে তাদের আটকে দিয়েছে ১১৫ রানেই। 

    জিম্বাবুয়েকে সূর্যকুমারের ইনিংসটাই আসলে বলতে গেলে ছিটকেই দিয়েছিল ম্যাচ থেকে। তবু কোন অঘটন ঘটাতে পারে কি না, সে আশায় হয়তো ছিল জিম্বাবুয়েইনরা। কিন্ত সেই সম্ভাবনাটুকুও মুছে দেন আর্শদীপ-ভুবনেশ্বরেরা মিলে শুরুতেই। সুইংয়ের প্রদর্শনীতে জিম্বাবুয়েকে নাস্তানাবুদ করে ফেলেছেন পাওয়ারপ্লেতেই। সাত ওভার যেতে না যেতেই জিম্বাবুয়ে হারিয়ে ফেলে চার উইকেট। দশ ওভারের আগেই উইকেটের ঘরে যোগ হয় আরও এক। ৫ উইকেটে ৫৯ রানে ইনিংসের অর্ধেক শেষ করে জিম্বাবুয়ে। 

    তখন ক্রিজে ছিলেন বার্ল ও রাজা, যে দুজনেই জিম্বাবুয়ে সবচেয়ে বেশি ভরসা রাখত। সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যেতে তারা লড়াই চালিয়ে যান। স্পিনারদের বিপক্ষে দুজনেই ছিলেন আগ্রাসী। আক্সারের প্রথম দুই ওভার থেকেই নিয়ে আসেন ২৪ রান। আশ্বিনও তাদের তেমন অস্বস্তিতে ফেলতে পারেননি। কিন্ত ২২ বলে ৩৫ রানে শেষমেশ আশ্বিনের বলে বোল্ড হয়ে যান বার্ল, তবে তখন জিম্বাবুয়েকে পৌঁছে দিয়েছেন ৯৬ রানে। একপাশ থেকে সতীর্থদের যাওয়া দেখতে থাকা রাজা ছিলেন অনেকক্ষণ, শেষ পর্যন্ত ৯ম উইকেট হয়ে তাকেও ফিরতে হয় ৩৪ রানে। এরপর জিম্বাবুয়ের ইনিংসের সমাপ্তিও ঘটে যায় ১১৫ রানেই৷ 

    চলতি বিশ্বকাপে অধিনায়কদের দুর্দশায় সামিল রোহিতও। আজও মাত্র ১৫ রান পর্যন্তই গিয়েছে তার ইনিংস। আগের ম্যাচে ফিফটি পাওয়া রাহুল সেই ছন্দ যেন ধরে রেখেছেন আজকের ইনিংসেও। তবে শুরুটা করেছিলেন ধীরগতিতেই। একটা সময় ২১ বলে ২৪ রানে ছিলেন। এরপরেই গিয়ার পাল্টে দ্রুতই পৌঁছে যান ফিফটিতে। ৩৪ বলে ফিফটি করার পর অবশ্য বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। রাজাকে এক ছয়ের পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের শততম ছক্কা মারতে যান আবার রাহুল, ৫১ রানে ফিরতে হয় প্যাভিলিয়নে। 

    কোহলি এসে শুরুতে দ্রুত রান তুললেও পরে কিছুটা খোলসে ঢুকে পড়েন। আক্রমণাত্মক হতে না হতেই পরে বিদায় নিয়েছেন ২৫ রানে। কোহলির ফেরার পর এসেছিলেন পান্ট, প্র‍্যাকটিস ম্যাচ সহ এখনও কোনও ম্যাচে খেলার সুযোগ হয়নি পান্টের, রোহিত জানিয়েছিলেন সেজন্য তাকে সুযোগ দেওয়া। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটা বার্তা দিতে পারতেন পান্ট, কিন্ত বার্লের দুর্দান্ত ডাইভিং ক্যাচে তাকে ফিরে যেতে হয় এক অঙ্কেই।

    নিয়মিত উইকেট হারিয়ে ভারতের রানের গতি কমে যায় কিছুটা। ১৫ ওভার যখন শেষ, ভারতের রান ১০৭। এরপরেই শুরু হয়ে যায় 'সূর্যকুমার শো'! সূর্যের উত্তাপে ছারখার হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। যেমন খুশি তেমন মেরে স্রেফ অসহায়ই বানিয়ে ছেড়েছিলেন জিম্বাবুয়েইন বোলারদের। এক প্রান্তে থাকা হার্দিক বলপ্রতি রানেই খেলে গেলেও ভারতের ইনিংসে রান আসছিল ঝড়ের বেগে। 

    জিম্বাবুয়েইন বোলারদের কাছে সূর্যকুমারকে আটকানোর কোন পথ জানা ছিল না। এনগারাভা চেষ্টা করছিলেন ওয়াইড লাইনে ইয়র্কার করার, সূর্যকুমার সেগুলোই অনায়াসে পাঠিয়ে দিচ্ছিলেন বাউন্ডারিতে। ৪ ছক্কার সাথে ৬টি চার মারেন ২৫ বলের ইনিংসে। তার ৬১ রানের ইনিংসেই ভারত শেষ পাঁচ ওভারে ৭৯ রান এনে গড়ে ফেলে ১৮৬ রানের পুঁজি। যাতে ৭১ রানের বিশাল জয় নিশ্চিত করেই সেমি-ফাইনালে পা রাখছে ভারত।