• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    দশ বছরে ম্যানচেস্টারের 'ক্লাসিকো'

    দশ বছরে ম্যানচেস্টারের 'ক্লাসিকো'    

    ম্যানচেস্টার সিটির রবিনহো, বেনজানি যুগের কথা মনে আছে? যাত্রাটা শুরু হয়েছিল ১০ বছর আগে, আবু ধাবি গ্রুপের ম্যানচেস্টার সিটি কিনে নেওয়ার মাধ্যমে। ম্যানচেস্টার শহরের লাল অংশের দাপটে সিটিজেনদের নাম তখনও জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি ইউরোপেই। এরপর ধাপে ধাপে উন্নতি করেছে সিটি। রবিনহো, বেনজানিরা কখনই সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেননি, কিন্তু সিটিজেনদের অগ্রযাত্রায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি কেউ। গত কয়েক বছরে ম্যানচেস্টারের গল্পটাই বদলে দিয়েছে তারা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকেই ছাপিয়ে যাওয়ার পথ ধরেছে সিটি। দুইদলের ম্যাচ নতুন মাত্রা যোগ করেছে পেপ গার্দিওলা ও হোসে মরিনহোর রেষারেষি। সবমিলিয়ে ম্যানচেস্টার ডার্বি এখন ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার ক্লাসিকো।

    রবিবারের ম্যানচেস্টার ডার্বিতে 'ক্লাসিকোর' দশ বছর পূর্তি হবে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে। ইতিহাদে সিটিজেনদের সবশেষ হারটা ইউনাইটেডের কাছেই। এপ্রিলের ওই ম্যাচে ইউনাইটেডকে হারালেই চ্যাম্পিয়ন হত সিটি। প্রথমার্ধে ২ গোলে এগিয়ে থেকেও অবিশ্বাস্য ফিরে আসায় শেষে ৩-২ গোলে জিতে নগরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের লিগ জয়ের সাক্ষী হতে হয়নি ইউনাইটেডকে। তবে ইউনাইটেডকে রেকর্ড পয়েন্টে পিছে ফেলে সিটির লিগ জয় চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, ম্যানচেস্টারের রঙ কেবল লাল নয়। ম্যানচেস্টারকে চিনতে হবে 'ব্লু মুন' দিয়েও। 

    আরও একবার যখন ম্যানচেস্টার ডার্বিতে মুখোমুখি দুই দল, তখনও অবস্থাটা খুব বেশি বদলায়নি। সিটি আছে পয়েন্ট তালিকার সবার ওপরেই। লিগে এখনও কোনো ম্যাচ হারেনি তারা। নড়বড়ে শুরুর পর ইউনাইটেড অবশ্য পথ খুঁজে পেয়েছে, সাম্প্রতিক ফল তেমনটাই বলছে। কিন্তু ফর্ম সিটির সঙ্গে ৯ পয়েন্টের দূরত্ব কমিয়ে ৬ এ নামিয়ে আনার ইঙ্গিত দেয় না। বোর্নমাউথেরসঙ্গে শেষ লিগ ম্যাচেও সাদামাটা ছিল ইউনাইটেড, যদিও কপালটা ভালোই ছিল মরিনহোর দলের। জুভেন্টাসের সঙ্গে ভাগ্যের সাহায্য ভালোভাবেই পেয়েছে তারা- দুই ম্যাচেই তাই জয়ী ইউনাইটেড। সিটির বিপক্ষে তাই ইউনাইটেডের অনুপ্রেরণা একটাই, হারার আগে হেরে না গিয়েও ম্যাচে টিকে থাকতে পাড়ার মানসিকতা। 

    পেপ গার্দিওলার দল শক্ত অবস্থায় থাকলেও, ক্লাবের পরিস্থিতি ঘোলা হয়েছে গত কয়েকদিনে। ১০ বছর আগে যে যাত্রাটা শুরু হয়েছিল, ঘাপলা সেখানেই। জার্মান ডের স্পিগেলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ইউয়েফার এফএফপি নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে সিটির বিরুদ্ধে। বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগের পর সিটির সাফল্যের পেছনের গল্পে নিয়ে ওঠা প্রশ্নে খানিকটা বিব্রত গার্দিওলা নিজেও। মাঠে আপাতত সমস্যামুক্ত থাকলেও নির্ঝঞ্ঝাট নয় সিটির অবস্থাও। 

