• আইপিএল ২০২৩
  • " />

     

    লখনৌর মুশকিলে আসান হবেন পুরান?

    লখনৌর মুশকিলে আসান হবেন পুরান?    

    এলেন কারা, গেলেন কারা

    চার বিদেশিকে ছেড়ে দিয়েছিল লখনৌ, সেখানে জেসন হোল্ডারের নাম অপ্রত্যাশিতই ছিল। দুই পেসার দুশ্মন্ত চামিরা ও এন্ড্রু টাইকে স্কোয়াড থেকে ছাটাই করে দলে ভিড়িয়েছে নতুন দুই অলরাউন্ডারকে। অজি ড্যানিয়েল স্যামস ও ক্যারিবিয়ান রোমারিও শেফার্ড। ইভিন লুইসের বিয়োজনে লখনৌ শিবিরে সংযোজন ঘটেছে নিকোলাস পুরানের। আইপিএলে নতুন আগমন নাভিন উল হকের। দেশিদের মাঝে মানিশ পান্ডে, আঙ্কিত রাজপুতদের ছেড়ে দিয়ে লখনৌ যুক্ত করেছে কয়েক আনকোরাকে, তবে এনেছে অভিজ্ঞ অমিত মিশ্র ও জায়দেব উনাদকেতকেও। 

    সম্ভাব্য সেরা একাদশ

    স্যামস, শেফার্ড, মায়ার্স- অলরাউন্ডারদের নিয়ে একাদশে অদল-বদল আনতে পারে লখনৌ। 

    ১। ডি কক

    ২। রাহুল

    ৩। হোডা

    ৪। পুরান

    ৫। স্টয়নিস

    ৬। বাদোনি

    ৭। ক্রুনাল

    ৮। গৌতম / কারান 

    ৯। আভেশ

    ১০। বিশ্নই

    ১১। উড / স্যামস

    ব্যাটিং - মিডল অর্ডারের মুশকিলে আসান হবেন পুরান? 

    আর কোনও দল যেখানে পাঁচশের বেশি রান করা দুই ব্যাটারকেই পায়নি, লখনৌ তা পেয়ে গেছে দুজন ওপেনারেই। বিপত্তি আসলে বেধেছিল মিডল অর্ডারে। চার থেকে সাত নাম্বার ব্যাটিং পজিশন থেকে সবচেয়ে কম রান পেয়েছে লখনৌ। তার মধ্যেও মৌসুমে ৪৫১ রান করা দীপক হোডার অর্ধেকের বেশি রানের অবদান ছিল। দেশিদের মধ্যে মানিশ পান্ডে, আয়ুশ বাদোনি, ক্রুনাল পান্ডিয়ারা গেল আসরে ব্যর্থই ঠেকেছেন। বিদেশি স্টয়নিস ও হোল্ডারও ছিলেন ওই পথেরই পথিক। স্টয়নিস তো ১৫ গড় আর ১৩৫ এর কম স্ট্রাইক রেটের ব্যাটিংয়ে নিরাশই করেছেন।

    লখনৌ ডাগআউটে যা ব্যাটিং বিকল্প ছিল, তারা ছিলেন দুই ওপেনার লুইস ও মায়ার্স। টপ, মিডল অর্ডার সবখানেই ব্যর্থ লুইসকে এবার বিদায় দিয়ে লখনৌ ১৬ কোটি খরচায় সংযুক্ত করেছে পুরানকে। সর্বোচ্চ সামর্থ্যের পুরান লখনৌর মিডল অর্ডারের দুর্দশা দূরে নিঃসন্দেহে অন্যতম শক্তি। পুরান ব্যর্থ হলে দেশি ব্যাটারেই ভরসা রাখতে হবে, আর লখনৌর ডেরায় অভিজ্ঞ দেশি ব্যাটারের অভাবই রয়েছে। ডি ককের সঙ্গে রাহুল, পুরান-স্টয়নিস আর হোডা- একের পর এক ম্যাচ উইনারে সাজানো এই লাইনআপ প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ঙ্করই বটে। প্রয়োজনে বাদোনি, ক্রুনালদের থেকে ম্যাচ উইনিং ক্যামিও পেয়ে গেলে তো হলোই!

    দেশি বিকল্পের মধ্যে কৃশ্নাপ্পা গৌতমের সাথে আছেন কারান শর্মা। বিদেশি বিকল্প আছেন দুই অলরাউন্ডার। সুযোগ পেলে স্যামসও তার হিটিং সামর্থ্যে হতে পারেন কার্যকরী। রোমারিও শেফার্ডের রক্তেই ক্যারিবিয়ান হিটিং পাওয়ার। লখনৌর সমর্থকেরা দিনশেষে 'ধারাবাহিক' রাহুলেই ভরসা পাবেন। গেল পাঁচ আইপিএল মিলে একজন ব্যাটসম্যানই শুধু তিন হাজারের বেশি রান করেছেন, সেই একজন লোকেশ রাহুল। গত পাঁচ আসরের প্রত্যেকটিতেই রান করেছেন পাঁচশের বেশি। গেল আইপিএলে ১৫০’র কাছাকাছি স্ট্রাইক রেটে ৫০৮ রান এসেছে ককের ব্যাট থেকেও। হোডা করেছেন ৪৫১ রান। এই টপ অর্ডারের সাথে মিডল অর্ডারও যদি ক্লিক করে ফেলে, তবে লখনৌ ঠেকানো হবে মুশকিল! 

