• আইপিএল ২০২৩
  • " />

     

    ইনফর্ম মার্করাম, ব্রুক আর ভুবনেশ্বরদের পেস ব্যাটারিতে সানরাইজার্সের নতুন সূর্যোদয়?

    ইনফর্ম মার্করাম, ব্রুক আর ভুবনেশ্বরদের পেস ব্যাটারিতে সানরাইজার্সের নতুন সূর্যোদয়?    

    এলেন কারা, গেলেন কারা

    বড়সড় পরিবর্তনে গেলেও বিদেশি চারজনকে ছেড়েছে হায়দরাবাদ। কিন্ত চড়া মূল্যের কেন উইলিয়ামসন, সঙ্গে দুই ক্যারিবিয়ান নিকোলাস পুরান ও রোমারিও শেফার্ডকে ছেড়ে দিয়েই পকেট করেছিল অনেক বড়। বিদেশি শন অ্যাবটের সঙ্গে দেশি প্রিয়াম গার্গ, জাগাদিশ সুচিতসহ আরও অনেককেই ধরে রাখেনি এবার। নিলামে তাই সবচেয়ে বড় পুঁজি(৪২ কোটি) নিয়েই নেমেছিল হায়দরাবাদ। কিনেছে হ্যারি ব্রুক, হেইনরিখ ক্লাসেনকে। বিদেশি দুই স্পিনার আকিল হোসেন, আদিল রশিদের সাথে দেশি মায়াঙ্ক মার্কান্ডেকে দলে ভিড়িয়েছে। মায়াঙ্ক আগারওয়ালের সাথে এনেছে দেশি কয়েকজন আনকোরা অলরাউন্ডার ও ব্যাটারকে। 

    সম্ভাব্য সেরা একাদশ

    ১। অভিষেক

    ২। আগারওয়াল

    ৩। ত্রিপাঠি

    ৪। মার্করাম

    ৫। ব্রুক

    ৬। ক্লাসেন / ফিলিপস

    ৭। ওয়াশিংটন 

    ৮। ভুবনেশ্বর

    ৯। আদিল / আকিল

    ১০। উমরান

    ১১। নাটরাজন 

    ব্যাটিং- সবাই দুর্দান্ত, সবাই ডানহাতি, কোনও সমস্যা? 

    অধিনায়ক যখন ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী থাকেন, এর চেয়ে বাজে পরিস্থিতি আর হয় না! হায়দরাবাদ সে বিপদের মুখে পড়েছিল আগেও ওয়ার্নারকে নিয়ে, গেলবার পড়েছে ওয়ার্নারকে ছেড়ে রাখা উইলিয়ামসনকে নিয়েও। ওপেনিংয়ের এক পাশে ভরসা রেখেছিল গতবার তারা এক তরুণে, সেই অভিষেককেই শেষমেশ দলকে টেনে নিতে হচ্ছিল। কমপক্ষে ৫০ রান করেছেন, এমন ব্যাটারদের মধ্যে বলপ্রতি রান করতে পারেননি একজন, সেই উইলিয়ামসনের থেকে ২১৬ রান এসেছিল ৯৩.৫০ স্ট্রাইক রেটে। পাওয়ারপ্লেতে সবচেয়ে ধীরগতিতে রান পেয়েছিল তাই হায়দরাবাদই। তাদের ৭.০১ রান রেটের কমে পাওয়ারপ্লেতে ব্যাট করেনি আর কোনও দলই! ওপেনিংয়ের দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতেই এবার ৮ কোটির বেশি খরচে হায়দরাবাদ ভিড়িয়েছে আগারওয়ালকে। 

    ওপেনিং ঠিকঠাক হয়ে গেলে বাকি ব্যাটিং দুর্দান্ত। তিনের ত্রিপাঠি আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে চড়াও হতে পারেন শুরু থেকেই। ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে চলে আসা মার্করামের কাঁধেই এবার অধিনায়কত্বের ভার। মিডল অর্ডারের নতুন মুখ হ্যারি ব্রুক, যার ব্যাটে ফুটে উঠে বিশ্ব ক্রিকেটেরই ভবিষ্যত তারকা হওয়ার সম্ভাবনা। ফর্মে থাকা আরেক ব্যাটার হেইনরিখ ক্লাসেনও থাকবেন এবার হায়দরাবাদের ডেরায়। হায়দরাবাদের বড় শক্তিই বোধহয় এটি যে ফর্মে থাকা ব্যাটাররাই থাকবেন তাদের ডাগআউটে। পাওয়ারফুল ব্যাটার গ্লেন ফিলিপসও তো আছেন! পরিস্থিতি বুঝে গিয়ার পাল্টানোর ক্ষমতা আছে সবারই।  অলরাউন্ডারদের মধ্যে ওয়াশিংটন, ইয়ানসেন আছেন কুইক ফায়ার ক্যামিও খেলতে, আছেন অলরাউন্ডার হওয়ার চেষ্টায় থাকা আকিল হোসেন। 

