• লা লিগা
  • " />

     

    বার্নাব্যুতে এবার হেরেই গেল রিয়াল মাদ্রিদ

    বার্নাব্যুতে এবার হেরেই গেল রিয়াল মাদ্রিদ    

    নির্ধারিত সময় শেষে অতিরিক্ত পাঁচ মিনিট যোগ হয়েছিল। খেলা গড়াচ্ছিল গোলশূন্য ড্রয়ের দিকে। গোলের জন্যে হন্যে হয়ে খেলা রিয়াল মাদ্রিদকে হতাশ করে উলটো নিজেদের পায়েই বল রাখছিল বেটিস। বেশ কিছুক্ষণ নিজেদের ভেতর বল দেয়া নেয়া করে অধিনায়ক হোয়াকিনের পাস থেকে ডানপ্রান্তে বল পেলেন আন্তোনিও বারাগান। প্রায় ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা আন্তোনিও সানাব্রিয়া হেড দিয়ে বল ঢোকালেন জালে। ঘরের মাঠে গোল শূন্য ড্র টাই যেখানে হতাশাজনক মনে হচ্ছিল রিয়াল মাদ্রিদের জন্য, সেখানে ৯৪ মিনিটে গোল খেয়ে ম্যাচ হেরেই বসল তারা! আর সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতেই রিয়াল মাদ্রিদকে ১-০ গোলে হারিয়ে 'অমূল্য' তিন পয়েন্ট নিয়ে ফিরল বেটিস।

    ঘরের মাঠে আগের দুই ম্যাচে ড্র করেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তৃতীয় ম্যাচে হার। নতুন মৌসুমে লা লিগায় সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে জয়ের জন্য অপেক্ষাটা তাই আরও বাড়ল রিয়াল সমর্থকদের। আর ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসের পর প্রথমবারের মতো কোনো ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ করতে ব্যর্থ হল রিয়াল।




    অথচ ম্যাচের আগে চিত্রনাট্যটা তৈরি ছিল একেবারেই অন্যরকম। চার ম্যাচ পর রোনালদো ফিরেছেন, গোল করবেন, রিয়াল জিতবে- এই তো যেন অনুমিত হিসাব। দলে ফিরেছিলেন মার্সেলোও। পুরো শক্তির দল নিয়েই মাঠে নেমেছিল তারা। ইস্কো, রোনালদো আর গ্যারেথ বেলের আক্রমণ জুটিটাও বড় জয়ের স্বপ্নই দেখাচ্ছিল। কিন্তু বেটিস যে হাল ছাড়বে না, তার প্রমাণ মিলেছিল ম্যাচের মাত্র ৪ মিনিটেই। আন্তোনিও সানাব্রিয়ার শট দানি কারভাহাল লাইন থেকে ফিরিয়ে না দিলে শুরুতেই নিজেদের মাঠে পিছিয়ে পড়তে হত রিয়ালকে। পরে অবশ্য বেটিসও গোললাইন থেকে বল ক্লিয়ার করেছে। লা লিগার নতুন মৌসুমে নিজের প্রথম ম্যাচে মাত্র ১০ মিনিটেই গোলটা প্রায় পেয়েই গিয়েছিলেন রোনালদো। কিন্তু তার ব্যাকহিল চমৎকারভাবে লাইন থেকে ক্লিয়ার করেন হাভি গার্সিয়া।

    গত সপ্তাহে সোসিয়াদাদের বিপক্ষে তার ভুলেই গোল খেয়েছিল রিয়াল। ৩৪ মিনিটে কামারাসার শট অবিশ্বাস্যভাবে রুখে দিয়ে আজ যেন তারই ‘পাপমোচন’ করলেন কেইলর নাভাস। এর মিনিট দশেক পর প্রথমার্ধের শেষদিকে ইস্কোর বাঁ-পায়ের বাঁকানো শট দুর্দান্তভাবে রুখে দেন আন্তোনিও আদান। মাদ্রিদের সাবেক গোলরক্ষকের এমন সেভে হতবাক ইস্কো-রোনালদোর শূণ্যদৃষ্টিই যেন প্রথমার্ধের ছন্দহীন রিয়ালের প্রতিচ্ছবি।

     

    প্রথমার্ধের মত দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও গোলের এক সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলেন রোনালদো। বেটিস গোলের মাত্র গজ ছয়েক দূরে থাকলেও ৫১ মিনিটে বেলের নিচু ক্রস বারের উপর দিয়ে মারেন ‘সিআর৭’। এর কিছুক্ষণ পর নাভাসকে একা পেয়েও রোনালদোর মতোই বারের উপর দিয়ে শট নেন বেটিসের ফ্রান্সিস। ওদিকে গোলের দেখা না পাওয়ায় অধৈর্য মাদ্রিদ সমর্থকদের দুয়োধ্বনি জোরালো হচ্ছিল ক্রমশই। ৫৭ মিনিটে রোনালদোর ক্রস থেকে কারভাহালের শট বারে প্রতিহত হলে আবারও হতাশ হতে হয় রিয়ালকে। পরে মার্কো আসেন্সিও, লুকাস ভাজকেজ, বোর্হা মায়োরালদের নামিয়েও গোলের চেষ্টা করেছিলেন জিদান। কিন্তু ফিরতে হয়েছে খালি হাতেই।

    গোলের জন্য মরিয়া রিয়ালের জন্য দুঃসংবাদ হয়ে আসে মার্সেলোর ইঞ্জুরি। ৭৫ মিনিটে লুকাস ভাজকেজের ক্রসে বেলের চমৎকার ব্যাকফ্লিক অবিশ্বাস্যভাবে রুখে দেন আদান। ভাগ্যদেবীও যেন মুখ তুলে তাকিয়েছিলেন আদানের দিকে। দুর্দান্ত ঐ সেভের পর বল বারে প্রতিহত হলে সে যাত্রায়ও খালি হাতে ফিরতে হয় রিয়ালকে। কিন্তু তারপরও মনে হচ্ছিল ড্রয়ের দিকে এগুচ্ছে ম্যাচ। শেষদিকে সানাব্রিয়ার গোলে সেই হিসেব নিকেশ বদলে যায়। পরে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় রোনালদোদের।