অপ্রত্যাশিত বিদায়ের পর কি জার্মানি দলে আসতে যাচ্ছে বড়সড় পরিবর্তন?
কোস্টারিকার বিপক্ষে শেষ চেষ্টায় সফল হলেও অন্য ম্যাচ নিয়ে জার্মানির যে ভয় ছিল সেটাই গত রাতে সত্যি হল। স্পেনকে থমকে দিয়ে জাপান গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন তো হয়েছেই, সেই সাথে বাজিয়ে দিয়েছে জার্মানির বিদায় ঘণ্টা। টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়ার ঘটনা জার্মানির ফুটবল ইতিহাসে প্রথম। হতাশাজনক এই অধ্যায়টা তাই এখনও মেনেই নিতে পারছেন না থমাস মুলার।
জাপান ম্যাচের পর নিজের হতাশা উগরে দিয়েছেন মুলার, “এক কথায় এটা আসলে বিপর্যয়। এটা আমাদের জন্য কতটা তিক্ত অনুভূতি বয়ে এনেছে সেটা আমি কথায় বোঝাতে পারব না। কারণ আমরা শেষ ম্যাচে যা করলাম সেটাই তো যথেষ্ট হওয়ার কথা ছিল। এতো অসহায় লেগেছে বলে বুঝাতে পারব না।”
সেই সাথে মুলার ইঙ্গিত দিয়েছেন জার্মানি দল থেকে সরে দাঁড়ানোর, “ হতে পারে জার্মানির জন্য এটাই আমার শেষ ম্যাচ ছিল। যদি সেরকমটাই হয়, তাহলে আমি বলতে চাই এই যাত্রার পুরোটা নিয়েই আমি অসম্ভব গর্বিত। অসংখ্য ধন্যবাদ!”
মুলারের এই হতাশার সাথে অবশ্য কোচ হানসি ফ্লিক একমত হতে পারছেন না। সম্পূর্ণ দায় তিনি তুলে নিচ্ছেন নিজেদের ঘাড়েই, “ অন্য কোন দল কী করল তাতে আমার কিছু আসে যায় না। আমাদের কাজটা তো আমাদের ঠিকমত করতে হব। আপনি যদি আমাদের আগের ম্যাচগুলো দেখেন, গোল সংখ্যা দেখেন তাহলেই বুঝবেন। আমরা তো স্পেন, জাপানের বিপক্ষে সুবর্ণ সব সুযোগ পায়ে ঠেলে দিয়েছি।”
জার্মানির ভাগ্য নির্ধারণের জন্য অন্য কোনও দলের উপর নির্ভর করতে হয়েছে এটা নিয়ে যে ফ্লিক বেজায় হতাশ সেটা তার কথায় স্পষ্ট, “আপনাকে তো নিজেদের সুযোগটা লুফে নিতে হবে, গোল দিতে হবে। গল্পটা তো অন্যরকম হত যদি আমরা সেটা করতে পারতাম। প্রতিটা ম্যাচেই আমরা প্রচুর ভুল করেছি। যারা ভুলগুলো করেছে তাদের কাছ থেকে আমার রাগ লুকানোর কোনও চেষ্টাও করিনি এবার। পুরো দলকে নিয়েই যে আমি মনঃক্ষুণ্ণ সেটা আমি তাদের সামনেই বলেছি।”
ফ্লিক যে বেশ খেপেছেন সেটা তো তার কথাতেই স্পষ্ট। বেজায় চটার জন্য ফ্লিক যে জার্মান দলকে ঢেলে সাজাবেন সেটাও তিনি স্বীকার করেছেন অকপটে, “ আমাদের দল এবার ভিন্ন পথে হাটবে, আর সেটা খুব দ্রুতই হতে যাচ্ছে। আমাদের সামর্থ্য আছে নিজেদের খুব দ্রুতই গুছিয়ে নেওয়ার, তাই সেটার কোনও বিকল্প আমি দেখছিও না। ভবিষ্যৎটা আমাদের জন্য কেমন হবে সেটা নিয়ে এখনই আমাদের ভেবে সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। আমি অত্যন্ত খুঁতখুঁতে মানুষ। তো সবকিছুর চুলচেরা বিশ্লেষণ করব আমি।”
দলকে ঢেলে সাজানোর অংশ হিসেবেই শোনা যাচ্ছে মুলারের বিদায়ের কথা। সেই সাথে ম্যানুয়েল নয়্যার, মারিও গোটশেদের মত অভিজ্ঞরাও দলে ব্রাত্য হয়ে পড়বেন বলে শোনা যাচ্ছে। মুলারের কথাতেও সেরকম আভাস পাওয়া গিয়েছে। সেটাই যদি হয় তাহলে জার্মানিতে সত্যিকার অর্থেই একটা অধ্যায়ের সমাপ্তি হতে যাচ্ছে। যাদের হাত ধরে এসেছিল জার্মানির চতুর্থ শিরোপা তাদেরকে হয়ত পৃথিবীর চিরায়ত নিয়মানুযায়ী নতুন কুড়িদের জন্য জায়গা করে দিতে হবে।