• ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২
  • " />

     

    রোলারকোস্টার ফুটবলের রাতে গ্রুপসেরা জাপান, বিদায় জার্মানি

    রোলারকোস্টার ফুটবলের রাতে গ্রুপসেরা জাপান, বিদায় জার্মানি    

    জাপান ২:১ স্পেন

    কোস্টারিকা ২:৪ জার্মানি 


    বিশ্বকাপে এরকম রাতের জন্যই অপেক্ষা করে ফুটবল ভক্তরা। ৯০ মিনিটে প্রতিটি দলকে নকআউটের স্বপ্ন দেখিয়ে এবং প্রতিটি দলকে বাদ পড়ে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে দিন শেষ করেছে গ্রুপ ‘ই’। গ্রুপের সব দলের শেষ ম্যাচ কেন একসঙ্গে শুরু হয়, সেটি বুঝাতেই যেন মহড়া নিয়ে হাজির হয়েছিল গ্রুপটি। গোল ও অনুভূতির রোলারকোস্টার শেষে গ্রুপের শীর্ষস্থান দখল করেছে জাপান। হেরেও নকআউটের টিকিট পেয়েছে স্পেন। আর কোস্টারিকার বিপক্ষে জিতেও টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে জার্মানি। 

    দিনটা শুরু হয়েছিল সহজ হিসাব নিয়েই। নিজ নিজ ম্যাচে জিতলে নকআউটে চলে যাবে গ্রুপের দুই পরাশক্তি স্পেন ও জার্মানি। প্রথমার্ধের খেলা সে মাফিকই এগুচ্ছিল। কোস্টারিকার বিপক্ষে ডমিনেট করে ১-০ গোলের লিড নিয়ে মধ্য বিরতিতে যায় জার্মানি। স্পেনও আলভারো মোরাতার গোলে জাপানকে দমিয়ে রেখে বিরতিতে যায়। স্পেন-জার্মানি প্রথমার্ধে তাদের ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করলেও দ্বিতীয়ার্ধের ঝড়ের জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিল না এই দুই পরাশক্তি। 

    জার্মানিকে যেই গেমপ্ল্যানের মাধ্যমে কব্জা করেছিলেন, স্পেনের বিরুদ্ধেও সেটিই প্রয়োগ করেন জাপান কোচ হাজিমি মরিয়াসু। মধ্য বিরতিতে দুজন খেলোয়াড়কে বদলি করেন তিনি, নামান রিতসু দোয়ান ও কাউরু মিতুমাকে। টুর্নামেন্ট ফেভারিট স্পেন দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই উজ্জীবিত জাপানের এম্বুশের মুখে পড়ে। আর এতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন এই বদলি খেলোয়াড়েরা। 

    জার্মানি-ম্যাচের মতো স্পেনের বিপক্ষেও সমতাসূচক গোলটি করেন দোয়ান। ৪৮ মিনিটে স্পেনের রক্ষণের ভুলকে কাজে লাগিয়ে উনাই সিমনকে পরাস্ত করেন তিনি। দুই মিনিটের মাঝে দ্বিতীয় আঘাত হানে জাপান। এবার দোয়ানের লো ক্রস গোলপোস্টের পাশ দিয়ে মাঠের বাইরে চলে যেতে নিলে দৌড়ে গিয়ে তা ভিতরে ঢুকান মিতুমা। এবং সেই বলে ট্যাপ-ইন করে গোল করেন তানাকা। 

    জার্মানি-কোস্টারিকা ম্যাচের স্কোর তখনও ১-০’ই। তৃতীয় স্থানে চলে যাওয়ার দুঃসংবাদ পাওয়া জার্মানির অবস্থা তখন আরও খারাপ করে দেয় কোস্টারিকা। ৫৮ মিনিটে নয়্যারের হাত থেকে বেরিয়ে আসা রিবাউন্ড বল থেকে গোল করে বসেন কোস্টারিকার তায়েদা। ১২ মিনিট পর আরেকটি গোল করে কোস্টারিকা। এবার হিসাব-নিকাশ আবার বদলে যায়। ১-২ গোলে হারতে বসা জার্মানির দুশ্চিন্তা গিয়ে ভর করে স্পেনের ডাগআউটেও। কোস্টারিকা জেতার পথে থাকায় স্পেন যে চলে গেছে তৃতীয় স্থানে। 

    তবে শেষ পর্যন্ত স্পেনকে উদ্ধার করেন কাই হ্যাভার্জ। বদলি নেমে ৭৩ ও ৮৫ মিনিটে জোড়া গোল করেন এই চেলসি তারকা। ৮৯ মিনিটে গোলের খাতায় নাম লেখান ফুলক্রগও। কিন্তু গোল দিয়ে গেলেও জার্মানির ভাগ্য যে তখন আর নিজেদের হাতে নেই। ১-২ গোলে হারতে থাকা স্পেন ড্র করলেই কেবল দ্বিতীয় স্থানে যেতে পারে জার্মানি। 

    স্পেন অবশ্য আর জার্মানির ‘উপকারটা’ ফেরত দেয়নি। জার্মানি এগিয়ে যাওয়ার পর পরই খেলা স্লো করে দেয় তারা। শেষ ১০ মিনিটে আক্রমণে আসার চেষ্টাও তেমন করেনি স্প্যানিয়ার্ডরা। ১-২ গোলের পরাজয় নিয়েও হাসিমুখেই ম্যাচ শেষ করে লুইস এনরিকের দল। করবেই বা না কেন! গ্রুপ রানার আপের নকআউটের রাস্তা গ্রুপ চ্যাম্পিয়নের চেয়েও সহজ হতে পারে। আর স্পেন ও জার্মানির মতো দুই দৈত্যকে বধ করে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নেওয়া জাপান পরবর্তী ম্যাচে মুখোমুখি হবে গতবারের রানার আপ ক্রোয়েশিয়ার। সেই ম্যাচে জয়ী দলের সঙ্গে কোয়ার্টার ফাইনালে দেখা হতে পারে ব্রাজিলের।