• টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
  • " />

     

    সল্ট, বেইরস্টোর আক্রমণে দিশেহারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ

    সল্ট, বেইরস্টোর আক্রমণে দিশেহারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ    

    সুপার এইট, গ্রস আইলেট (টস - ইংল্যান্ড/বোলিং)
    ওয়েস্ট ইন্ডিজ - ১৮০/৪, ২০ ওভার (চার্লস ৩৮, পাওয়েল ৩৬, পুরান ৩৬, মঈন ১/১৫, রশিদ ১/২১, লিভিংস্টোন ১/২০)
    ইংল্যান্ড - ১৮১/২, ১৭.৩ ওভার (সল্ট ৮৭*, বেইরস্টো ৪৮*, বাটলার ২৫, চেইজ ১/১৯, রাসেল ১/২১)
    ফলাফল - ইংল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী


     

    সহ-আয়োজকদের বিপক্ষে সহজেই জয় তুলে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর শক্ত বার্তাই যেন দিল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। ব্যাট হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভালো শুরু করলেও পরে লাগাম টেনে ধরে ফিল সল্ট-জনি বেইরস্টোর ৯৭* রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে অনায়াসেই লক্ষ্য তাড়া করে সুপার এইট যাত্রা শুরু করল ইংল্যান্ড।

    লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই ফিরতে পারতেন ফিল সল্ট। আকিল হোসেনের দ্বিতীয় ওভারে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েও পুরানের বদান্যতায় বেঁচে যান তিনি। এরপর আর ফিরে তাকাননি সল্ট। অন্য প্রান্তে বাটলারকে সাথে নিয়ে দারুণ শুরু এনে দেন তিনি। পাওয়ারপ্লেতেই ৫৮ রান তুলে ফেলে ইংলিশরা।

    ধারা বজায় রাখতেই আক্রমণে আসা রস্টন চেইজকে বেরিয়ে এসে খেলতে গেলেও তার বিচক্ষণ এক প্রায়-ইয়র্কারে ২২ বলে ২৫ রান করে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন বাটলার। তিনে নামা মঈন আলী নেমেই আক্রমণের ইঙ্গিত দিলেও ড্রিঙ্কস ব্রেকের পরেই ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে থামেন ১০ বলে ১৩ রান করে। তবে উইকেটে এসেই বেইরস্টো বার্তা দিলেন আক্রমণের ধারা বজায় রাখার। চেইজকে মোকাবেলা করতে দুজনের কিছুটা বেগ পেতে হলেও আকিল ও মোতির ওপর চড়াও হন দুজনেই।

    আকিলকে ১৫তম ওভার করতে ফেরানো হলেও ওই ওভারে ১৬ রান দিয়ে বসেন তিনি। তবে এরপরের ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কফিনে পেরেক ঠুকে দেন সল্ট। রোমারিও শেফার্ডের ওই ওভারে তিনটি করে ছয় ও চারে নেন ৩০ রান! টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসেই কোনো ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারের এক ওভারে সর্বোচ্চ রান গোনার ইতিহাস এটি। শেষ পর্যন্ত ৪৭ বলে ৮৭* রান করে সল্ট ও ২৬ বলে ৪৮* রান করে বেইরস্টো ১৫ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ইংল্যান্ডকে।

    টসে হেরে এর আগে ব্যাটিংয়ে নামতে হলেও শুরুটা দারুণ হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। একাদশে ফেরা মার্ক উডের গতি কাজে লাগিয়ে ছুটছিলেন ব্র্যান্ডন কিং। পঞ্চম ওভারে এসে অবশ্য অনেকটুকু এগিয়ে একটা শট খেলতে গিয়েই হয়ত টান খেয়েছিলেন। ১৩ বলে ২৩ রানে থাকা কিংকে তাই মাঠ ছাড়তে হয় আহত হয়ে। তবুও পাওয়ারপ্লেতে ৫৪ রান আসায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের দিকেই হেলে ছিল ম্যাচের পাল্লা।

    সেখান থেকে নিকোলাস পুরানকে সঙ্গী করে জনসন চার্লস হাত খোলার চেষ্টা করলেও ইংলিশ বোলাররা চেপে বসেন। বিশেষ করে মঈন আলীকে খেলতে দুজনের বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল। স্পিনারদের বাগে পেলে দুজনেই বাউন্ডারি বের করতে ভুল না করলেও ইংলিশদের বিচক্ষণ বোলিংয়ে চড়াও হতে পারছিলেন না কেউই। তারই পরিক্রমায় চার্লসকে জায়গা বানাতে দেখে বেশ বাইরে মঈন বল দিলে সজোরে ব্যাট চালালেও বাতাসের কারণে চার্লসের শট জায়গা করে নেয় হ্যারি ব্রুকের মুঠোয়। ৩৪ বলে ৩৮ রানে তিনি থামলে ব্যাটিং অর্ডারে উঠে এসে আক্রমণের ইঙ্গিত দেন প্রথম ওভারেই ছয় মেরে বসা অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল।


    মাঝে বাটলার এক ওভারের জন্য লিয়াম লিভিংস্টোনকে আনলে তাকে তিন ছয় মেরে বসেন পাওয়েল। অবশ্য শেষ বলে তার ব্যাটের কানা খুঁজে ১৭ বলে ৩৬ রানে পাওয়েলকে থামিয়ে শেষ হাসি হাসেন লিভিংস্টোন। অন্য প্রান্তে সুযোগ খুঁজতে থাকা পুরানও এরপর থামেন আক্রমণে ফেরা আর্চারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে, ৩২ বলে ৩৬ রানে।  

    রাসেলকে এরপর নামানো হলেও দুর্দান্ত এক স্পেল করা রশিদের শেষ ওভারে গুগলি পড়তে না পেরে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে এক অংকের ঘরেই ফেরেন তিনি। স্যাম কারান, আর্চারদের বদৌলতে এরপর খুব একটা গতি পায়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস। উডের গতিকে ঢাল বানিয়ে শেষ দিকে শেরফেন রাদারফোর্ড ১৭ বলে ২৮* রান করলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৮০ রানের সংগ্রহ পরে সহজেই টপকে জয় পেয়েছে ইংলিশরা।