রামোসের দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে পর্তুগালের সুইস ব্যাংক লুট
পর্তুগাল ৬:১ সুইজারল্যান্ড
আচমকাই একাদশে ডাক পান গনসালো রামোস। তাও আবার বিশ্বকাপের নকআউটে। এবং তাকে দেওয়া হয় পর্তুগাল দলের সবচেয়ে ভারী বুটজোড়া পূর্ণ করার দায়িত্ব। যার জায়গা নিয়েছেন, সেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোই যখন বিশ্বকাপের নকআউটে কখনো গোলের দেখা পাননি, তখন সবাইকে অবাক করে দিয়ে দুর্দান্ত সব ফিনিশিংয়ে রামোস পূর্ণ করলেন বিধ্বংসী এক হ্যাটট্রিক। পুরো জাতির প্রত্যাশার ভার নিয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে স্মরণীয় পারফরম্যান্সগুলোর একটি উপহার দিলেন এই ২১ বছর বয়সী।
এই বিস্ময়বালকের রাতে সুইজারল্যান্ডের জালে তাণ্ডব চালিয়েছে পর্তুগাল, ৬-১ গোলের জয় নিয়ে ১৬ বছর জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে।
রোনালদো যে আজকে মূল একাদশের বাইরে থাকতে পারেন সেই ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন কোচ ফার্নান্দো সান্তোস। কিন্তু তার জায়গায় বেনফিকা স্ট্রাইকার রামোসকে নামানো হবে, সেটি হয়তো আশা করেনি কেউ। কখনোই পর্তুগালের হয়ে ম্যাচ শুরু না করা রামোস এর আগে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলেছেন মাত্র ৩৩ মিনিট।
তবে সান্তোসের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন রামোস। শুধু রামোসই না, জোয়াও ক্যান্সেলোর জায়গায় নামা রাফায়েল গেরেরোসহ সান্তোসের আনা সবকটি ট্যাকটিকাল পরিবর্তনই কাজে দিয়েছে আজ। ফেলিক্স-রামোস-ফার্নান্দেজ-সিলভায় গড়া পর্তুগালের নতুন আক্রমণভাগ লুইসাইল স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই ত্রাস সৃষ্টি করতে শুরু করে। ম্যাচের ১৭ মিনিটে ফেলিক্সের পাস নিয়ে বক্সের বাঁ পাশ থেকে ফেরানোর অযোগ্য এক কোণে শট নিয়ে বল জালে জড়ান রামোস। বিশ্বকাপের নকআউটে ১৭ মিনিট খেলেই ছাড়িয়ে যান পাঁচ বিশ্বকাপ খেলা রোনালদোর গোলসংখ্যাকে।
দলের কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় গোল পাওয়ার পর ৩৩ মিনিটে কর্নার থেকে গোল করে দলের জ্যেষ্ঠতম খেলোয়াড়, পেপে। এই ৩৯ বছর বয়সী ডিফেন্ডার এখন বিশ্বকাপের নকআউটে গোল দেওয়া সর্বজ্যেষ্ঠ ফুটবলার।
২-০ গোলে এগিয়ে মধ্য বিরতিতে যাওয়া পর্তুগালের আক্রমণ দ্বিতীয়ার্ধে আরও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। ৫১ মিনিটে রাইটব্যাক ডিয়োগো দালোর নেওয়া লো ক্রসে পা ছুঁইয়ে গোলরক্ষককে নাটমেগ করে গোল দেন রামোস। শুধু নিজেই গোল দেননি, চার মিনিটের মাথায় এক কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গেরেরোকে একটি গোল বানিয়েও দেন রামোস।
৬৭ মিনিটে আরেকটি ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন রামোস। এবার ফেলিক্সের বাড়ানো বল নিয়ে বক্সে ঢুকে যান তিনি, সামনে এগিয়ে গোলরক্ষককে চিপ করে জালে জড়ান বল। কাতার বিশ্বকাপে এটিই প্রথম হ্যাটট্রিক।
৭৪ মিনিটে রামোসের বদলি হিসেবে নামেন রোনালদো। এরপর আক্রমণের মাত্রা কিছুটা কমে গেলেও রোগ করা সময়ে দুর্দান্ত এক বাঁকানো শটে গোল করেন আরেক বদলি খেলোয়াড়, রাফায়েল লিয়াও। সুইজারল্যান্ডের হয়ে ম্যানুয়েল আকানজির করা ৫৮ মিনিটের গোলটি সান্ত্বনা হিসেবেই থেকে যায়।
এবারের নকআউট পর্বের সবচেয়ে বড় জয় নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে পর্তুগাল। শেষ আটে তাদের প্রতিপক্ষ মরক্কো।