    এই ব্যাটিং লাইনআপে কোন ফাঁকফোখর যদি খুঁজতেই হয়, তবে সেটি হবে ডানহাতিদের আধিক্য। ২৫ জনের যে স্কোয়াড, তাতে বাঁহাতি আছেন মোটে ৫ জন। ভিভ্রান্ত শর্মা, সুন্দর, নাটরাজন, আকিল, অভিষেক- একাদশে নিয়মিত থাকার সম্ভাবনা দুজনের। অভিষেক ওপেনিংয়ে, আকিল সুযোগ না পেলে এরপর আর মাত্র একজন বাঁহাতি ব্যাটার। সুন্দরকে ব্যাটিং অর্ডারে উপর-নিচ করে এই ঘাটতির মোকাবিলা করবে হায়দরাবাদ? এক্ষেত্রে এক পাশে থেকে অভিষেকের লম্বা ইনিংস খেলতে পারাও হয়ে উঠবে গুরুত্বপূর্ণ। হায়দরাবাদের দুর্দান্ত ব্যাটিং অর্ডার এই চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে পারলে তাদের থামানো সহজ হবে না মোটেও।  

    বোলিং- প্রমাণের মঞ্চে জ্বলে উঠবেন ভুবনেশ্বর-আদিলেরা?

    কার্তিক তেয়াগির কি মাঝেমধ্যে আফসোস হয়, কেন আমি হায়দরাবাদে? কমলা শিবিরে যে দেশি পেস আক্রমণ, পুরো টুর্নামেন্টেই তা খুঁজে পাওয়া কঠিন। 

    ভারতীয় ক্রিকেটের দৃশ্যপটে আবার হারিয়ে গেছেন ভুবনেশ্বর। এভাবেই ফিরে এসেছিলেন গত আইপিএলে। ১৪ ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়েছিলেন মাত্র ৭.৩৪ ইকোনমিতে। কিন্ত ভারতের জার্সি গায়ে দুই আইপিএলের মাঝের সময়ে দেখা গেছে, পাওয়ারপ্লেতে যতটা উজ্জ্বল, ডেথ ওভারে ততটাই বিবর্ণ ভুবনেশ্বর। বাঁহাতি পেসার নাটরাজন গেল আসরে ১৮ উইকেট পেয়েছেন ঠিক, কিন্ত ডেথ ওভারে তার দুর্দান্ত বোলিংয়ের যে সুনাম, সেটি হারিয়েছেন অনেকটাই। 

    ভুবনেশ্বর, নাটরাজন, দুজনেই চাইবেন দৃশ্যপটে ফিরে আসতে, হায়দরাবাদেরও সেটিরই প্রয়োজন। তাদের সঙ্গে আছেন উমরান মালিক, পেসের ঝড় তুলে ২২ উইকেট নেওয়া গেলবারের সেরা উদীয়মান ক্রিকেটার। পেস আক্রমণে আছেন দুর্দান্ত দুই বিকল্প, যেকোন সময়েই খেলার যোগ্য যারা। মার্কো ইয়ানসেন দক্ষিণ আফ্রিকার সব ফরম্যাটেরই নিয়মিত সদস্য, বাঁহাতি এই পেসার গেল বছর সাড়ে আট ইকোনমিতে নিয়েছিলেন ৭ উইকেট। তার কাছ থেকে আরও বড় কিছুরই প্রত্যাশা করবে হায়দরাবাদ। আরেক বাঁহাতি পেসার ফজল হক ফারুকীও যথেষ্ট সামর্থ্যবান। 

    গেল আসরে ওয়াশিংটন সুন্দর সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি বল হাতে। স্পিন বিভাগে হায়দরাবাদ যুক্ত করেছে আদিল রশিদ আর আকিলকে। বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা লেগিদের একজন আদিলের আইপিএলে নিজেকে প্রমাণের বাকি এখনও। নতুন বলে দুর্দান্ত আকিল সময়ের সাথে উন্নতির পথে। লেগ স্পিনে দেশি বিকল্প আছেন মায়াঙ্ক মার্কান্ডে। 

    লম্বা টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে এই বিকল্পই খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। আর হোম-অ্যাওয়ে তে ফেরা আইপিএলে নানান কন্ডিশনে তো আরও জরুরি। হায়দরাবাদের আরেক শক্তির জায়গা এটিই, তাদের হাতে আছে দারুণ সব বিকল্প। এই আইপিএল হায়দরাবাদ ডাগআউটের অনেকের জন্যই প্রমাণের মঞ্চ, ভুবনেশ্বর-আদিলরা সেটি করতে পারলেই তারা এগিয়ে যাবে ঘুরে দাঁড়ানোর পথে। 

    কুঁড়ি থেকে ফুল হওয়ার পালা 

    ২০১৮ সালে আইপিএলে আর্বিভাবের পর গেল আসরের আগে নিজেকে ঠিক চেনাতে পারেননি অভিষেক শর্মা। উনিশ পেরুনোর আগেই আইপিএলে দল পেয়েছিলেন, তার প্রতিভার কথা বলে এ তথ্যটাই। বাঁহাতি অলরাউন্ডার গত বছর টুর্নামেন্ট শেষ করেছেন ১৩৩ স্ট্রাইক রেটে ৪২৬ রানে। বড় মঞ্চে এবার আরও বড় কিছু করে ভারত দলের দৃশ্যপটে আসতে পারবেন অভিষেক?

    গেলবারের অবস্থান

    ১২ পয়েন্ট হাসিল করে হায়দরাবাদ হয়েছিল অষ্টম।