• ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২
  • " />

     

    মেসি-মার্টিনেজে আবারও হল্যান্ড-বধ আর্জেন্টিনার

    মেসি-মার্টিনেজে আবারও হল্যান্ড-বধ আর্জেন্টিনার    

    নেদারল্যান্ডস (৩) ২-২ (৪) আর্জেন্টিনা 


    ২০১৪ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে হারের প্রতিশোধ নেওয়ার কথা বলেই আজকের ম্যাচে এসেছিল লুই ভ্যান গালের নেদারল্যান্ডস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেদের প্রতিশোধ পরিকল্পনার ফাঁদে পড়েই আরও একবার টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনার কাছে হেরে বিদায় নিল হল্যান্ড। নকআউটে আর্জেন্টিনার আরও একবার হল্যান্ড-বধের নেপথ্যে ছিলেন লিওনেল মেসি ও এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। মেসির গোল-অ্যাসিস্টে দুই গোলের লিড পাওয়া আর্জেন্টিনা রক্ষণের অপারগতায় হল্যান্ডকে ম্যাচে ফিরে আসার সুযোগ দিলেও শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি শ্যুট-আউটে দলকে উদ্ধার করেন গোলরক্ষক মার্টিনেজ। 

    দুই দলই পাঁচ ডিফেন্ডার নিয়ে একাদশ সাজিয়ে আভাস দিচ্ছিল কাউন্টার-অ্যাটাক নির্ভর ফুটবলের। কোনো দলই প্রেস না করে খেলায় ম্যাচের শুরুটা হয় ম্যাড়ম্যাড়েভাবে। তবে প্রতি ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও আর্জেন্টিনার মুশকিল আহসান হয়ে হাজির হন মেসি। ৩৫ মিনিটে মিডফিল্ডের ডান পাশ থেকে বল নিয়ে এক মিডফিল্ডারকে পাশ কাটিয়ে, আরেকজনকে নাটমেগ করে বাঁ পায়ের নিখুঁত এক পাসে খুঁজে নেন দুই সেন্টারব্যাকের মাঝখান দিয়ে বক্সে রান নেওয়া নেহুয়েল মলিনাকে। রাইটব্যাক হয়েও বক্সে নিজের কম্পোজার বজায় রাখেন মলিনা, কয়েক কদম এগিয়ে জাল খুঁজে নেন তিনি। 

    ১-০ ব্যবধানেই শেষ হয় প্রথমার্ধ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে হল্যান্ড আরেকটু আগ্রাসী হওয়ার চেষ্টা করলেও গোলমুখে তেমন সুযোগ করতে পারেনি। বরং ৭১ মিনিটে এক রক্ষণাত্মক ভুলে নিজেদের কপাল পোড়ায় হল্যান্ড। লেফট উইং দিয়ে বক্সে ঢুকার চেষ্টা করা আকুনাকে ফাউল করে বসেন ডামফ্রিজ। পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। সেই ঠাণ্ডা মাথায় পেনাল্টিটি জালে জড়িয়ে বিশ্বকাপে নিজের চতুর্থ গোল করেন মেসি। 

    ৭৮ মিনিটে বদলি নামেন ভাউট ভেগহর্স্ট। লুক ডি ইয়ংকে সাথে নিয়ে আর্জেন্টিনার রক্ষণ হেডের জন্য পজিশন নিতে শুরু করেন এই ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি স্ট্রাইকার। একের পর এক ক্রস করতে থাকা নেদারল্যান্ডসের একটি ক্রস গিয়ে ঠিকই খুঁজে নেয় ভেগহর্স্টকে। ৮৩ মিনিটে বারগুয়াইসের ক্রস থেকে গোল করেন এই বেসিকতাস স্ট্রাইকার। 

    ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে চলা ম্যাচে নির্ধারিত সময়ের শেষে ১০ মিনিট যোগ করা হয়। এবং এই দশ মিনিটের একদম শেষ মুহূর্তে এসে আর্জেন্টিনার বক্সের সামনে একটি ফ্রিকিক পায় হল্যান্ড। পুরো ম্যাচে ভেগহর্স্টের মাথা টার্গেট করা হল্যান্ড সেই ফ্রিকিকে এক অভিনব বুদ্ধি আটে। ফ্রিকিকে আলতো করে বক্সে পাস দিয়ে ভেগহর্স্টকে খুঁজে নেন কোপমেইনার্স। ঘুরে সেই পাসকে জালে জড়ান ভেগহর্স্ট। শেষ সেকেন্ডে ম্যাচে ফিরে আসে হল্যাড। 

    মূল ৯০ মিনিটের মতো অতিরিক্ত সময়েও আর্জেন্টিনাই বেশি আক্রমণ চালায়। ১২০ মিনিটে দূরপাল্লা এক শটে নপার্টকে পরাস্ত করেই ফেলেছিলেন এনজো ফার্নান্দেজ। সেই শট বারে লেগে ফিরে গেলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। 

    সেই টাইব্রেকারে হল্যান্ডের প্রথম দুটি শটই ফিরিয়ে আর্জেন্টিনাকে জয়ের দোরগোড়ায় নিয়ে যান মার্টিনেজ। শেষ পেনাল্টিকে লাউতারো মার্টিনেজ গোল দিয়ে আর্জেন্টিনাকে উদযাপনের সুযোগ করে দেন। 

    দ্বিতীয়বারের মতো হল্যান্ডকে টাইব্রেকারে হারিয়ে সেমির টিকিট নিশ্চিত করল আর্জেন্টিনা। সেমিতে মেসিদের মুখোমুখি হবে লুকা মদ্রিচের ক্রোয়েশিয়া।