• ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২
  • " />

     

    মরক্কোর ইতিহাস, রোনালদোদের কান্নার বিদায়

    মরক্কোর ইতিহাস, রোনালদোদের কান্নার বিদায়    

    মরক্কো ১:০ পর্তুগাল  


    আফ্রিকা ও আরব বিশ্বের মোট ১৬০ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করা মরক্কো আরেকটি শক্ত ডিফেন্সিভ প্রদর্শনীতে অব্যাহত রেখেছে তাদের ফরেস্ট গাম্পসুলভ বিশ্বকাপযাত্রা। পর্তুগালের বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস এক কোয়ার্টার ফাইনাল শেষে তারা বেড়িয়ে এসেছে ১-০ গোলের জয় নিয়ে, সাথে সাথে প্রথম আরব ও আফ্রিকান দেশ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। 

    মরক্কোর ইতিহাস গড়ার রাতটি আবার কান্নায় আবার শেষ হয়েছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবলারদের একজন হিসেবে খ্যাত এই পর্তুগিজের ক্যারিয়ার শেষ হচ্ছে বিশ্বকাপের দেখা না পেয়েই। কখনো এই টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালই খেলতে না পারা রোনালদোর জন্য নকআউট পর্বের গোলও অধরাই থেকে গেল। 

    এবারের আসরে এখনো কোনো প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়কে গোল দেওয়ার সুযোগ না দেওয়া মরক্কোর রক্ষণ ভাঙাই ছিল পর্তুগালের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ। আগের ম্যাচে সুইজারল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়ে ফেভারিটদের খাতায় নাম লেখানো পর্তুগাল এই ম্যাচও শুরু করে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে। এবং যথারীতি ম্যাচের শুরু থেকে দুই উইংয় ও মধ্যমাঠে স্বাধীনতা নিয়ে দলের জন্য সুযোগ তৈরি করার চেষ্টা করে যান ব্রুনো ফার্নান্দেজ ও জোয়াও ফেলিক্স। কিন্তু প্রথমার্ধে পর্তুগিজদের সব প্রচেষ্টা বৃথা যায় গোলরক্ষক ডিয়োগো কস্তার অপটুতায়। ৪২ মিনিটে লেফটব্যাক ইয়াহিয়া আত্তিয়াত আল্লাহর ক্রস বক্সে আসতে দেখে বিশাল বড় লাফ দিয়ে তাতে মাথা ছুঁয়ান মরক্কো স্ট্রাইকার ইউসেফ এন-নেসেরি, ভুল লক্ষ্যে লাফ দেওয়া কস্তাকে দর্শক বানিয়ে সেই বল জালে জড়ায়। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় মরক্কো।  

    মরক্কো গোল দেওয়ার সাথে সাথেই আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় পর্তুগাল। প্রথমার্ধের বাকি কয়েক মিনিটে কয়েকবার সমতা ফেরানোর কাছাকাছি চলে এসেছিল তারা। বিশেষ করে ব্রুনো ফার্নান্দেজের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট ক্রসবারে লেগে ফিরে না আসলে দুই মিনিটের মধ্যেই সমতা ফিরিয়ে ফেলত ফার্নান্দো সান্তোসের দল। 

    দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই রোনালদোকে বেঞ্চ থেকে ডেকে পাঠান সান্তোস। মিডফিল্ডার রুবেন নেভেসের বদলি নামা রোনালদো পর্তুগালের আক্রমণভাগে লোকের সংখ্যা বাড়ালেও মরক্কো রক্ষণের সামনে তেমন সুবিধা করতে পারেননি। মোট ৩৯ মিনিট খেলে রোনালদো বল স্পর্শ করেছেন মাত্র ১০ বার। তিনটি পাস ও একটি শট নিতে পেরেছেন তিনি। যোগ করা সময়ে বক্সের সামনে ফাঁকায় বল পেয়ে যাওয়া রোনালদোর শট অবশ্য সহজেই ফিরিয়ে দিয়েছেন মরক্কো কিপার ইয়াসিন বনো। 

    শুধু রোনালদো না, বনোর কাছে পাত্তা পায়নি পর্তুগালের কোনো অ্যাটাকারই। ম্যাচের শেষ ৩০ মিনিটে পর্তুগালই শুধু একাধারে আক্রমণ করেছে। কিন্তু লড়াকু ডিফেন্ডিংয়ে পুরো টুর্নামেন্টের মতো এই ম্যাচেও গোলমুখ সুরক্ষিত রাখে ওয়ালিদ রেগ্রাগুইর দল, লিয়াও-ফেলিক্সদের জন্য দেয়াল হিসেবে উপস্থিত হন ৩১ বছর বয়সী বনো।