সেনেগালকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট পেল সাউথগেটের শিষ্যরা
ইংল্যান্ড ৩:০ সেনেগাল
গ্রুপ পর্বে কোন দল সবচেয়ে বেশি দাপট দেখিয়েছে এই প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই হয়ত বা ইংল্যান্ডের নামই নিতেন। সেখানে ৯ গোল দিয়ে অপরাজিত থাকা ইংল্যান্ড নিজেদের বিশ্বকাপ ইতিহাসে গ্রুপ রাউন্ডে সর্বোচ্চ গোল দিয়েই উঠেছিল। অন্যদিকে সেনেগালের আক্রমণের মুল ভরসা সাদিও মানে বিশ্বকাপ শুরুর আগেই পড়েছিলেন ইনজুরির কবলে। তবুও গ্রুপ পর্বে ৫ গোল দেওয়া সেনেগালের শক্ত রক্ষণভাগের কথা মাথায় নিয়ে ইংল্যান্ডের পথের কাঁটা হিসেবে সেনেগালকে ভেবে থাকলেও সেই ভাবনাকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে খোদ ইংল্যান্ড। দারুণ আক্রমণের পসরা সাজিয়ে জর্ডান হেন্ডারসন, হ্যারি কেইন ও বুকায়ো সাকার গোলে সহজ দিয়েই শেষ আটের টিকেট পেয়েছ ইংল্যান্ড।
ম্যাচের শুরু থেকেই সেনেগালের জীবন কঠিন করে তোলে ইংল্যান্ড। মুহুর্মুহু আক্রমণের পাশাপাশি বলের দখল রেখে সেনেগালকে এক রাশ হতাশায় ডোবালেও গোলপোস্টের গেরো খুলতে পারছিল না ইংলিশরা। ৩৮ মিনিটে ইংল্যান্ড পায় সেই মাহেন্দ্রক্ষণের দেখা। নিচে নেমে এসে কেইন বেলিংহামের উদ্দেশ্যে বল বাড়ালে সেখান থেকে একাধিক ডিফেন্ডারকে ছিটকে ফেলেন তরুণ এই মিডফিল্ডার। ডিফেন্ডারদের সারির মাঝেই দারুণ এক পাসে ফাঁকায় থাকা হেন্ডারসনকে খুঁজে নিলে সেখান থেকেই নিচু এক শটে ইংল্যান্ডকে প্রথম গোল এনে দেন তিনি। ৩২ বছর ১৭০ দিন বয়সে গোলের দেখা পেয়ে সেই সাথে হেন্ডারসন হয়ে গিয়েছেন ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্বিতীয় বয়োজ্যেষ্ঠ খেলোয়াড়।
হেন্ডারসন গোলের গেরো খুলতেই গোলের রাস্তাটা পরিষ্কার হয়ে যায় ইংল্যান্ডের জন্য। সেই বেলিংহামের পা থেকেই প্রতি আক্রমণ শুরু হলে তিনি খুঁজে নেন ফোডেনকে। বল পাওয়ার প্রথম ছোঁয়াতেই তিনি কেইনের উদ্দেশ্যে পাস ছেঁড়ে দিলে ঠান্ডা মাথায় বল জালে জড়ান ইংল্যান্ড অধিনায়ক, সেই সাথে গত বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুট জয়ী এবারের বিশ্বকাপে পান নিজের প্রথম গোলের দেখা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণের ধারা অব্যাহত রাখলে ৫৭ মিনিটের মাথায় আবারও গোলের দেখা পায় ইংল্যান্ড। বাঁ প্রান্তে বল পেয়ে ফোডেন দারুণ কৌশলে ডিফেন্ডারদের বোকা বানান, আর জোরাল এক ক্রস বাড়ান বক্সের মাঝে। বক্সের ভেতর ওঁত পেতে থাকা সাকা সেই বল মেন্ডির মাথার ওপর দিয়ে আলতো ছোঁয়াতে তুলে দিয়ে পেয়ে যান এই আসরে নিজের ও আজকের ম্যাচের তৃতীয় গোলের দেখা। সেই সাথে ১২তম গোল দিয়ে গত বিশ্বকাপে নিজেদের রেকর্ড স্পর্শ করে ইংল্যান্ড, যা নিজেদের এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। এরপরেও ইংল্যান্ড আক্রমণ করে গেলেও মূলত বলের দখল রাখার ওপরেই ছিল তাদের মনোযোগ। ম্যাচে তাই কোনও মুহূর্তেই ফেরার সুযোগ পায়নি সেনেগাল। এর আগের ৯ বারের মধ্যে ৮ বারই আফ্রিকান দলগুলো কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারেনি ইউরোপিয়ান প্রতিপক্ষের কাছে হেরে; পেরেছিল শুধু এই সেনেগালই, পেরেছিল এই আলিউ সিসের দল। তবে কোচ সিসের আরও একবার সেই অঘটন ঘটানো হল না। ইংল্যান্ড তাই কোয়ার্টারে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের।