• টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
  • " />

     

    কামিন্সের হ্যাটট্রিক, ওয়ার্নারের ফিফটিতে বাংলাদেশকে বাস্তবতা বোঝাল অস্ট্রেলিয়া

    কামিন্সের হ্যাটট্রিক, ওয়ার্নারের ফিফটিতে বাংলাদেশকে বাস্তবতা বোঝাল অস্ট্রেলিয়া    

    সুপার এইট, নর্থ সাউন্ড (টস - অস্ট্রেলিয়া/ফিল্ডিং)
    বাংলাদেশ - ১৪০/৮, ২০ ওভার (শান্ত ৪১, হৃদয় ৪০, লিটন ১৬, কামিন্স ৩/২৯, জাম্পা ২/২৪, ম্যাক্সওয়েল ১/১৪)
    অস্ট্রেলিয়া - ১০০/২, ১১.২ ওভার (ওয়ার্নার ৫৩*, হেড ৩১, ম্যাক্সওয়েল ১৪*, রিশাদ ২/২৩)
    ফলাফল - অস্ট্রেলিয়া ২৮ রানে জয়ী (ডিএলএস মেথডে)


    সুপার এইটের প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশকে রুঢ় বাস্তবতাটা কঠোরভাবেই বুঝিয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া। ব্যাটিং বান্ধব উইকেটেও বাংলাদেশকে দেড়শোও ছুঁতে দেয়নি অজিরা। পরে বৃষ্টি বারবার বাগড়া দিলেও দ্রুত রান তুলে বৃষ্টি সংক্রান্ত সকল শঙ্কা তুড়ি মেরে জয় দিয়ে সুপার এইট যাত্রা শুরু করেছে তারা।

    অথচ তানজিম হাসান সাকিবের প্রথম বলেই ফিরতে পারতেন ওয়ার্নার। পয়েন্টে হৃদয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েও বেঁচে গিয়ে এরপর হাড়েহাড়ে হিসেব বুঝিয়েছেন তিনি। সেই সাথে হেডও সুযোগ বুঝে তুলে নিয়েছেন বাউন্ডারি। তাসকিন, মোস্তাফিজ কাউকেই ছেড়ে কথা বলেননি এই দুজন। পাওয়ারপ্লেতেই তাই দুজন মিলে তুলে ফেলেন ৫৯ রান। পরের ওভার শুরু হতেই বৃষ্টি বাধ সাধে।

    বৃষ্টিতে পাওয়া সেই বিরতি কাজে লাগিয়ে খেলা শুরুর পরে আঘাত হানেন রিশাদ। বৃষ্টির পর নিজের প্রথম বলেই হেড বুঝে উঠতে পারেনি রিশাদের লেগ স্পিন। স্টাম্প খুইয়ে ২১ বলে ৩১ রানে তিনি ফিরলে অস্ট্রেলিয়া খানিকটা চিন্তায় পড়ে যায়। পরের ওভারে মাহেদী মাত্র এক রান গুনলে এরপরের ওভারে রিশাদ এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন অধিনায়ক মার্শকে। তবে বাংলাদেশের হাসি ওখানেই ম্লান। রিশাদকেও পরে ম্যাক্সওয়েল নেমেই দেখালেন কব্জির জোর। পরে ৩৪ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন ওয়ার্নার। দুই দফায় বৃষ্টি এরপর বাধা দিলে এরপর আর খেলা শুরু হয়নি। অস্ট্রেলিয়া তাই ২৮ রানে এগিয়ে থাকায় পেয়ে যায় জয়।

    এর আগে শুরুতেই বাংলাদেশকে এদিন নাড়িয়ে দেন একাদশে ফেরা স্টার্ক। তৃতীয় বলেই তার দ্রুতগতির বল স্টাম্পে ডেকে এনে রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন তানজিদ হাসান তামিম। সেখান থেকে এদিন রানে ফিরতে বদ্ধপরিকর লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত দলকে পথ দেখান। হেজলউডকে বেরিয়ে এসে লং অন দিয়ে ছয় মেরে হাত খুলে খেলার ইঙ্গিত দেন শান্ত। তবে দুই পেসারকে সামলাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল লিটনকে। ব্যাটে-বলে হলেও জায়গা বের করতে না পারা লিটন এক সময় ১১ বলে ছিলেন ১ রানে! তবে শান্তর বদৌলতে পাওয়ারপ্লেতে ৩৯ রানে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।


     পাওয়ারপ্লের পর অবশ্য কুড়ি থেকে ফুল হয়ে ফোটার আগেই এই জুটি ভেঙে দেন আক্রমণে আসা জাম্পা। এই লেগ স্পিনারের কাছে স্টাম্প খুইয়ে ২৫ বলে ১৬ রানে থামেন ধুঁকতে থাকা লিটন। ৪৮ বলে ৫৮ রানের জুটির পর বাতাসের সাহায্য নিয়ে জাম্পাকে নিষ্ক্রিয় করতেই এদিন চারে নামানো হয় রিশাদকে। তবে অন্যদিক থেকে ম্যাক্সওয়েলকে আক্রমণে আনা হলে তার কাছে শর্ট থার্ড ম্যানে ক্যাচ দিয়ে ২ রানেই থামেন রিশাদ। রিশাদের চারে নামার ফাটকাটা কাজে না এলে উইকেটে আসা হৃদয় খেলতে থাকেন আপন ছন্দে; নিয়মিত প্রান্ত বদলে মনোযোগ দিতে থাকেন। তবে অন্য প্রান্তে শান্ত কিছুটা অশান্ত হয়ে উঠলে জাম্পার বল পড়তে না পেরে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ৩৬ বলে ৪১ রানে থামেন শান্ত।

    শান্ত ফিরলে বাংলাদেশের ইনিংস সেই অর্থে গতি পায়নি। এক প্রান্তে হৃদয় স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে থাকলেও অন্য প্রান্তে কেউই সুবিধা করতে পারেননি। যেই স্টয়নিসের স্লোয়ার পড়তে না পেরে আকাশে বল ভাসিয়ে তার ফিরতি ক্যাচে ফিরেছিলেন সাকিব, সেই স্টয়নিসকেই পরে টানা দুই ছয় মেরে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন হৃদয়। তবে শেষদিকে এসে স্লোয়ার আর ক্রস-সিম ডেলিভারির দুর্দান্ত প্রদর্শনীতে হাঁটে হাড়ি ভেঙে দেন। মাহমুদউল্লাহ তার বল স্টাম্পে ডেকে ফেরার পরের বলেই একাদশে প্রথম আসা শেখ মাহেদী থার্ড ম্যানে ক্যাচ দিয়ে থামেন। শেষ ওভারের প্রথম বলেই হৃদয় স্কুপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দিলে আসরের প্রথম ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম হ্যাটট্রিক পেয়ে যান কামিন্স। এর আগে একমাত্র অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে এই কীর্তি ছিল ব্রেট লি-এর, সেটাও ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষেই। কামিন্সের হ্যাটট্রিক সামলে শেষদিকে ৭ বলে ১৩* রানের ক্যামিওতে বাংলাদেশকে লড়াইয়ের রসদ এনে দিয়েছিলেন তাসকিন। তাতে অবশ্য কাজে দেয়নি খুব একটা, হেসেখেলেই জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া।