তুলনায় যেতে নারাজ সাকা বললেন, 'বিশ্বে এমবাপে একটাই, সাকাও একজনই'
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের সাথে কোয়ার্টার ফাইনালে দেখা হয়ে যাচ্ছে ইংল্যান্ডের। এখন পর্যন্ত ১২ গোল করে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ইংল্যান্ডকে সামলাতে হবে এরখন পর্যন্ত ৫ গোল দিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা কিলিয়ান এমবাপেকে। গতবার বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন, পেলের পর প্রথম টিনেজার হিসেবে ফাইনালে গোল দিয়েছেন, সেই সাথে জিতেছেন টুর্নামেন্টের সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের খেতাব। চার বছর পর বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম শীর্ষ তারকা যেন যেখানে শেষ করেছিলেন গত আসরে, এবার সেখান থেকেই শুরু করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই এমবাপেকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তাকে নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই, প্রশ্ন এসেছিল বুকায়ো সাকার কাছেও। এবারের এমবাপে তিনিই হতে যাচ্ছেন কিনা এমন প্রশ্ন এবারে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ গোলদাতা একেবারে হেসেই উড়িয়ে দিয়েছেন।
সাকা আর্সেনালের ফর্মটা এবার জাতীয় দলেও টেনে এনেছেন। গত ইউরোতে টাইব্রেকারে পেনাল্টি মিস করেছিলেন ফাইনালে। এরপর টিটকারি, তিরস্কার, এমনকি বর্ণবাদী মন্তব্য কম শুনতে হয়নি তাকে। সেসব পেছনে ফেলে সাকা ঠিকই দেখিয়েছেন কেন তাকে ইংল্যান্ড ফুটবলের ভবিষ্যৎ তারকা ধরা হয়। সত্যি বলতে এখনই যে তিনি ইংল্যান্ডের সাফল্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সেটা তো এমবাপের সাথে তুলনা করাটাতেই স্পষ্ট।
তবে সেসব তুলনাতে যেতে নারাজ সাকা। প্রশ্নটা শুনে প্রায় কয়েক সেকেন্ড হাসলেন তিনি। পরে সাকা জানান, "ধন্যবাদ আমাকে এই কাতারে রাখার জন্য। কিন্তু না, বিশ্বে এমবাপে একটাই। একইভাবে, আমিও কিন্তু একটাই। আমি সাকাই হতে চাই, আর দলকে যতটা সম্ভব সাহায্য করতে চাই।"
পরে এবারের বিশ্বকাপের সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের খেতার কে জিততে পারে সেটার উত্তরে তিনি বলেন, "এবারের আসরে এতো ভাল কিছু তরুণ খেলোয়াড় আছে যে বলতে গেলে শেষ হবে না। এমনকি আমাদের দলের কথায় ধরুন, অভাব নেই কিন্তু। জুড বেলিংহামকেই দেখুন, অবিশ্বাস্য খেলা দেখাচ্ছে সে!"
নিজেও এবার এই খেতাব জয়ের দৌড়ে আছেন নাকি জানতে চাইলে এবারও সাকা নম্রতার সাথে জানালেন, "না, টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় বা সেরা তরুণ খেলোয়াড় হওয়ার কথা মাথায়ও আনছি না। আমি দলের সাথে একসাথে থাকতে পারে, ভাল করতে পেরেই খুশি। এখন আমাদের মুল লক্ষ্য টুর্নামেন্ট জেতা।"
গত ইউরোর সেই পেনাল্টি মিসের কথা আরও একবার মনে করিয়ে দেওয়া হল ঠান্ডা মাথায়ই উত্তর দেন এই আর্সেনাল তারকা, " ওই মুহূর্তটার (ইউরো ফাইনালে পেনাল্টি মিস) পর আমার মনে হয় আমি বেশ পরিণত হয়েছি, মানুষ হিসেবেও, খেলোয়াড় হিসেবেও। সত্যি বলতে, ওই মুহূর্তটা পেছনে ফেলে আসার অনেক চেষ্টা করেছি আমি। অবশ্যই সেটা কখনই মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলা যাবে না, ইতিহাসের পাতায়ও যে সেটা ঢুকে গিয়েছে। তবে এই যে আমি এখানে আসলাম, গোলও দিচ্ছি। এই মুহূর্তগুলো আশা করি আমাকে সাহায্য করবে ওই রাতটা পেছনে ফেলে আসতে।"
বিশ্বকাপের এবারের সর্বোচ্চ গোল দেওয়া দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা যে নিশ্চিতভাবেই নিজেকে মেলে ধরছেন তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশের কোনও অবকাশ নেই। সাকা তাই নিজেকে এমবাপের কাতারে নিজেকে দেখুক বা না দেখুক, তিনি যে এবারের বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়দের একজন সেটা তিনি মাঠের খেলাতেই দেখাচ্ছেন।