তিন দিনেই প্রোটিয়াদের কাছে বাংলাদেশের অসহায় আত্মসমর্পণ
২য় টেস্ট, চট্টগ্রাম
দক্ষিণ আফ্রিকা - ৫৭৫/৬ ডি. (ডি জর্জি ১৭৭, স্টাবস ১০৬, মাল্ডার ১০৫*, তাইজুল ৫/১৯৮, রানা ১/৮৩)
বাংলাদেশ - ১৫৯ (মুমিনুল ৮২, তাইজুল ৩০, রাবাদা ৫/৩৭, প্যাটারসন ২/৩১, মহারাজ ২/৫৭) ও ১৪৩ (হাসান ৩৮*, শান্ত ৩৬, মহারাজ ৫/৫৯, মুথুসামি ৪/৪৫)
ফলাফল - দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংস ও ২৭৩ রানে জয়ী
অবিশ্বাস্য ব্যাটিং বিপর্যয়ে তৃতীয় দিনেই দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে নতি স্বীকার করল বাংলাদেশ। অবিশ্বাস্যও বলতে হয়েছে; সাগরিকায় যেখানে রান তোলাটা তুলনামূলক সহজ, যেই পিচে দক্ষিণ আফ্রিকাও দেখাল রান তুলতে কী করতে হয়, সেখানেই এক দিনে দুইবার অল-আউট বাংলাদেশ। লজ্জাজনক পরাজয়ে তাই ২-০ ব্যবধানে সিরিজ হারল বাংলাদেশ।
দিনের শুরুতে ১০ রানেই বাংলাদেশ হারিয়ে বসল ৪ উইকেট! ৪৮ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজেদের সর্বনিম্ন টেস্ট সংগ্রহ চোখ রাঙাচ্ছিল। সেখান থেকে উদ্ধারকাজ শুরু মুমিনুল-তাইজুল জুটির। রাবাদা-প্যাটারসনদের সামলে স্পিনারদেরও এক হাত নিলেন মুমিনুল। অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দুজনে মিলে লাঞ্চে গিয়ে পরে শতরানের জুটিও গড়লেন। তবে সেঞ্চুরির দিকে এগুতে থাকা মুমিনুলকে লাঞ্চের পরেই ফাঁদে ফেললেন মুথুসামি। তীক্ষ্ণ ঘূর্ণিতে এলবিডব্লিউ করে মুমিনুলকে ফেরালেন ১১২ বলে ৮২ রানের ইনিংসে। কিছুক্ষণ পরেই মহারাজকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ৯৫ বলে তাইজুলের ৩০ রানের ইনিংস শেষ হলে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ প্রথম ইনিংস লিড পেয়ে যায় প্রোটিয়ারা।
ফলো-অনে পাঠিয়ে বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নামতে বলে প্রোটিয়ারা যেন আরও একবার বলেকয়ে অপমান করল বাংলাদেশি ব্যাটারদের। এবার আগের চেয়েও দ্রুত অল-আউট বাংলাদেশ; মাত্র ৪৩.৪ ওভারেই খেল খতম! আলাদা করা বলার মত কিছুই করে দেখাতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। সাদমানকে ফিরিয়ে প্রথম আঘাতটা প্যাটারসন হানলেও এরপর ডানা মেলে বসেন দুই স্পিনার। চা-বিরতির আগে মুথুসামি ঘোল খাওয়ালেন, চা-বিরতির পর পুরনো শত্রু মহারাজ। চা-বিরতির ঠিক আগের বলটায় জাকির যেভাবে আউট হলেন, সেটা আসলে বাংলাদেশি ব্যাটিং লাইনআপের জীর্ণ দশার পরিচায়ক। শেষ বলটায় বিষম খাওয়ার উপক্রম! বেরিয়ে এসে খেলতে গেলেন নিরীহ বলে, কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই। ফলাফল যথারীতি স্টাম্পিংয়ের শিকার। চা-বিরতির আগেই নেই তাই চার উইকেট।
আগের ইনিংসে রান পাওয়া মুমিনুল তো আগেই ফিরেছেন শূন্য রানে। তাই বিরতির পর আশাও তেমন একটা ছিল না বলা চলে, হলও তাই। বিরতির পর সবগুলো উইকেট ভাগাভাগি করে নিলেন দুই প্রোটিয়া স্পিনার। বাতি নিভে যাওয়ার আগে এক প্রান্ত আগলে খেলার চেষ্টা করেছিলেন অভিষিক্ত অঙ্কন। আর শেষদিকে সপাটে ব্যাট চালিয়ে রান তুলে সম্মান যা একটু ছিল, তা বাঁচিয়েছেন হাসান। নয়তো এবার শতরানের নিচেই গুটিয়ে যেতে হত। ৪ ছয়ে ৩০ বলে ৩৮* রানে থেকে হাসান ইনিংস শেষ করেন। আর আরও একবার ৫-উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের যম মহারাজ দক্ষিণ আফ্রিকাকে এনে দেন দুর্দান্ত এক জয়।