'বাংলাদেশের সামনে একজন রোডস বা গিবস দরকার হতে পারে'
গত জুলাইয়ের পর থেকেই বাংলাদেশের দলের অনুশীলনে ব্যাপারটা মোটামুটি নিয়মিত। বাংলাদেশের দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে ক্যাচ অনুশীলন করে যাচ্ছেন একজন দক্ষিণ আফ্রিকান। দারুণ ক্যাচ নিলে চেঁচিয়ে উৎসাহ দিচ্ছেন। গত এক মাসে স্লিপ ফিল্ডারদের নিয়েও কাজ করেছেন অনেকটা সময়। গ্যারি কারস্টেন একাডেমির হেড কোচ রায়ান বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নিয়েছেন চার মাস আগে। আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে এই কয়েক মাসের অভিজ্ঞতাটা ভাগাভাগি করলেন প্রচারমাধ্যমের সাথে। বললেন, হয়তো জন্টি রোডস বা হার্শেল গিবসের মতো কোনো একজন আদর্শ দরকার বাংলাদেশের।
ক্যাচিং বাংলাদেশের জন্য অনেক দিন থেকেই একটা দুশ্চিন্তা। বিশেষ করে টেস্ট এলেই স্লিপ ক্যাচিং নিয়ে প্রতিবারই অবধারিতভাবে প্রশ্ন ওঠে তা নিয়ে। সিলেটে অবশ্য খুব বেশি সমস্যা হয়নি, কিন্তু মিরপুরে এসে ফিরে এসেছিল সেই পুরনো রোগ। দুই ইনিংস মিলে নয়টি ক্যাচ মিস করেছে বাংলাদেশ, এর বেশির ভাগই স্লিপে বা সিলি মিড-অফ, শর্ট লেগে। টেস্ট জয়ের পর মাহমুদউল্লাহকেও প্রশ্ন করা হয়েছিল এ নিয়ে। অধিনায়ক অবশ্য বলেছিলেন, এ নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তার কিছু নেই। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, স্লিপে বাংলাদেশের সমস্যাটা বাড়ছে বই কমছে না।
সেটার কারণ কিছুটা ব্যাখ্যা করলেন কুক, ‘ইতিহাস তো কিছুটা সাক্ষ্য দেয়ই। দক্ষিণ আফ্রিকায় খুব তরুণ বয়স থেকে আপনি চার স্লিপ-গালিতে ফিল্ড করেন। এখানে সেটা হয় না বেশির ভাগ সময়, আপনাকে দুই স্লিপে ব্যাট করতে হয়। ওখানে স্লিপটা যখন প্রাধান্য পায়, সেখানে শর্ট লেগ আর সিলি পয়েন্ট এখানে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ আফ্রিকায় আবার এই জায়গায় ফিল্ডাররা কিছুটা ভোগে। অবশ্যই, ভিন্ন ভিন্ন ধরনের উইকেট বানিয়ে আপনি স্লিপে আরও বেশি ফিল্ডার নিয়ে আসতে পারেন। তবে ভালো স্লিপ ফিল্ডার কিন্তু জোড়ায় জোড়ায় আসে, কখনো কখনো তিন বা চারে। আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে, যারা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্লিপে দাঁড়াবে তারা যেন ঠিকমতো দায়িত্বটা পালন করতে পারে।’
স্লিপে দাঁড়ানো নিয়ে বাংলাদেশের ফিল্ডারদের অনাগ্রহও ওপেন সিক্রেট নয়। এত বছর পরও সেজন্য সেভাবে কোনো স্পেশালিস্ট পায়নি বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে সিরিজে মিরাজ, মিঠুন, লিটন, আরিফুল মিলে কাজটা করলেও খুব আশ্বস্ত হওয়া যায়নি কাউকে দেখে। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে এই জায়গায় মানসিকতায় এই পরিবর্তনের কথা অবশ্য কুক মানলেন না, ‘আমি তো বাংলাদেশের স্লিপ ফিল্ডিং নিয়ে বেশ মুগ্ধ। ছেলেরা যেভাবে উন্নতি করছে সেটাও অসাধারণ। মানসিকতায় আমি আসলে খুব বেশি পরিবর্তন দেখি না। তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় মানদন্ডটা দেখুন, আমাদের জন্টি রোডস আর হার্শেল গিবসের মতো কেউ আছে। ওদের দেখে কেউ আরও বেশি ভালো করতে চাইবে।’ কুক তাই বাংলাদেশকেই সেই মানদন্ড ঠিক করার জন্য তাগিদ করলেন, ‘ওদের নিজেদের সামনের আদর্শটা নিজেদেরই ঠিক করতে হবে, বিশ্বের সেরা ফিল্ডিং দল হতে হবে। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই সেই সামর্থ্য তাদের আছে।’