পরিচিত ফর্মুলায় ব্রাজিলকে স্তব্ধ করে সেমিতে ক্রোয়েশিয়া
ক্রোয়েশিয়া (৪) ১:১ (২) ব্রাজিল
দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে জেতার পর নেইমাররা বলেছিলেন, তাদের চোখ ফাইনালে। দুর্দান্তভাবে গ্রুপ পর্ব ও নকআউট পর্ব শুরু করা ব্রাজিলকে ফাইনালে দেখতে পাচ্ছিল আরও অনেকেই। টুর্নামেন্ট ও ম্যাচ পূর্ববর্তী সকল ভবিষ্যদ্বাণীকে নিকুচি করে আরেকটি ফেভারিট ব্রাজিলকে থামিয়ে দিল ক্রোয়েশিয়া, ফর্মুলা-নির্ভর ফুটবলে আদায় করে নিল আরেকটি আশ্চর্যজনক নকআউট জয়।
গত বিশ্বকাপে নকআউটের সবকটি ম্যাচে ১২০ মিনিট খেলে ফাইনালে উঠেছিল জলাতকো দালিচের দল। এবারও জাপানকে একই ধারায় হারিয়ে নকআউট পর্ব শুরু করে তারা। তাই ব্রাজিলের বিপক্ষেও যে একই গেমপ্ল্যান থাকবে ক্রোয়েশিয়ার তা অনুমিতই ছিল।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ক্রোয়েশিয়ার এই অনুমানযোগ্য গেমপ্ল্যানেরও কোনো জবাব ছিল না ব্রাজিলের কাছে। প্যাসিভ ফুটবল খেলেই ৯০ মিনিট পার করে দেয় ক্রোয়েশিয়া। এবং প্রতি ম্যাচের এবারও গুছানো সব আক্রমণ করেও গোলের দেখা পাচ্ছিল না ব্রাজিল।
নির্ধারিত সময় গোলশূন্য অবস্থায় শেষ হলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ক্রোয়েশিয়া তাদের গেমপ্ল্যানের প্রথম অংশ সঠিকভাবেই পালন করে।
অতিরিক্ত সময়ে অবশ্য আলোর দেখা পায় ব্রাজিল। ম্যাচে অল্পের জন্য সবাই একের পর এক গোল মিস করে যাওয়ার পর নেইমার যেন বিরক্ত হয়েই গোলের দিকে রওনা হন। ১০৬তম মিনিটে দুই সতীর্থের সঙ্গে ওয়ান-অন-ওয়ান করে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন এই ৩১ বছর বয়সী। গোলরক্ষককেও কাটিয়ে করেন গোল।
এই গোলের মাধ্যমেই পেলের রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন নেইমার। কিন্তু ব্রাজিলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা (৭৭) হবার দিনটি অবশ্য হাসিমুখে শেষ হয়নি তার। ১১৭ মিনিটে, যখন সেমিফাইনালের দোরগোড়ায় চলে এসেছিল ব্রাজিল, তখনই ম্যাচের সবচেয়ে আঘাতটি হানে ক্রোয়েশিয়া। পুরো ম্যাচে গোলমুখে একটি শটও না নেওয়া ক্রোয়েটদের কপাল খুলে যায় দুর্ভাগ্যজনক এক ডিফ্লেকশনে। বদলি নামা ব্রুনো পেতকোভিচের অতি-সাধারণ শট থিয়াগো সিলভার পায়ে লেগে জায়গা করে নেয় জালে। স্তব্ধ হয়ে যায় ব্রাজিল শিবির।
এক প্রচেষ্টায় এক গোল দিয়ে দেওয়া ক্রোয়েশিয়া তাদের গেমপ্ল্যানের দ্বিতীয় অংশও সম্পন্ন করে সফলভাবে। এবার টাইব্রেকারের পালা। যেন এই টাইব্রেকারের জন্য পুরো ম্যাচ অপেক্ষা করছিল ক্রোয়েটরা। ভ্লাসিচ থেকে ওরসিচ, ক্রোয়েশিয়ার চারটি পেনাল্টিই ছিল নিখুঁত ও আত্মবিশ্বাসে পূর্ণ। অপরদিকে ব্রাজিল জাপান, স্পেনের পথ ধরে একটি দুর্বল লাইনআপ নিয়ে নামে শ্যুট-আউটে। রদ্রিগো ও মার্কুইনোজের মিসে চারেই শেষ হয়ে যায় শ্যুট-আউট। পেনাল্টি নেওয়ার সুযোগই পাননি ব্রাজিলের মূল তারকা নেইমার।