• টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
  • " />

     

    ড্রপ ইন পিচের রহস্য কী? নাসাউ কাউন্টির উত্তর খুঁজে পাবে বাংলাদেশ?

    ড্রপ ইন পিচের রহস্য কী? নাসাউ কাউন্টির উত্তর খুঁজে পাবে বাংলাদেশ?    

    বিশ্বকাপে ভারত প্রথমবারের মতো নেমে জয় পেয়ে গিয়েছে; তবে নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টির পিচ নিয়ে কথা উঠেছে আবারও। ম্যাচটা দেখে তো সেই উইকেট নিয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে বসলেন ধারাভাষ্যকার হার্ষা ভোগলে। এই মাঠেই প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকা গুটিয়ে গিয়েছিল ৭৭ রানে। সেই রান তাড়া করতে দক্ষিণ আফ্রিকারও লেগে গিয়েছিল প্রায় ১৭ ওভারে। শুধু তাই নয়, সাথে স্লো আউটফিল্ডের ভোগান্তি ছিল স্পষ্ট। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতকে অবশ্য ব্যাট হাতে ধুঁকতে দেখা যায়নি। তবে উইকেট নিয়ে শঙ্কাটা বিদ্যমান।

    এই মাঠেই প্রোটিয়াদের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ড্রপ ইন পিচ আর স্লো আউটফিল্ডের রহস্য কীভাবে বাংলাদেশ উদ্ঘাটন করবে সেটা চিন্তার খোরাক যোগাতে পারে।


    কীভাবে কাজ করে ড্রপ ইন পিচ?


    এই ড্রপ ইন পিচের দেখা যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আগে মেলেনি এমনটা নয়। এমনকি বিখ্যাত এমসিজিতেও সংস্কারের পর ড্রপ ইন পিচে খেলা হয়েছে। যেবার স্টিভ স্মিথের অধীনে ৪-০ ব্যবধানে অ্যাশেজ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া, সেবার সেই এমসিজিতেই দেখা গিয়েছিল ম্যাড়ম্যাড়ে এক ড্র। তাহলে এই বিশ্বকাপের ড্রপ ইন পিচ নিয়ে কেন এত কথা হচ্ছে?

    সেটার জন্য উইকেট বানানোর প্রক্রিয়া কিছুটা দায়ী। নিউ ইয়র্কের জন্য এই উইকেট বানানো হয়েছে ফ্লোরিডাতে অ্যাডিলেড ওভালে কিউরেটর টিমের তত্ত্বাবধানে। মাঠে উইকেট বসানো হয়েছে মাস খানেক আগে। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে ধুধু এক জমিকে পুরোদস্তুর মাঠ বানিয়ে সেখান পিচ বসানো হয়েছে, পিচ ইন্সটলেশনে পর খেলা হয়েছে মাত্র দুই ম্যাচ!


    ড্রপ ইন পিচের বিশেষত্ব হচ্ছে সময়ের সাথে সাথে এই উইকেটগুলো ধাতস্থ হতে শুরু করে। উইকেট ধীরে ধীরে ফ্ল্যাট হবে ঠিকই। তবে সেই ফ্ল্যাট সারফেসের সুবিধা পাওয়ার জন্য উইকেটগুলো নিয়মিত ব্যবহার করতে হবে। উইকেটে অতিরিক্ত ঘাস রাখা হয় পিচ দীর্ঘমেয়াদি করার  জন্য। পর্যাপ্ত ক্রিকেট হলে ঘাসগুলোর বেশিরভাগ মিশে যাবে সারফেসের সাথে। দুঃখজনকভাবে সেই সময়টাই মেলেনি নাসাউ কাউন্টির উইকেটগুলোর জন্য। এই অতিরিক্ত ঘাস, আর ফাটলের জন্য প্রথম দুই ম্যাচে তাই বোলাররা, বিশেষ করে পেসাররা বেশি সুবিধা পেয়েছে।

     

    কেন সমস্যা হচ্ছে নাসাউ কাউন্টির ড্রপ ইন পিচে?


    বিশ্বকাপের জন্য মোট দশটা ড্রপ ইন উইকেট বানানো হয়েছে। চারটা ম্যাচের জন্য, বাকি ছয়টা প্র্যাকটিস উইকেট। ম্যাচের জন্য প্রস্তুতকৃত উইকেটগুলোর নিচের সারফেস এখনো যথেষ্ট শক্ত। তবে ওপরের সারফেসের ঘাসগুলো এখনও মিশেনি কারণ যথেষ্ট ম্যাচ এখানে হয়নি। দুইয়ের মিশেলে তাই আনইভেন বাউন্স দেখা গেছে শ্রীলঙ্কা-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে। আয়ারল্যান্ডের ওপরও ভারত ছড়ি ঘুরিয়েছে সেটার সুযোগ নিয়ে।

    ড্রপ ইন পিচটাও ধীরে ধীরে ব্যাটিং বান্ধব হয়ে উঠবে হয়ত। তবে সেরকম যুতসই উইকেট চাইলে, ঘাসগুলোকে কমাতে চাইলে আরও কয়েকটা ম্যাচ অপেক্ষা করার বিকল্প নেই বললেই চলে। তবে উইকেটটা মুখ্য বিষয় হলেও একমাত্র নয়। উইকেটের সাথে প্রশ্ন উঠেছে আউটফিল্ডের মান নিয়েও। শ্রীলংকা-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের বেশ কিছু শটের পর বল আটকে যাচ্ছিল গ্রাউন্ডে। এই আউটফিল্ডের পুরোটাই বালির বেইজের ওপর। যেটার সরাসরি প্রভাব পড়ছে আউটফিল্ডে বলের গতির ওপর।  ঘাসের নিচে এখনো বালির আধিক্য। সময়ের সাথে উইকেটের আচরণ বদলালেও আউটফিল্ড হয়তো সহসাই বদলাচ্ছে না।

    স্লো আউটফিল্ডের প্রভাব সরাসরি পড়বে দলগুলোর স্কোরবোর্ডে। ফাস্ট বা ফেয়ার আউটফিল্ডের মাঠে যে  শটে অনায়াসে বাউন্ডারি আদায় করা যায়, নিউ ইয়র্কের মাঠে সেই শটে হয়তো সর্বোচ্চ একটা ডাবল বের করা যাবে।এতে করে ইনিংস শেষে রান কমবে।। সেটা হোক প্রথম ইনিংস বা দ্বিতীয় ইনিংসে।

    এই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। গ্রুপ পর্বে টানা তিন ম্যাচই ভারত খেলবে এখানে। এই মাঠেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচটা খেলবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে তাই শুধু নিজেদের দল নিয়ে নয়, এসব মোকাবেলার কথাও আলাদা করে ভাবতে হবে।