• ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২
  • " />

     

    মরক্কো ম্যাজিকে ফাঁস বেলজিয়ামের বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো

    মরক্কো ম্যাজিকে ফাঁস বেলজিয়ামের বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো    

    বেলজিয়াম ০:২ মরক্কো


    দুই দলের দেখা হয়েছিল একবারই, সেই ২০০৮ সালে, তাও এক প্রীতি ম্যাচে। সেবার বেলজিয়ামকে ৪-১ গোলে হারানো মরক্কোকে ছাপিয়ে ফুটবলে অনেক দূর চলে গিয়েছে রেড ডেভিলরা। বিশ্বের দুই নম্বর দল বেলজিয়ামের বিপক্ষে বিশ্বকাপের আগে মরক্কোর পক্ষে বাজি ধরা লোক বোধহয় হারিকেন দিয়ে খুঁজেও পাওয়া যেত না। তবে দুই দলের প্রথম ম্যাচের পর অনেকেই হয়ত বেলজিয়ামকে নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। কানাডা যেমন দেখিয়েছে বেলজিয়ামের দুর্বলতা, তেমনি ক্রোয়েশিয়া খুলতেই পারেনি মরক্কোর দৃঢ় রক্ষণভাগের গেরো। যেই শঙ্কাটা বেলজিয়ামকে নিয়ে জেগেছিল সেটাই যেন সত্যি হল। বেলজিয়ামের রক্ষণকে ব্যতিব্যস্ত করে সাহসী ফুটবল খেলে মরক্কো দারুণ এক জয় দিয়ে চলে গিয়েছে গ্রুপের শীর্ষে। আবদেলহামিদ সাবিরি ও জাকারিয়া আবুখলালের গোলে বেলজিয়ামকে স্তব্ধ করে মরক্কো দেখাল তাদের শক্তিমত্তা, সেই সাথে নক আউটে ওঠার পথে এগিয়ে গেল আরেক ধাপ।

    ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে বেলজিয়ামকে কোণঠাসা করে রেখেছিল মরক্কো। একদিকে রক্ষণভাগ থেকে আগুয়ান হাকিমিকে সামলাতেই খাবি খাচ্ছিল বেলজিয়ানরা, তার ওপর ওই উইংয়েই একবার জায়গা বানিয়ে, আরেকবার ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে রেড ডেভিলদের জন্য ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন হাকিম জিয়েশ। ডান প্রান্ত দিয়ে ফাঁকায় বল পেয়ে তো হাকিমি ৩৪ মিনিটের মাথায় গোলের কাছাকাছি চলেই গিয়েছিলেন। জোরাল শট বার ঘেঁষে বেরিয়ে যায় সেবার। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আরেক ভীতি সঞ্চারক হাকিমি গোল পেয়ে গিয়েছিলেন। জিয়েশের দূরপাল্লার ফ্রি-কিকে বোকা বনে গিয়েছিলেন থিবো কোর্তোয়া। তবে জালে বল জড়ানোর আগে পা লাগানোর চেষ্টা করা রোমান সাইস অফ সাইডে ছিলেন বলে বাতিল হয় সেই গোল। 

     

    দ্বিতীয়ার্ধে খেলা গুছিয়ে নিতে দ্রিস মের্টেনসকে মাঠে নামানো হলে বেলজিয়ামের খেলায় ফিরে আসে ধার। তবে প্রথমার্ধেই গোলের ঘ্রাণ পাওয়া মরক্কো তো ছেড়ে দেবে না সহজেই। ৬৯ মিনিটে বদলি হয়ে নামা সাবিরি ম্যাচের মোড় বদলে দিলেন চার মিনিটেই। বাঁ প্রান্ত থেকে এমন এক জায়গা থেকে নিলেন সরাসরি ফ্রি-কিক যেখান থেকে অনেকেই ক্রসই দেয় সাধারণত। তাতেই আবারও বোকা বনে গেলেন কোর্তোয়া। এবারও সাইস চলে এসেছিলেন জাল ও বলের মাঝে, তবে অন সাইডে থাকায় মরক্কোর এবারের আসরের প্রথম গোলদাতা হলেন সাবিরি। সেই সাথে মরক্কোর বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম ফ্রি-কিক থেকে গোল এল তার পা থেকে।  

    সেই গোলের পর বেলজিয়ামকে রুখে দেওয়ার জন্য রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলবে মরক্কো এটাই হয়ত ভেবেছিলেন বেলজিয়ানরা। উল্টো মরক্কো ধরে রাখল তাদের ক্ষিপ্রতা। দ্রুতগতির সাথে বক্স ট বক্স ফুটবলে বেলজিয়ামকে খাবি খাইয়েই যাচ্ছিলেন তারা। যোগ করা সময়ে পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা জিয়েশ মাঝ থেকে বল টেনে ডানে নিয়ে গিয়ে ডিফেন্ডারকে ধোঁকা দিয়ে বল বাড়ালেন ডি-বক্সে জায়াগা করে নেওয়া আবুখলালের দিকে। জিয়েশের মাইনাস তাকে খুঁজে নিলে ঠান্ডা মাথায় কাছের পোস্টে বল জালে জড়িয়ে বেলজিয়ামের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন আবুখলাল। ১৯৯৪ বিশ্বকাপের পর টানা ১২ গ্রুপ পর্বের ম্যাচে অপরাজিত থাকা বেলজিয়ামকে পরাজয় বরণ করতে তো হলই, সেই সাথে পরের রাউন্ডে তাদের উত্তরণও পড়ের গেল শঙ্কার মুখে।