পর্তুগালের পেনাল্টিটা কি আদৌ সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল? নিয়ম কী বলে?
পর্তুগাল-উরুগুয়ে ম্যাচে রোনালদোর গোল নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। গতকাল অ্যাডিডাস অবশ্য সব ধোঁয়াশা পরিষ্কার করে দিয়েছে তাদে বলের প্রযুক্তি দিয়ে। অবশ্য ম্যাচের অন্য গোল নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। ব্রুনোর পেনাল্টিটা কি আদৌতে পেনাল্টি দেওয়া উচিৎ হয়েছে?
কী ঘটেছিল?
ম্যাচের ৮৯ মিনিটে বক্সের কোণায় বল পেয়ে ব্রুনোকে এগিয়ে আসতে দেখে মাটিতে পড়ে তাকে প্রতিহত করা চেষ্টা করেন হোসে মারিয়া হিমেনেজ। ব্রুনো সেটা দেখেই তার পায়ের ফাঁক দিয়ে বল বের করার চেষ্টা করে। তবে ততক্ষণে তিনি বলটা ঠিকই ঠেলে দিয়েছেন হিমেনেজের পায়ের ফাঁকে। ট্যাকলে নিজেকে ঢেলে দেওয়া হিমেনেজের পা গলে বল বেরিয়ে গেলে মাটিতে ঠেকে যাওয়া তার হাতে লাগে বল, সেই সাথে পর্তুগাল করে পেনাল্টির জোরাল আবেদন। ভিএআরে সেটা দেখে নিশ্চিত হয়ে রেফারি পেনাল্টি দেন ও ব্রুনো পেয়ে যান সেখান থেকে ম্যাচে নিজের ও দলের দ্বিতীয় গোল।
নিয়ম কী বলে?
হ্যান্ডবলের জন্য পেনাল্টির নিয়ম নিয়ে ফুটবল বিশ্বে বিতর্ক কম হয়নি। অনেক কিছু আমলে নিয়েই ২০২১ সালে রেফারিংয়ের দিক নির্দেশনী আইএফএবিতে হ্যান্ডবল ও কোন সব পরিস্থিতে সেগুলো গণ্য হবে না সেগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে।
হ্যান্ডবলের নিয়মটার অনেক অপ্রাসঙ্গিক ও দুষ্পাচ্য কথাবার্তা কাটছাঁট করে পরিষ্কার করে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, এমনকি নিয়মটা বোঝাতে ছবিও সংবলিত রয়েছে সেই বইয়ে। সেখানে পরিষ্কার বলা আছে কোন ক্ষেত্রে শরীর থেকে হাত প্রসারিত থাকলেও হ্যান্ডবল গণ্য হবে না।
‘আপনি যদি কোনও একটা নির্দিষ্ট দিকে আপনার শরীর বাকিয়ে ফেলেন, আপনার শরীর যদি বাতাসে ভেসে থাকা অবস্থা থেকে মাটিতে নেমে আসা সময়ের মাঝে থাকে - এরকম অবস্থাগুলোতে ভারসাম্য বজায় রাখতে যদি আপনার হাত শরীর থেকে প্রসারিত হয় তাহলে সেটা হ্যান্ডবল হিসেবে গণ্য হবে না।”
হিমেনেজ এই জায়গায় তার হাত আর কোথাও রাখতে পারত না। ট্যাকলটা দেওয়ার পর তার শারীরিক ভারসাম্য বজায় রাখতেই হাত শরীর থেকে পেছনে বাড়াতেই হত, এটাই স্বাভাবিক। ব্রুনো সেটা টের পেয়েছিলেন হয়ত, হয়ত সেটারই সুযোগ নিয়েছিলেন। তবে ব্রুনো যাই ভাবুক না কেন নিয়ম অনুযায়ী সেটা পেনাল্টির আওতায় পড়ে না। তবে রেফারি যদি ভেবে থাকেন, হিমেনেজের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল বেরিয়ে যাওয়ার পরে সেই বল আটকাতেই হাত তিনি আরও বাড়িয়েছিলেন তাহলে সেটা তিনি ভাবতেই পারেন। বলের দিক পরিবর্তনটাও হিমেনেজের বিপক্ষেই গিয়েছিল। রেফারি মাঠে থেকে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন দিন শেষে সেটা তিনি অনেক কিছু ভেবেই নিয়েছিলেন। তবে রেফারিং হ্যান্ডবুক অনুযায়ী হ্যান্ডবলের আওতায় এটা পড়ে না।