• বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ
  • " />

     

    পরিণতবোধের প্রমাণ দিতে চান সাদমান

    পরিণতবোধের প্রমাণ দিতে চান সাদমান    

    ৪২টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন, তাঁর চেয়ে বেশি খেলে অনেকেরই অভিষেক হয়েছে টেস্ট দলে। বয়সও ২৩, জাতীয় দলে এর চেয়ে বেশি বয়সে খেলেছেন অনেকেই। তবে ফর্ম আর বয়স মিলে সাদমান ইসলামের টেস্ট দলে ঢোকার সময়টা বোধ হয় এর চেয়ে লাগসই হতে পারত না। ঘরোয়া ক্রিকেট, হাই পারফরম্যান্স, এ দল- জাতীয় দলে ঢোকার পথে সাদমানকে ভাঙতে হয়েছে সম্ভাব্য সব সিঁড়িই। এই ওপেনারও তাই মনে করেন, অনেক পরিণত হয়েই জাতীয় দলে এসেছেন। সেই পরিণতবোধের প্রমাণও দিতে চান মাঠে।

    জাতীয় দলে অবশ্য সাদমান ডাক পেয়ে গেছেন হুট করেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ৭৩ রানের ইনিংসটা খুলে দিয়েছে স্বপ্নদুয়ার। যদিও এই বছর জাতীয় লিগে সর্বোচ্চ রান করেছেন, একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে এক হাজার বল খেলেছেন। সাদমান নিজেও মনে করছেন, এখন তিনি বেশ পরিণত, ‘আমি তো প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলছি অনেক দিন থেকেই, প্রায় চার-পাঁচ বছর হয়ে গেছে। আমি যেমন পারফরম্যান্স করে আসছি হয়তো তা ঠিক আছে। একজন ব্যাটসম্যান যখন জাতীয় দলে খেলতে যায় তখন একটু পরিপক্ব হয়ে যাওয়াই ভাল। আমার মনে হয় আমি যেমন খেলেছি হয়ত আমি একটু পরিপক্ব হয়েছি। আর প্রস্তুতি ম্যাচটি একটু ভাল খেলেছি। তবে নির্বাচকদের কাছে মনে হয় কিছুটা ভাল মনে হয়েছে আর সেই কারণেই আমার সুযোগ এসেছে।’

    জাতীয় দলে ঢোকার আগে এ দলে খেলেছেন অনেকটা সময়। নির্বাচকদের দৃষ্টিসীমায় ছিলেন অনেক দিন ধরেই। কিছুটা হুট করে ডাক পেলেও সাদমানের দলে আসা সেই অর্থে চমক ছিল না। এ দল, হাইপারফরম্যান্সসহ সব ধাপ পেরিয়ে এসেছেন বলেই হয়তো সাদমান জানেন, জাতীয় দলের সুযোগ কতটা প্রার্থিত, ‘পরিণত হয়ে আসাটা আসলে অনেক জরুরী। যেমন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলে আসার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটটা হয়তো একটু চিন্তাভাবনা করেই খেলতে হয় সবার। আর আমার কাছে মনে হয় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট আর জাতীয় দলের পার্থক্য অনেক। কিন্তু যেহেতু আমি অনেকগুলো ম্যাচ খেলেছি তাই আমি জানি যে কিভাবে ইনিংসটা গুছিয়ে নিতে হবে। এই বিষয়টি যদি আমার জানা থাকে তাহলে আমার মনে হয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটু হলেও ভাল করার সুযোগ থাকে।’

    আজ অবশ্য অনুশীলন শেষে সেভাবে উচ্ছ্বাসটা বোঝা গেল না সাদমানের। তবে জাতীয় দলের হয়ে খেলার স্বপ্নপূরণের খুব কাছে আসার একটা তৃপ্তি ছিল তাঁর চোখে, ‘অপেক্ষা তো করতেই হয়। জাতীয় দলে খেলা তো অবারই স্বপ্ন থাকে। যেমন আমি বিশ্বকাপের পর এসে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলেছি। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ থেকে শুরু করে সবখানে খেলে আসছি। এটাই লক্ষ্য ছিল যে যেখানেই খেলবো সেখানেই পারফর্ম করতে থাকব। কোন একদিন সুযোগ আসবে। আমি যদি পারফর্ম করতে থাকি তাহলে অবশ্যই কোন একদিন সুযোগ আসবে।’

    সেজন্য কিছুটা অবদান হয়তো আছেন কোচ স্টিভ রোডসের। কাল সাদমানের ব্যাটিংটা এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে কাছ থেকে দেখেছেন রোডস, ভিডিও করেছেন সীমানাপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। আজও অনুশীলনে কোচের সঙ্গে অনেকটা সময় কথা বলতে দেখা গেছে তাঁকে। সাদমান সেই অভিজ্ঞতাও জানালেন, ‘আমার ডিফেন্সটা নিয়ে কথা বলেছিলাম আগে। কালকের ম্যাচটিতে আমার ডিফেন্সটা দেখেছেন তিনি। আর উনি যেভাবে আমাকে ডিফেন্সের ব্যাপারে টেকনিক্যালি বলেছেন সেভাবে যদি করতে পারি তাহলে আরও ভাল হয় এবং আরও বেশি টিকতে পারব ও স্পিনটা আরও ভাল খেলতে পারব।’ 

    সেই অর্থে স্রষ্টাপ্রদত্ত স্ট্রোকমেকার না হলেও সাদমানের মূল শক্তি ধৈর্য আর লম্বা সময় ব্যাট করা। সেজন্য পরিশ্রমটাও করতে হত বেশি। আর টেস্টে তো বাংলাদেশের এমন একজন ব্যাটসম্যানকেই দরকার!