• আইপিএল ২০২৩
  • " />

     

    নতুন অধিনায়ক, বেইরস্টোহীন পাঞ্জাবের ভরসা পেস আর পাওয়ার?

    নতুন অধিনায়ক, বেইরস্টোহীন পাঞ্জাবের ভরসা পেস আর পাওয়ার?    

    এলেন কারা, গেলেন কারা

    পাঞ্জাব নিলামে নেমেছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুঁজি নিয়ে, নয়জন ক্রিকেটারদের ছেড়ে দিয়ে ৩২ কোটি নিয়ে। যার অর্ধেকের বেশিতে স্যাম কারানকে দলে ভিড়িয়েছে। ওডিন স্মিথ, বেনি হাওয়েলদের বিদায় করে দিয়ে কারানের সঙ্গে আরেক অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজাকে যুক্ত করেছে পাঞ্জাব। গেলবারের অধিনায়ক মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে পর্যন্ত ধরে রাখেনি এবার। দেশি আরও যাদের ছেড়েছে, তাদের মধ্যে আছেন পরিচিত দুই পেসার সান্দীপ শর্মা ও ভইবব আরোরা। সব বিভাগেই কয়েকজন আনকোরা দেশিদের এনেছে তারা। 

    সম্ভাব্য সেরা একাদশ

    জীবনের সেরা ফর্মে থাকা রাজাকে ডাকা যেতে পারে যেকোন সময়েই। পেস বোলিংয়ে বিকল্প আছেন ন্যাথান এলিস। মিডিয়াম পেস অলরাউন্ডার হিসেবে অভিজ্ঞ রিশি ধাওয়ানের সাথে আছেন তরুণ রাজ বাওয়া। 

    ১। ধাওয়ান

    ২। শর্ট / রাজাপাকসে

    ৩। প্রাবসিমরান

    ৪। লিভিংস্টোন

    ৫। জিতেশ

    ৬। শাহরুখ

    ৭। কারান

    ৮। ব্রার / রিশি

    ৯। রাবাদা

    ১০। চাহার

    ১১। আর্শদীপ

    ব্যাটিংঃ পাওয়ার, পাওয়ার

    বেইরস্টোর চোটে পাঞ্জাব বড়সড় হোচটই খেয়েছে। তার জায়গায় অবশ্য যে বদলি এনেছে, তিনিও আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। ম্যাথু শর্ট গেল বিগ ব্যাশের ম্যান অব দ্যা টুর্নামেন্ট। শর্টের আইপিএলের মঞ্চে পদচারণ এবারই হবে প্রথম, কতটুকু করতে পারবেন তা নিয়ে তাই থাকে সংশয়। তবে ফর্মটা এখানেও ধরে রাখতে পারলে পাঞ্জাব হবে আরও শক্তিশালী।

    দেশি-বিদেশি পাওয়ার হিটারে ভরপুর পাঞ্জাবের ব্যাটিং লাইনআপ। ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা লিভিংস্টোন এবছর প্রথম মাঠে নামবেন আইপিএলেই, তবু তার সক্ষমতায় সন্দেহ করবে কে! জিতেশ শর্মা গেল আসরেই দেখিয়েছেন, আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে কী করতে পারেন। শাহরুখ খান এখনও সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে ব্যর্থ, তার পাওয়ার হিটিংয়ে পাঞ্জাবের অগাধ আস্থার প্রতিদান দেওয়ার সময় বুঝি এলো! ১২১ স্ট্রাইক রেটে ১৯ ম্যাচে ২৭০ রান, রেকর্ডটা নিশ্চয়ই ভালো করতে চাইবেন শাহরুখ। শেষের দিকে ঝড় তোলার জন্য স্যাম কারান তো আছেনই। আটে ব্রার, রিশি ধাওয়ানরা খেললে রাখতে পারেন ব্যাটিয়েও অবদান। 

    পাঞ্জাব একেবারে ঢেলে সাজায়নি দল, তবে ম্যানেজমেন্টে এনেছে পরিবর্তন। অধিনায়কের দায়িত্ব সামলাবেন শিখর ধাওয়ান। কোচিং স্টাফে প্রধান হিসেবে আছেন ইংল্যান্ডের বিশ্বকাজয়ী কোচ ট্রেভর বেইলিস। দ্বিতীয় ওপেনার কে? এই প্রশ্নের উত্তরেই পাঞ্জাব ম্যানেজমেন্টের বেশি সময় ব্যয় করার কথা।

