ব্রাজিলও পেল হারের স্বাদ, নকআউটে নেইমারদের সঙ্গী সুইজারল্যান্ড
ক্যামেরুন ১:০ ব্রাজিল
সার্বিয়া ২:৩ সুইজারল্যান্ড
অঘটনের বিশ্বকাপে আরেকটি বড় অঘটনের জন্ম দিল ক্যামেরুন। ভিনসেন্ট আবুবকরের যোগ করা সময়ের গোলে টুর্নামেন্ট ফেভারিট ব্রাজিলকে হারিয়ে দিয়েছে তারা। প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে এই কীর্তি করলেও গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হচ্ছে ক্যামেরুনকে। কেননা অপর ম্যাচে সার্বিয়াকে ৩-২ গোলে হারিয়ে ‘জি’ গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে নকআউটের টিকিট কেটেছে সুইজারল্যান্ড।
সুইসদের সমান থাকলেও গোল ব্যবধানে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ব্রাজিল। শেষ ষোলোতে দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হবে তিতের দল, সুইজারল্যান্ডকে নামতে হবে পর্তুগালের বিপক্ষে।
আগেই শেষ ষোলো নিশ্চিত করে ফেলা ব্রাজিল অনুমিতভাবেই গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে একাদশে পরিবর্তন আনে। তবে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচজয়ী দলে নয়টি পরিবর্তন এনেও বেশ তারকাখচিত দল নিয়েই নামে পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নরা। মার্টিনেল্লি, জেসুস, রদ্রিগোদের নিয়ে প্রথমার্ধে ক্যামেরুনকে পুরোপুরি ডমিনেট করে ব্রাজিল। কিন্তু আগের দুই ম্যাচের প্রথমার্ধের মতো এই ম্যাচেও গোলমুখে সূক্ষ্মতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয় ব্রাজিলের ফরওয়ার্ডরা। যে কারণে ম্যাচে মোট ২১টি শট নিয়েও গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারেনি জেসুসরা।
গোলশূন্য ড্রয়ের দিকে এগিয়ে যাওয়া এই ম্যাচের সবচেয়ে হাই-ভোল্টেজ মুহূর্তটি আসে যোগ করা সময়ে। ব্রাজিলের নিরলস আক্রমণগুলোর একটি থেকে কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে ক্যামেরুন। রাইট উইং দিয়ে উপর উঠে বক্সে ক্রস করেন বদলি খেলোয়াড় জেরোম বেকেলি। মাপ একটি রান নিয়ে সেই বলে হেড করেন আবুবকর। টুর্নামেন্টে এই ম্যাচের আগ পর্যন্ত একবারও গোলমুখে শটের দেখা না পাওয়া ব্রাজিল অন্তিম সময়ে গোল খেয়ে বসে। এই গোলের জন্যই শেষ পর্যন্ত পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় জেসুসদের।
অপর ম্যাচে অবশ্য একটি রোলারকোস্টার ফুটবল উপহার দিয়েছে সার্বিয়া ও সুইজারল্যান্ড। জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে নামা দুই ইউরোপীয় দল ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই হাই-ইনটেনসিটি ফুটবল খেলতে শুরু করে। পাঁচ গোলের এই ম্যাচে প্রথম জালভেদ করেন সুইস অধিনায়ক জারদান শাকিরি। ২০ মিনিটে দিব্রিল সোয়ের পাস থেকে বক্সের ডান পাশ থেকে বাঁ পায়ের দুর্দান্ত এক শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন সাবেক লিভারপুল তারকা। মিট্রোভিচের গোলে পাঁচ মিনিটের মধ্যে সমতা ফেরায় সার্বিয়া। প্রতিভাবান ফরওয়ার্ডে পূর্ণ সার্বিয়া ৩৫ মিনিটে আবার গোল করে। অধিনায়ক দুসান তাদিচের সহায়তায় এই গোলটি করেন জুভেন্টাস স্ট্রাইকার দুসান ভ্লাহোভিচ। আর এই গোলেই বদলে যায় ম্যাচ ও গ্রুপের হিসাব-নিকাশ। সুইজারল্যান্ড ও ক্যামেরুনকে নিচে ঠেলে সেই মুহূর্তে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে চলে এসেছিল সার্বিয়া।
সার্বিয়ানরা অবশ্য দিন শেষ করে গ্রুপের তলানিতে থেকে। এর পিছনে অবদান রেখেছে ক্যামেরুনের জয়, এবং সুইজারল্যান্ড দলে থাকা এক ক্যামেরুনীয় বংশোদ্ভূতের পারফরম্যান্স। প্রথমার্ধে শেষদিকে রাইট উইং দিয়ে কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে সুইজারল্যান্ড, এবং রাইটব্যাক উইডমারের ক্রস থেকে গোল করেন ক্যামেরুনে জন্মানো ব্রিল এমবোলো।
প্রথমার্ধে সমতা ফেরানোর পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই জয়সূচক গোলটি করে সুইসরা। ৪৮ মিনিটে হওয়া এই আক্রমণটি শুরু করেন এমবোলোই। রাইট উইংয়ে তার পাঠানো বলে ক্রস করেন শাকিরি। বক্সে ফ্লিক করে সেই বল ফ্রয়লারের পায়ে দেন ভারগাস, এবং ফ্রয়লার বল জালে জড়ান। ৩-২ গোলে ম্যাচ শেষ করা সুইজারল্যান্ড টানা তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে উত্তীর্ণ হয়েছে।