    মরিনহো অবশ্য বলছেন সিটি চলে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে, "ফুটবলে সম্ভাবনার শুরু হয় বিনিয়োগের মাধ্যমে। এরপর অবশ্যই আপনি মাঠে কেমন করছেন সেটার ওপর নির্ভর করে। আমার মনে হয় সেদিক দিয়ে সিটি ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। মাঠের বাইরে তারা কী করেছে সেটা আমি জানিনা।"

    ডার্বি ম্যাচকে কেবল পয়েন্ট কমানোর সুযোগ হিসেবে না দেখে আলাদা একটা ম্যাচ হিসেবে দেখছেন মরিনহো, "আমরা যদি ড্র করি তাহলে ব্যবধান ৯, আর হারলে ব্যবধান হবে ১২। আমার মনে হয় এই ম্যাচ নিয়ে আমরা এভাবে ভাবছি না। আমি কেবল একটা ম্যাচ খেলতে চাই। সেখানেই মনোযোগ রাখতে চাই।"

    প্রতিপক্ষ ইউনাইটেড হলে, সিটির চ্যালেঞ্জ জয়ের ধারা চালিয়ে নেওয়া। বিশেষ করে শেষ ডার্বিতে হারের হতাশাটাও সমর্থকদের ভুলিয়ে দেওয়া। এই ম্যাচটাকে যদিও মৌসুমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ভাবছেন না গার্দিওলা, "আমি জানি এটা ডার্বি। স্পেনে এসব নিয়ে আরও বেশি হৈ চৈ হয়, সেই তুলনায় এখানে কমই। কেবল নভেম্বর মাস। এখনই এটাকে সবচেয়ে বড় ম্যাচ বলতে চাই না। এখানকার মানুষের জন্য অবশ্য এটা একটা বিরাট ব্যাপার, তাদের প্রতি আমার সম্মান আছে।" 

    আর এফএফপির নিয়ে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে গার্দিওলা বলছেন তাকে ক্লাবের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে এমন কিছু ঘটেনি, এবং ক্লাবের প্রতি অগাধ বিশ্বাসও আছে গার্দিওলার। তবে নিয়মভঙ্গ করে থাকলে সিটির শাস্তিটা ন্যায্য বলেও মনে করেন তিনি। 

    দলের খবর

     

    • ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে দলে ফিরতে পারেন রোমেলু লুকাকু। ফিটনেসের কারণে মরিনহো খেলাচ্ছিলেন না তাকে। ফিটনেস পরীক্ষায় উত্তীর্ন হলেই কেবল লুকাকুর সুযোগ মিলবে বলে জানিয়েছেন ইউনাইটেড কোচ।

     

    • শেষ ম্যাচে ভিনসেন্ট কোম্পানি, বেঞ্জামিন মেন্ডিকে বিশ্রামে পাঠিয়েছিলেন গার্দিওলা। মেন্ডির একাদশে ফেরা নিশ্চিত। ডার্বিতে অতীত রেকর্ডের কারণে কোম্পানিও সুযোগ পেতে পারেন একাদশে।কেভিন ডি ব্রুইনের ইনজুরিতে রিয়াদ মাহরেজ নিয়মিত খেলছেন একাদশে, সেখানেও পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা কম। তবে চ্যাম্পিয়নস লিগে হ্যাটট্রিক করে গ্যাব্রিয়েল হেসুস নিজের দাবি জানিয়ে রেখেছেন। 

     

    •  তুরিনে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল অ্যালেক্সিস সানচেজকে। বড় কোনো ইনজুরিতে পড়েননি, তবে তাঁর জায়গায় মার্কাস র‍্যাশফোর্ডও একাদশে সুযোগ পেয়ে যেতে পারেন।  


    পরিসংখ্যান

    •  ইউনাইটেডের বিপক্ষে শেষ ৮ ম্যাচে মাত্র দুইটি জয় সিটির। 
    • মাঠে জিতেছিল ইউনাইটেড।  দুইবার সিটিজেনদের২০০৮ ও ২০১০ সবশেষ টানা 
    • ঘরের মাঠে শেষ ৭ ম্যাচে অন্তত দুইটি করে গোল করেছে সিটি।