• টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
  • " />

     

    কেন্দ্রীয় চুক্তিকে উইলিয়ামসনের ‘না’ : ক্রিকেটের নতুন বাস্তবতা?

    কেন্দ্রীয় চুক্তিকে উইলিয়ামসনের ‘না’ : ক্রিকেটের নতুন বাস্তবতা?    

    টেস্টের পর নিউজিল্যান্ডের সাদা বলের অধিনায়কত্বও ছেড়ে দিলেন কেইন উইলিয়ামসন। ব্যর্থতায় মোড়ানো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসরের পর উইলিয়ামসনের এই ঘোষণা চমক হয়েই এলো! একই সাথে জানিয়েছেন, আসন্ন ২০২৪-২৫ মৌসুমে কিউইদের কেন্দ্রীয় চুক্তির প্রস্তাবও তিনি গ্রহণ করছেন না।

    নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রকাশিত এক বিবৃতিতে উইলিয়ামসন জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার আরও দীর্ঘায়িত করতেই এই সিদ্ধান্ত তার। নেপথ্যে আছে অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে খেলার সুযোগের ব্যাপারটাও। অবশ্য আসন্ন গ্রীষ্মে নিউজিল্যান্ডের খুব বেশি খেলাও নেই ঘরের মাঠে। সব মিলিয়ে আটটা টেস্ট খেলবে কিউইরা। ক্রিস্টমাসের আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে তিনটি ও ভারত সফরে খেলবে আরও তিনটি টেস্ট।

     

    কিউই সামার সূচির সাথে সাংঘর্ষিক হতে যাচ্ছে তিন থেকে চারটি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের।  বিগ ব্যাশ, এসএ টোয়েন্টি, আইএল টি-টোয়েন্টির কাছাকাছি সময়ে মাঠে গড়াবে বিপিএলও। এবং এর পরপরই পাকিস্তানে মাঠে গড়ানোর কথা আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির।

    উইলিয়ামসন এই চার লিগের কোনো দলের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন কিনা, এখনো নিশ্চিত করে জানা যায়নি। তবে যদি হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আসন্ন জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় সুপার স্ম্যাশ থেকেও সরে যেতে পারেন উইলিয়ামসন। উইলিয়ামসন কি তাহলে আর কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ফিরবেন না?  সেই সম্ভাবনাও অবশ্য তিনি উড়িয়ে দেননি। বলেছেন,নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলাটা তার কাছে সবসময়ই অতুলনীয়।  সেই হিসেবে বলা চলে উইলিয়ামসন দেশের হয়ে বেছে বেছেই সিরিজ বা টুর্নামেন্ট খেলবেন জিমি নিশাম-ট্রেন্ট বোল্টের মতো।টানা চার ওভার মেইডেন নিয়ে রেকর্ড গড়া লোকি ফার্গুসনও জানিয়েছেন, তিনিও আর থাকতে চান না কেন্দ্রীয় চুক্তিতে। 

     

    টানা খেলার ধকল এড়াতে বা সুবিধামতো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলতে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে নাম লেখাননি তারা। বোর্ডও তাদের সেই স্বাধীনতা দিয়ে রেখেছে,  নিশাম-বোল্টরা দলের প্রয়োজনেই ছুটে আসেন কোনো সিরিজ বা টুর্নামেন্ট খেলতে। 

    গত ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার আনকোরা এক টেস্ট দল। নেপথ্যে ছিল প্রোটিয়াদের এসএ টোয়েন্টি। এবার বিশ্বকাপের আগে সেই নিউজিল্যান্ডও পাকিস্তানে খেলেছে প্রমিনেন্ট নয় ক্রিকেটারকে ছাড়া। যাদের মধ্যে আটজন ব্যস্ত ছিলেন আইপিএলে।

    তিন ফরম্যাটে টানা খেলার ধকল, আর্থিক নিশ্চয়তা, পরিবারকে সময় দেয়া; এসব প্রভাবক মিলিয়েই এমন সিদ্ধান্ত উইলিয়ামসনের।  এর মধ্যে দিয়ে শেষ হয়ে গেল নিউজিল্যান্ডে অধিনায়ক উইলিয়ামসনের বর্ণাঢ্য অধ্যায়। তার নেতৃত্বে তিনটি আইসিসি ইভেন্টের ফাইনালে উঠেছিল নিউজিল্যান্ড। টেস্ট চ্যাম্পিয়নিশিপের ফাইনাল জিতলেও ২০১৯ বিশ্বকাপ ও ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রানার আপ হয়েছিল কিউইরা।

     

    পরিসংখ্যান বলছে উইলিয়ামসনই কিউইদের সেরা টেস্ট অধিনায়ক। তার নেতৃত্বেই সাদা পোশাকে জয়ের হার সবচেয়ে বেশি ছিল নিউজিল্যান্ডের।  ৯১ ওয়ানডেতে ৪৬টি  আর ৭৫ টি-টোয়েন্টিতে উইলিয়ামসনের অধিনায়কত্বে নিউজিল্যান্ড জিতেছে ৩৯টি। অধিনায়ক উইলিয়ামসনের শেষ এসাইনমেন্ট হয়ে রইল এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। অধিনায়ক হিসেবে শেষ ম্যাচটা খেলেছেন ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে। অধিনায়ক হিসেবে শেষটা রাঙাতে পারেননি। তবে নেতা হিসেবে যা করেছেন, সেটা নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট মনে রাখবে দীর্ঘদিন।