    ধাওয়ানের সঙ্গে শর্ট আছেন সরাসরি অপশন। কিন্ত সেক্ষেত্রে রাজাপাকসে থাকবেন একাদশের বাইরে। এমনটা হলে ওপেনিংয়ের পরে আর এক বাঁহাতিই থাকেন কেবল। ডানহাতি ব্যাটারদের আধিক্যের সুবিধা নেওয়া থেকে প্রতিপক্ষকে রুখতে চাইলে দরকার বাঁহাতি। ওপেনিংয়ে দেশি বিকল্প প্রাবসিমরান সিংকে এনে রাখা যেতে পারে রাজাপাকসেকে। নয়তো শর্টকে খেলিয়ে পরিস্থিতি বুঝে কারানকে প্রমোশন দেওয়ার কৌশলে যেতে পারে পাঞ্জাব। আর রেখে দিতে পারে দেশি এক বাঁহাতি ব্যাটারকে। অনুর্ধ্ব-১৯ থেকে উঠে আসা রাজ বাওয়া গেল আসরে সুযোগ পেয়ে পারেননি৷ এবার নতুন কাকে উন্মোচন করে পাঞ্জাব, তা দেখতেই হয়!  

    বোলিংঃ পেসের দরকার স্পিন

    ডেথ ওভারে একটা দলই ওভারপ্রতি দশ রানের কম করে দিয়েছিল গত আইপিএলে, সেটি পাঞ্জাব। এবার সেখানে যোগ দিয়েছেন স্যাম কারান, ডেথে অবিশ্বাস্য পর্যায়ের পারফরম্যান্স দেখিয়ে ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড়। আর্শদীপের নামেও কান পাতলেই শোনা যাবে শেষের চার ওভারে বোলিং দক্ষতার প্রশংসা। রাবাদা তো পরীক্ষিত পারফর্মার। রাবাদা-আর্শদীপ-কারানের দুর্ধর্ষ পেস আক্রমণে কী তাহলে হবে পাঞ্জাবের অপেক্ষার অবসান?

    পাঞ্জাবের স্পিন বিভাগ তাদের কিছুটা হলেও ভাবাতে পারে। রাহুল চাহারের লেগ স্পিন আছে, উইকেট তুলে নেওয়ার সক্ষমতায় ঘাটতি থাকলেও কার্যকরী। কিন্ত চাহারের সঙ্গে কে? বাঁহাতি স্পিনার হারপ্রতি ব্রার আছেন, গেল আসরে যদিও ভালো সময় কাটেনি তার। সিকান্দার রাজা আছেন, কিন্ত রাজার একাদশে নিয়মিত থাকা হবে কঠিন। লিভিংস্টোনের দুই ধরনের স্পিন আছে হাতে। তবে স্পিন আক্রমণে আর প্রতিষ্টিত কেউ নেই। গেল আসরে মিডল ওভারে ভুগেছিল পাঞ্জাব, টুর্নামেন্টে সবচেয়ে কম উইকেট নিয়েছিল তারাই। ৭ থেকে ১৬ ওভারের মাঝে চাহার বাদে পাঞ্জাবের আর কোনও বোলারই পাঁচটির বেশি উইকেট নিতে পারেননি। মিডল ওভারে মুম্বাইয়ের পরে তাদের বোলিং গড়(৩২.৫৪) ছিল সবচেয়ে খারাপ।

    এবার চাহারের সাথে ব্রারের বড় দায়িত্ব থাকবে তাই। কারানের আগমন পাঞ্জাব কাপ্তানের কাজ সহজ করে দিবে, তিন পেসারকেই সব পর্যায়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বোলিং করানোর বিলাসিতা থাকবে। মিডল ওভারে কারান কিংবা রাবাদার মতো বোলারদের কাজে লাগানো যাবে আরেকটু বেশি। রাবাদা, কারান, আর্শদীপ- মুভমেন্ট পেলেও দারুণ কার্যকর তিন পেসারই। স্পিন আক্রমণ তাদের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারলে পাঞ্জাবের বোলিং হয়ে উঠবে শিরোপা প্রত্যাশী। কিন্ত এই তিনের কেউ যদি ইনজুরিতে পড়ে যান? বিদেশি দারুণ বিকল্প এলিসের বাইরে পরীক্ষিত পেসারদের যে অভাব! 

    কুঁড়ি থেকে ফুল হওয়ার পালা

    জিতেশ শর্মা, ২০২২ আইপিএলে ১০ ইনিংসে ২৩৪ এর বেশি রান করেননি, কিন্ত সেই রান এসেছে ১৬৩ স্ট্রাইক রেটে! এমন আগ্রাসী ব্যাটিংয়েই নজর কেড়েছেন সবার। ভারত স্কোয়াডে পর্যন্ত শামিল হয়েছেন। এবছর তার দিকে থাকা নজরটাকে আরও গাঢ় করে তোলার সুযোগ।

    গেলবারের অবস্থান

    ২০১৪ সালের পর প্লেঅফে পা রাখতে প্রত্যেকবারই ব্যর্থ হয়েছে পাঞ্জাব, গত আসরে থেকেছে পয়েন্ট টেবিলের ষষ্ট স্থানে।