    বোলিং- শুরু আর শেষের সমস্যার সমাধান হবে এবার? 

    মহসিন খান যে-ই দুর্দান্ত আইপিএল শেষ করলেন গতবার, এরপর আর কোথাও দেখা যায়নি তাকে। এই আইপিএলের আগে লম্বা ইনজুরি কাটিয়ে ফেরার কথা ছিল, কিন্ত অধিকাংশই মিস করার সম্ভাবনা। গেল আসরে ছয়ের কম ইকোনমিতে ৯ ম্যাচে ১৪ উইকেট নেওয়া মহসিন লখনৌর বড় লস, কিন্ত ফ্র‍্যাঞ্চাইজিদের সবসময়ই ইনজুরি ধাক্কা কাটাতে প্রস্তত থাকতে হয়। লখনৌ অনেকটুকু লাইক-ফর-লাইক বদলি এনে তা করেছে এবার। বাঁহাতি পেস নিয়ে আছেন উনাদকেত। 

    গত আসরে ডেথ ওভারে সবচেয়ে খারাপ করেছে লখনৌ, শেষ চার ওভারে তারা ওভারপ্রতি দিয়েছে ১১.৬৫ রান। পাওয়ারপ্লেতেও বেঙ্গালুরু বাদে তারাই ছিল সবচেয়ে বাজে। পেস বিভাগে আভেশ খান এবারও লখনৌকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ। আছেন বিদেশি দুই পেসার মার্ক উড আর নাভিন-উল-হক। উডের পেস মাঝেমধ্যে খরুচে হতে পারে, তবে নিজের দিনে একাই ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা রাখেন এই ইংলিশ পেসার। আইপিএলের মঞ্চের পরীক্ষা তো সর্বোচ্চ পর্যায়ের, তবে নাভিনের ডেথে সাড়ে আটের মতো ইকোনমি তার দক্ষতারই প্রমাণ দেয়। ড্যানিয়েল স্যামসের বাঁহাতি পেসেও ভরসা রাখার সাহস করাই যায়। রোমারিও শেফার্ডের বোলিংয়ে ততটা ধার না থাকলেও হাতে আছেন তিনিও, হাত ঘোরাতে পারেন আরেক বিকল্প কাইল মায়ার্সও। শুরু আর শেষের সমস্যা কিছুটা দূর হলে যে স্পিন বিভাগ আছে, তাতে লখনৌর বোলিংও হয়ে উঠে যথেষ্টই শক্তিশালী। 

    যদিও তরুণ লেগি রবি বিশ্নই গেল আসরে ঠিক জ্বলে উঠতে পারেননি। এবার লখনৌ ব্যাকআপ রেখেছে অমিত মিশ্রর অভিজ্ঞতা। স্পিন বিভাগে বিশ্নইয়ের সাথে ক্রুনালের বাঁহাতি স্পিন হবে গুরুত্বপূর্ণ। ঘরে-বাইরের খেলায় প্রতিপক্ষ বিবেচনায় কাজে লাগতে পারে গৌতমেরও অফ স্পিন। স্টয়নিস-হোডা থাকায় রাহুলের হাতে অবশ্য বোলিংয়ে বাড়তি অপশন থাকবেই।

    কুঁড়ি থেকে ফুল হওয়ার পালা

    গেল আইপিএলে লখনৌ তাদের প্রথম ম্যাচেই ২৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে পড়েছিল মহাবিপদে। সেদিনই আয়ুশ বাদোনি ৫৫ রানের এক ইনিংসে সম্ভাবনার গান শুনিয়েছিলেন। এরপর বাইশ বছরের বাদোনির সেভাবে রানের ঝঙ্কার তোলা হয়নি। ১২৪ স্ট্রাইক রেটে তার ব্যাট থেকে ২০ গড়ে এসেছিল ১৬১ রান। সুযোগ পেলে এবার নিশ্চয়ই নিজেকে নিয়ে যেতে চাইবেন কয়েক ধাপ উপরে। 

    গেলবারের অবস্থান

    আইপিএলের দুনিয়ায় প্রথমবার এসেই প্লেঅফে গিয়েছিল লখনৌ, তবে এলিমিনিটেরই আটকে যেতে হয়েছিল।